বিএনএ, কক্সবাজার: কক্সবাজারের উখিয়ায় বসতঘরে ডাকাতির ঘটনায় নুরুল আমিন ওরফে বাবুল (৪০) নামে এক গৃহকর্তাকে গুলি করে হত্যা করেছে ডাকাতরা । একই সঙ্গে নিহতের এক ভাই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ সময় ডাকাতরা বাড়ি থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে গেছে বলে দাবি ভুক্তভোগীদের।
সোমবার (২৩ জুন) রাতে উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব নূরারডেইল পাহাড়ি এলাকায় এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
নিহত নুরুল আমিন ওরফে বাবুল একই এলাকার মৃত ইসহাক আহমদের ছেলে। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন নিহতের ছোট ভাই মোহাম্মদ হাসান (৩৫)।
নিহতের স্ত্রী আছিয়া খাতুন জানান, সন্ধ্যায় বাড়িতে স্বামী নুরুল আমিনসহ পরিবারের সদস্যরা একসঙ্গে মিলে নিজের বরজ থেকে তুলে আনা পান গোছাচ্ছিলেন (বিড়া)। কাজের প্রায় শেষপর্যায়ে স্বামীকে বাজার থেকে মাছ কিনে আনার কথা জানান। পরে ছোট ভাই মোহাম্মদ হাসানকে সঙ্গে নিয়ে তার স্বামী স্থানীয় স্টেশনে মাছ কিনতে বের হন। তারা মাছ কিনতে বের হবার ২০-২৫ মিনিট পরই মুখোশ পরিহিত ১০-১২ জনের একদল বাড়িতে হানা দেয়।
আছিয়া খাতুন বলেন, ‘ডাকাতদের হাতে দেশিয় তৈরি লম্বা বন্দুক, লম্বা কিরিচ ও ছোরা ছিল। বাড়িতে ঢুকেই আমাদের অস্ত্রের মুখে জিন্মি করে। পরে মারধরের একপর্যায়ে আমার ও মেয়ের স্বর্ণালংকার এবং কোরবানির সময় গরু বিক্রির নগদ ২ লাখ টাকা লুটে নেয় তারা।
ভুক্তভোগী এ গৃহকর্ত্রী বলেন, ‘চলে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে আমার স্বামী ও দেবর ডাকাতদলের সম্মুখে পড়েন। দেখা মাত্রই তাদের লক্ষ্য করে ডাকাতরা গুলি ছোড়ে। পরে কুপিয়ে তাদের ফেলে রেখে ডাকাতরা পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে স্বজনরা তাদের উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ সময় হাসপাতালে আমার স্বামীকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
তার মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টার অভিযোগ করে আছিয়া খাতুন বলেন, ডাকাতরা চলে যাওয়ার সময় আমার মেয়েকে তুলে বাড়ির পাশের ছড়া পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিল। পরে ডাকাতদলের সদস্যদের হাতে-পায়ে ধরে অনেক কাকুতি-মিনতি করার পর মেয়েকে ছেড়ে দিয়েছে।
ঘটনার ব্যাপারে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আরিফ হোছাইন জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তার আগেই আহত দুই ভাইকে স্বজনরা হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের চিকিৎসক একজনকে মৃত ঘোষণা করেছেন। অপরজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনাটি ডাকাতি নাকি পূর্ব শত্রুতার জেরে সংঘটিত হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি উল্লেখ করে ওসি বলেন, ‘বাড়ি ফেরার সময় পথেই দুই ভাই দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হয়েছেন। তাই ডাকাতি নাকি অন্য কোনো বিরোধের জেরে ঘটেছে রহস্য উদঘাটনে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে।
ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। এবং ঘটনার পর থেকে জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে বলেও জানান ওসি।
এইচএম ফরিদুল আলম শাহীন, ওজি/শাম্মী