বিএনএ ডেস্ক: বিশ্বের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য একটি ‘স্থিতিশীল খাদ্য ব্যবস্থা’ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একটি বৈশ্বিক জোট ও অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার পাশাপাশি দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতার মাধ্যমে খাদ্যের অপচয় কমানোর প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ‘জাতিসংঘ ফুড সিস্টেমস সামিট ২০২১’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে যুক্ত হয়ে পাঁচ দফা সুপারিশ তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পর্যাপ্ত খাবার পাওয়ার অধিকার একটি মৌলিক অধিকার, যা সকল নাগরিকের কল্যাণ ও স্বাস্থ্যের সঙ্গে যুক্ত। খাদ্য নিরাপত্তা জলবায়ু পরিবর্তনের আন্তঃসংযুক্ত। ২০৫০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক জনসংখ্যা ১০ বিলিয়ন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই অতিরিক্ত জনসংখ্যার জন্য আরও খাদ্য উৎপাদন করা অপরিহার্য। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে কৃষি উন্নয়নের জন্য গবেষণা, বিনিয়োগ ও উন্নত প্রযুক্তি বিনিময়ের ওপর জোর দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, টেকসই খাদ্য ব্যবস্থা অর্জনের জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বর্ধিত তহবিল প্রয়োজন। টেকসই নিরাপত্তা অর্জনে প্রযুক্তি শেয়ারিংসহ জলবায়ুজনিত চরম ইভেন্টগুলোর সঙ্গে অভিযোজনের জন্য প্রতিশ্রুত তহবিল ছাড়েরও পরামর্শ দেন তিনি।
শীর্ষ সম্মেলনে আয়োজনে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, মহামারি পরবর্তী পুরুদ্ধার এবং স্থিতিশীল খাদ্য ব্যবস্থার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে এই অনুষ্ঠানটি গুরুত্বপূর্ণ।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় প্রণীত কাংলাদেশের সংবিধানে খাদ্য ও পর্যাপ্ত পুষ্টিকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। এজেন্ডা ২০৩০ অর্জনে তার সরকার জাতীয় নীতিমালা ও কর্মপরিকল্পনায় খাদ্য ব্যবস্থার রূপান্তরকে একটি অন্তর্ভুক্ত হাতিয়ার হিসেবে সমন্বিত করা হয়েছে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, জাতীয় কৃষি নীতি-২০১৮, জাতীয় খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নীতি-২০২০ এবং এর কর্মপরিকল্পনা (২০২১-২০৩০) দেশের খাদ্য ব্যবস্থার রূপান্তরের প্রয়োজনীয়তাকে স্বীকৃতি দেয়। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে তার সরকারের নীতিগত অবস্থানের কারণেই বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির হার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারকে ছাড়িয়ে গেছে বলে জানান শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠেছে। দীর্ঘমেয়াদি খাদ্য নিরাপত্তার জন্য কাজ করা হচ্ছে। খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি সবার জন্য মানসম্মত খাদ্য নিশ্চিত করার প্রচেষ্টাও জোরদার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
খাদ্য নিরাপত্তার সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টির যোগসূত্রের বিষয়টি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘন ঘন চরম আবহাওয়াজনিত দুর্যোগ এই গতিবেগকে প্রভাবিত করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার বৈশ্বিক নেতা হিসেবে বাংলাদেশ জলবায়ু-সহিষ্ণু কৃষি ও খাদ্য ব্যবস্থা নিয়েও কাজ করছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
বিএনএনিউজ/আরকেসি