বিএনএ, ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধের দক্ষিণাঞ্চলের সুন্দরবন অঞ্চলের ইতিহাস বিকৃতির প্রতিবাদে মো. আলী বাহাদুর খানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে মুক্তিযোদ্ধারা।
সোমবার (২৪ জুলাই) বেলা সাড়ে এগারটায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের মওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডা. এম এ সালাম খান ও সুন্দরবন সাব সেক্টরের সিনিয়র কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল উদ্দীন মিয়া।
তারা লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, একাত্তরে সুন্দরবন সাব সেক্টর কমান্ডের সকল মুক্তিযোদ্ধার পক্ষ থেকে আপনাদেরকে জানাচ্ছি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার রক্তিম শুভেচ্ছা। মহান মুক্তিযুদ্ধে সুন্দরবন সাব সেক্টরের অবদান অপরিসীম। মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতগামী শরণার্থীদের সুন্দরবনের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহৃত হতো। সুন্দরবনে বসেই মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। হাজার হাজার নিরীহ মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে বসবাস করতো। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে যে, স্বাধীনতার পর থেকেই একটি চক্র মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় সুন্দরবন সাব সেক্টর অঞ্চলকে বিতর্কিত করার চেষ্টা চলছে। আজ আমরা যার বিরুদ্ধে কথা বলছি তার নাম মো. আলী বাহাদুর খান। সে একজন অ-মুক্তিযোদ্ধা হয়ে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের দক্ষিণাঞ্চলের সুন্দরবন অঞ্চলের ইতিহাস বিকৃতি করে চলেছেন। যার প্রতিবাদে আজ আমাদের এই সংবাদ সম্মেলন সে বিষয়ে কিছু তথ্য আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি।
মো. আলী বাহাদূর খান মিথ্যা তথ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ গেজেটে নাম অন্তর্ভুক্ত করে সুন্দরবন সাব-সেক্টর ও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে নানান বিতর্কিত কথা বলে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা এবং নতুন প্রজন্মের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে চলছেন। সে নিজেকে একজন পাকিস্তানি কমান্ডার হিসেবে দাবি করলেও এর স্বপক্ষে কোন প্রমাণ দিতে পারেনি। ভারতীয় তালিকায় কমান্ডার হিসেবে তার নাম নেই। পাকিস্তানের সেনা সদস্য হওয়ার পরেও সেনা হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে গেজেটভুক্ত নয়। ভারত থেকে অস্ত্র নিয়ে আসার মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়ে সবাইকে বিভ্রান্ত করে চলছে। সে দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে একজন নিরীহ মানুষ হিসেবে দাবি করছে। সাঈদী একজন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার স্বীকার বলে দাবী করেন মো. আলী বাহাদুর খান। সে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ করে চলেছেন।
প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাষ্যমতে সুন্দরবন অঞ্চলে সাব সেক্টরের কোন যুদ্ধে মো. আলী বাহাদুর খানের অংশগ্রহণ করার প্রমাণ নেই। যুদ্ধচলাকালীন সময়ে সে তার নিজ বাড়িতে অবস্থান করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী হিসেবে বিভিন্ন যুদ্ধাপরাধের সাথে জড়িত ছিল বলে জানা যায়। প্রকৃতপক্ষে সে মূলত রাজাকার ছিল। সম্প্রতি পিরোজপুরে কয়েকজন যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির রায় হয়েছে, তাদের সহযোগী ছিল মো. আলী বাহাদুর খান।
এছাড়াও মো. আলী বাহাদূর খান বিভিন্ন সময় প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করে আসছে। যা পরবর্তীতে তার পেশায় পরিণত হয়। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে মো. আলী বাহাদুর খানের দেয়া অভিযোগগুলো জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। এই সংবাদ সম্মেলনে আরও অনেক মুক্তিযোদ্ধা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনএনিউজ/বিএম/ হাসনাহেনা