বিএনএ, চট্টগ্রাম: ওয়ারিশ সনদ জালিয়াতির অভিযোগে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার আমুচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কাজল দে ও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সৈয়দা সাজিয়া এমদাদসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার ইকবালের আদালতে মামলা করেন আমুচিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হাসান মুরাদ।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, সিরাজুম মুনিরা ও একই ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মো. মুসলিম উদ্দীন।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, ওয়ারিশ সনদ জালিয়াতির অভিযোগে বোয়ালখালী উপজেলার আমুচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবু কাজল দে ও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সৈয়দা সাজিয়া এমদাদসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে।
আদালত শুনানি শেষে মামলাটি গ্রহণ করে বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, জায়গার ভুল নামজারি খতিয়ান তৈরি হওয়ার কারণ অনুসন্ধান করে বোয়ালখালী উপজেলার আমুচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বাসিন্দা হাসান মুরাদ জানতে পারে মৃত আবদুল ছালামের বৈধ ওয়ারিশ হিসাবে ওয়ারিশ সনদপত্র ইস্যু করা হয়।
এছাড়াও আসামি সিরাজুম মুনিরা মৃত আবদুল ছালামকে পিতা দেখিয়ে একটি জাতীয় পরচিয়পত্র তৈরি করেন। ২০২১ সালের ১ নভেম্বর আসামি সৈয়দা সাজিয়া এমদাদের পরষ্পর যোগসাজসে বাবু কাজল দে স্বাক্ষরিত ও মো. মুসলিম উদ্দীন শনাক্তকৃত ও সৈয়দা সাজিয়া এমদাদের প্রত্যয়ন করা ৯ নম্বর আমুচিয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি ভুয়া ও জালিয়াতি মাধ্যমে তৈরি করা একটি ওয়ারিশ সনদপত্র ইস্যু করা হয়েছে।
মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে আব্দুস ছালামের ভাই মো. নুর মোহাম্মদ ১৯৮৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি সম্পাদিত বিক্রি কবলা দলিলে আব্দুস ছালামকে নিঃসন্তান হিসাবে উল্লেখ করা হয়। প্রকৃতপক্ষে আসামি সিরাজুম মুনিরা মৃত আব্দুস ছালামের পালক মেয়ে।
এছাড়াও চেয়ারম্যান কাজলের বিরুদ্ধে ধোরলা-কানুনগোপাড়া আর্বান কো-অপারেটিভ সোসাইটি লি: এর সদস্যদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি বোয়ালখালী উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।
বিভিন্ন ওয়ারিশান সনদ জালিয়াতি, টিউবওয়েল বাণিজ্যে এবং এলাকায় নিরীহ মানুষদের মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় সমালোচিত হন ইউপি চেয়ারম্যান কাজল দে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ইউপি সদস্য জানান, আমুচিয়া ইউনিয়ন পরিষদে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেন চেয়ারম্যান কাজল দে। পরিষদের কার্যক্রমে তিনি মেম্বারদের সম্পৃক্ত করেন না।
৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য পংকজ চন্দকে ছুরিকাঘাত করার অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় চট্টগ্রাম জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওই ইউপি সদস্য বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। এতে কাজল দে-কে ২নং আসামী করা হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে বোয়ালখালী থানায় তদন্তনাধীন রয়েছে।
বিএনএনিউজ/ বাবর মুনাফ/এইচমুন্নী