বিএনএ, ঢাকা : ব্রাউজিং বা ডাউনলোড করার সময় ধীর গতি বেশ বিরক্তিকর। কিছু ব্যাপারে সচেতন হলে ইন্টারনেট সংযোগ গতি বাড়ানো যায়। ব্রাউজিং হবে আরও আনন্দদায়ক। তবে এক্ষেত্রে সবার আগে সঠিক আইপিএস নির্বাচন করতে হবে।
ইন্টারনেটের গতি বাড়ানোর কৌশল
যদি ইন্টারনেটের গতি আপনার প্রত্যাশার তুলনায় ধীর হয়ে থাকে তাহলে এর গতি বাড়ানোর জন্য আপনি কিছু কার্যকর উদ্যোগ নিতে পারেন।
১. আইএসপি পরিবর্তন
যদি আপনার আইএসপির সংযোগ দুর্বল হলে ইন্টারনেটের গতি বাড়াতে আপনার দিক থেকে আসলে তেমন কিছু করার নেই।
ইন্টারনেটের গতি যদি তাদের বিজ্ঞাপনে দেওয়া গতির চেয়ে কম হয় তাহলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। সংযোগ পরিবর্তনের আগে সমস্যাটি তারা ঠিক করতে পারবে কিনা সে সম্পর্কে আগে ভালো করে জেনে নিন।
এমনও হতে পারে, আপনার ডেটা ব্যবহারের একটি নির্দিষ্ট সীমা রয়েছে। আর আপনি সেটি অতিক্রম করে ফেলেছেন। সেক্ষেত্রে তারা আপনার গতি কমে যেতে পারে। এমনটা হলে আরও ডেটা কেনার মাধ্যমে তা ঠিক করে নিতে পারেন।
অন্যথায়, আইএসপি পরিবর্তন করতে পারেন। আপনার এলাকায় আরও সংযোগদাতা থাকতে পারে।
২. কোন কোন প্রোগ্রামগুলো চলছে সেগুলো পরীক্ষা করা
আপনার ইন্টারনেটের গতি যদি আপনার প্রত্যাশার তুলনায় ধীর হয়। তাহলে এমন হতে পারে যে, আপনার অজান্তেই কোনো প্রোগ্রাম হয়তো এটি ব্যবহার করছে।
আপনার কম্পিউটারে কোন কোন প্রোগ্রাম চলছে সেটি পরীক্ষা করুন। প্রয়োজন নেই এমন প্রোগ্রামগুলো বন্ধ করে দিন।
স্বয়ংক্রিয় আপডেট বন্ধ করে রাখুন। পরিবর্তে নিজেই ম্যানুয়ালি আপডেটগুলি প্রয়োজন অনুসারে ডাউনলোড করুন৷
অ্যান্টিভাইরাসের মাধ্যমে ম্যালওয়্যার দূর করুন।
আপনার অন্যান্য ডিভাইসগুলো কি করছে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। অন্যান্য কম্পিউটার, ফোন, এমনকি স্মার্ট ডিভাইসগুলো সবই আপনার ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করে ইন্টারনেট ধীর করতে পারে।
৩. রাউটার পরিবর্তন
রাউটারের মানের উপরও ইন্টারনেটের গতি নির্ভর করতে পারে। তাই আপনার বিদ্যমান রাউটারের মান কেমন তার উপর নির্ভর করে, সেটি প্রয়োজনে পরিবর্তনের মাধ্যমেও গতি বৃদ্ধি করতে পারেন।
একটি সস্তা মানের রাউটার ইন্টারনেটের গতি ধীর করে দিতে পারে। কারণ রাউটারটির মধ্য দিয়ে যে পরিমাণ ডেটা যাচ্ছে সেটা পরিচালনা ও প্রক্রিয়ার জন্য তাতে যথেষ্ট শক্তি নাও থাকতে পারে।
তবে আপনাকে যে দামী রাউটারই কিনতে হবে বিষয়টি এমন নয়। শুধু একটি দ্রুত প্রসেসরযুক্ত এবং কমপক্ষে ২৫৬ মেগাবাইট র্যামসহ একটি রাউটার হলেই যথেষ্ট।
৪. রাউটার অপ্টিমাইজেশন
আপনি যে ধরণের রাউটারই ব্যবহার করেন না কেনো রাউটার নিয়মিত রিবুট করা বেশ প্রয়োজনীয়। নিয়মিত রিবুট, ক্যাশ মেমোরি মুছে ফেললে গতি বাড়তে পারে। কিছু কিছু রাউটার স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রতিদিন একবার রিবুটের জন্য সেটআপ করে রাখা যায়।
সব রাউটারেই কিছু সফ্টওয়্যার এবং ফার্মওয়্যার ইনস্টল করা থাকে। এগুলো আপডেটেড রাখা উচিত।
৫. ইথারনেট ক্যাবল বদলান
বাসা–বাড়িতে এক রুম থেকে অন্য রুমে বিভিন্ন বাধা থাকার কারণে ওয়াইফাই সংকেত দুর্বল হয়ে যেতে পারে। আপনি যদি সবচেয়ে দ্রুত গতি চান তাহলে আপনাকে ওয়াইফাই এড়িয়ে চলতে হবে। সেক্ষেত্রে, একটি ইথারনেট ক্যাবলের মাধ্যমে রাউটারের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ করতে পারেন।
তবে কিছু কিছু ইথারনেট ক্যাবলও আপনার ইন্টারনেটের গতিকে ধীর করে দিতে পারে। বাজারে বিভিন্ন ধরনের ইথারনেট ক্যাবল আছে। যেগুলো কিছু সংখ্যা দ্বারা চিহ্নিত থাকে। সেখানে উচ্চ সংখ্যা উচ্চ গতিকে নির্দেশ করে। আপনার এমন একটি ক্যাবল ব্যবহার করা উচিত যেটি কমপক্ষে ক্যাট৫ই (Cat5e) রেটেড। এগুলি ১ জিবিপিএস পর্যন্ত গতি দিতে সক্ষম।
৬. ডিএনএস সেটিংস পরিবর্তন করুন
ডিএনএস–এর পূর্ণরূপ ডোমেইন নেম সিস্টেম। ডিএনএস সার্ভার আপনার ব্রাউজার থেকে একটি ডোমেন নাম নেয় এবং তারপর সেটিকে অনুরোধকৃত ওয়েবসাইটটির আইপি অ্যাড্রেসে রূপান্তর করে।
ডিএনএস সেটিংস পরিবর্তন ডাউনলোড গতির উপর কোনো প্রভাব ফেলে না। কিন্তু একটি ভিন্ন ডিএনএস সার্ভার ব্যবহার করলে ল্যাটেন্সি উন্নত হতে পারে। কারণ কিছু কিছু ডিএনএস সার্ভার, বিশেষ করে যেগুলো জনপ্রিয় আইএসপিগুলো দেয় সেগুলো ওভারলোড হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
বিএনএনিউজ/এইচ.এম।