বিএনএ, ঢাকা: করোনা টিকার ব্যয় ৪০-হাজার কোটি নয় এর অর্ধেক বলে দাবি করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সোমবার (২৫ এপ্রিল) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
গত ১০ মার্চ রাজধানীর জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটে বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘টিকা ক্রয় ও টিকা দান কার্যক্রম মিলে এগুলোর পেছনে সব মিলিয়ে সরকারের প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। টিকার পেছনে সরকারের ব্যয় ৪০ হাজার কোটি টাকা বলে গণমাধ্যমে যে তথ্য এসেছে, তিনি সেভাবে বলেননি বলে দাবি করেন সংবাদ সম্মেলনে।
করোনা টিকার পেছনে সরকার ২৩ হাজার কোটি টাকা বেশি ব্যয় দেখিয়েছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি যে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। গত ১২ এপ্রিল টিআইবি সংবাদ সম্মেলন করে টিকার খরচের চিত্র তুলে ধরে।
করোনাভাইরাস সংকট মোকাবেলায় সুশাসন: অন্তর্ভুক্তি ও স্বচ্ছতার চ্যালেঞ্জ’ শিরোনামে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি জানায়, দেশে টিকা ক্রয় ও বিতরণে ১১ হাজার থেকে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা হতে পারে। পাশাপাশি টিকার ব্যবস্থাপনা খাতে খরচ হতে পারে পাঁচ হাজার কোটি টাকা।
এই হিসাব করে টিআইবি সেদিন দাবি করে, সরকার যে ৪০ হাজার কোটি টাকা বলছে, প্রকৃত ব্যয় তার থেকে ২২ হাজার কোটি টাকা কম।
সংবাদ সম্মেলনে জাহিদ মালেক বলেন, ‘৪০ হাজার কোটি টাকার টিকা দেয়া হয়েছে বলেছি কিন্তু এটা সরকার খরচ করেছে এটা বলিনি। সরকার খরচ করেছে ২০ হাজার কোটি টাকা প্রায়। বাকিটা যে সাড়ে ৯ কোটি টিকা বিনা মূল্যে পেয়েছি সেটার দাম হিসাব করে বলেছি।
মন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তারা মোট সাড়ে নয় কোটি টিকা পেয়েছেন উপহার হিসেবে। সেদিন এই উপহারের টিকার দাম ধরে বক্তব্য রেখেছেন। তবে উপহারের টিকার দাম কেন উল্লেখ করতে হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা মন্ত্রীর কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
তিনি জানান, টিকা কিনতে ব্যয় হয়েছে মোট ১৭ হাজার কোটি টাকা। আর সেই টিকা পরিবহন, বিতরণ ও প্রয়োগে ব্যয় হয়েছে বাকি তিন হাজার কোটি টাকা।’
টিআইবির প্রতিবেদন বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘যারা তথ্য দিয়েছে তারা কোত্থেকে তথ্য নিয়েছে আমার জানা নেই। কারণ টিকা কতে দিয়ে কিনেছি, সেটি তো রেকর্ডে নেই। কাজেই কেউ যদি ভুল তথ্য দেয় সেটি আমরা মেনে নিতে পারব না।
‘আমরা অবশ্যই এটা প্রত্যাখ্যান করি। একটা সংস্থা তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারে। যেহেতু এটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, তাই সব সময় আইনি ব্যবস্থার পক্ষে না। তবে প্রয়োজন হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে পারে।’
মন্ত্রী জানান, এরই মধ্যে প্রায় ১৩ কোটি প্রথম ডোজ, ১১ কোটি ৬০ লাখ দ্বিতীয় ডোজ এবং প্রায় ১ কোটি বুস্টার জোড দিয়েছে সরকার। মোট জনগোষ্ঠীর ৭৫ শতাংশকে প্রথম ডোজ, ৬৮ শতাংশকে দ্বিতীয় আর বুস্টার ডোজ দেয়া হয়েছে ৭ শতাংশকে।
তিনি বলেন, টিআইবি রিপোর্ট দিয়েছে, বেশ কিছু তথ্য আছে যেগুলো সত্য নয়। টেলিফোনের মাধ্যমে তথ্য নেয়া হয়েছে। সার্ভে করা হয়েছে মাত্র ১৮০০ মানুষের মধ্যে। এত ছোট পরিসরে সার্ভে করায় সঠিক তথ্য উঠে আসেনি। এটার সাইজ এত ছোট যে আমরা এটাকে সঠিক বলে ধরে নিতে পারি না।’
টিআইবির প্রতিবেদনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ষাটোর্ধ্বরা টিকা পাননি এ তথ্য ঠিক নয়। দেশে কেউ বাকি নেই। যারা পাননি তারা নিজের ইচ্ছায় নেননি।
বিএনএ/ এ আর