26 C
আবহাওয়া
৩:৩৮ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ২৩, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » তাওহীদ, রেসালাত ও ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.)-র তাৎপর্য

তাওহীদ, রেসালাত ও ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.)-র তাৎপর্য

তাওহীদ, রেসালাত ও ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.)-র তাৎপর্য

।।সিরাজুল আরেফিন চৌধুরী।।

মুসলমানদের কালেমা শরীফ- لَا إِلَٰهَ إِلَّا ٱللَّٰهُ مُحَمَّدٌ رَّسُولُ ٱللَّٰهِ “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ” অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই, মুহাম্মদ (দ.) আল্লাহর রাসূল। এই কলেমার দুটি অংশ: প্রথম অংশ- لَا إِلَٰهَ إِلَّا ٱللَّٰهُ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ দ্বারা তাওহীদের ঘোষণা দেয়া হয়েছে, দ্বিতীয় অংশ- مُحَمَّدٌ رَّسُولُ ٱللَّٰهِ ‘মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ (দ.) দ্বারা রিসালাতের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। একজন মুসলমানকে এই কালেমা অন্তরে বিশ্বাস করতে হয়, মুখে স্বীকার করতে হয় এবং সেই অনুযায়ী কাজ করতে হয়। রিসালাতকে বাদ দিয়ে শুধু তাওহীদকে গ্রহণ করলে মুসলমান হওয়া যাবে না। তাওহীদ মানে একত্ববাদ, এক আল্লাহকে বিশ্বাস করা। আল্লাহ ছাড়া আর দ্বিতীয় কোন ইলাহ নেই, আল্লাহই একমাত্র প্রভু, সৃষ্টিকর্তা, মালিক এই বিশ্বাসের নাম তাওহীদ।

প্রশ্ন হল তাওহীদ আমরা কিভাবে পেয়েছি? আল্লাহ ছাড়া আর কোন প্রভু নাই, একমাত্র আল্লাহর এবাদত করতে হবে-এই শিক্ষা আমরা পেয়েছি আমাদের নবীর মাধ্যমে। নবীকে বিশ্বাস করাই হলো রেসালাত। তাওহীদ পেয়েছি নবীর মাধ্যমে অর্থাৎ রিসালাত এর মাধ্যমে। মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ অর্থাৎ মোহাম্মদ (দ.) আল্লাহর রাসূল। রাসূল মানে বার্তাবাহক। কার বার্তাবাহক? আল্লাহর বার্তাবাহক। আল্লাহর বার্তা যিনি মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন তিনিই রাসূল। এজন্য রাসুলকে অস্বীকার করা আল্লাহকে অস্বীকার করার নামান্তর।

পৃথিবীর অনেক ধর্মই এক সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করে। কিন্তু নবীর রেসালাতকে গ্রহণ না করায় এসব ইসলাম থেকে বিচ্ছিন্ন। যেমন পৃথিবীর ধ্বংসাত্মক জাতি গোষ্ঠী ইহুদীরাও এক স্রষ্টাতে বিশ্বাসী। ইহুদি ধর্ম মতে সৃষ্টিকর্তা এক ও একক। তাদের ঙষফ ঞবংঃধসবহঃ-এ সৃষ্টিকর্তার একত্ব বিষয়ে আলোচনা রয়েছে। কিন্তু তারা মোহাম্মদ (দ.)-কে আল্লাহর রাসূল হিসেবে মানে না। তাদের যত বিদ্বেষ আমাদের নবী কে নিয়ে। এ কারণে তারা অভিশপ্ত জাতি।
যেমন আল্লাহ বলেন-আপনি সব মানুষের চাইতে মুসলমানদের অধিক শত্রু হিসেবে পাবেন ইহুদী ও মুশরিকদেরকে। (সূরা মায়েদা, আয়াত ৮২)

এমনকি আবু জাহেলও খোদাকে অস্বীকার করে নাই, বদর যুদ্ধের পূর্বে কাবা ঘরের গিলাফ ধরে সে খোদার কাছে প্রার্থনাও করেছে। কিন্তু নবী মুহাম্মদ (দ.)-র সাথে শত্রতা করেছে, আল্লাহর রাসূল হিসেবে মেনে নেয় নাই বলে সে অভিশপ্ত কাফির। অর্থাৎ এখান থেকে আমরা যে শিক্ষা পাই তা হল- আল্লাহর একত্ব তথা তাওহীদ মেনে নিতে হবে রাসূল (দ.)-এর মাধ্যমে। রাসুল (দ.)-কে বা রিসালাতকে বাদ দিয়ে তাওহীদ আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। যেমন পবিত্র কোরআনে ১১২ নং সূরা, সূরা ইখলাসের মাধ্যমে আল্লাহ বলেন- “কুল হুয়াল্লা হু আহাদ” অর্থাৎ (হে রাসুল) আপনি বলে দিন, তিনি আল্লাহ অদ্বিতীয়।

এখানে একটি বিষয় গভীরভাবে লক্ষণীয়-মহান আল্লাহ সরাসরি বলেন নাই-হে মানবজাতি আমি তোমাদের একমাত্র খোদা বরং আল্লাহ তাঁর রাসূলের মাধ্যমেই মানবজাতিকে জানিয়ে দিয়েছেন, (হে রাসূল) আপনি বলে দিন, আমি তাদের একমাত্র, অদ্বিতীয় খোদা। এখান থেকে মানবজাতির শিক্ষা হলো আল্লাহর রাসূলকে মেনে নিতে হবে।

রাসূলের মাধ্যমেই তাওহীদকে গ্রহণ করতে হবে। কেউ যদি আল্লাহকে ভালবাসতে চায় আল্লাহ বলেন- قُلۡ إِن كُنتُمۡ تُحِبُّونَ ٱللَّهَ فَٱتَّبِعُونِي يُحۡبِبۡكُمُ ٱللَّهُ وَيَغۡفِرۡ لَكُمۡ ذُنُوبَكُمۡۚ وَٱللَّهُ غَفُورٞ رَّحِيمٞ অর্থাৎ “(হে রাসুল) আপনি বলে দিন, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবাসো তবে তোমরা আমাকে (নবীকে) অনুসরণ কর, তাহলে আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন, আর তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করবেন, আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাকারী দয়ালু” (সূরা আল ইমরান, আয়াত ৩১)।

দেখুন আল্লাহ কি সুন্দর করে বলে দিয়েছেন– আমার ভালোবাসা চাইলে তোমরা আমার রাসূলকে অনুসরণ করো অর্থাৎ তোমরা তোমাদের যাবতীয় বিশ্বাস, কাজকর্ম সবকিছুতেই আমার রাসুলকে অনুসরণ কর। আমার রাসূলকে অনুসরণ করলে আমার কাছে ভালোবাসা চাইতে হবে না, তখন আমি আল্লাহ নিজেই তোমাদের ভালোবাসবো এবং তোমরা আমাকে ক্ষমাশীল ও দয়ালু হিসেবে পাবে।

শুধুমাত্র এই আয়াতে নয় বরং সমগ্র কোরআনে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন রাসুল (দ.) এর আনুগত্য করার জন্য আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। মহান আল্লাহ স্বীয় হাবিবের প্রশংসা করে বলেন- لَّقَدۡ كَانَ لَكُمۡ فِي رَسُولِ ٱللَّهِ أُسۡوَةٌ حَسَنَةٞ -“নিশ্চয় তোমাদের জন্য রাসুলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ” (সূরা আহযাব, আয়াত ২১)। কোরআনুল করিমের বিভিন্ন জায়গায় আল্লাহ বলেন- “আতিউল্লাহা ওয়া আতিউর রাসুল” অর্থাৎ তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য কর। সুতরাং তাওহীদ ও রিসালাত অর্থাৎ আল্লাহ ও রাসূলুল্লাহ (দ.)-র উপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন-ই কালেমা তাওহীদ।

এখন আমরা দেখি এই তাওহীদ ও রিসালাতের সাথে ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.)-র কী সম্পর্ক? সহজ কথায় মিলাদ মানে জন্ম, মিলাদুন্নবি মানে নবীর জন্ম। আর ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) মানে নবীর আগমন বা জন্মে খুশি হওয়া। এই মিলাদুন্নবী সাথে আল্লাহর একত্ববাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। যেমন সূরা ইখলাসের ৩ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন- لَمۡ يَلِدۡ وَلَمۡ يُولَدۡ অর্থাৎ তিনি কাউকে জন্ম দেননি ও তাঁকেও কেউ জন্ম দেয়নি। নবীর মিলাদকে অস্বীকার করা যাবে না। কারণ মিলাদ নাই একমাত্র আল্লাহর। আল্লাহ একমাত্র একক সত্তা, যার কোন দ্বিতীয় নাই এবং যিনি কাউকে জন্ম দেননি, তাকেও কেউ জন্ম দেয়নি বরং তিনি হলেন সব কিছুর স্রষ্টা, প্রতিপালক, প্রভু। আল্লাহ এক, অদ্বিতীয়; আল্লাহর কোন শরিক নেই। আর আমাদের নবী হলেন আল্লাহর রাসূল।

যেমন আল্লাহ বলেন- مَّا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَآ أَحَدٍ مِّن رِّجَالِكُمْ وَلَٰكِن رَّسُولَ ٱللَّهِ وَخَاتَمَ ٱلنَّبِيِّۦنَ অর্থাৎ মুহাম্মদ তোমাদের কোন ব্যক্তির পিতা নন বরং তিনি আল্লাহর রাসূল ও শেষ নবী (সূরা আহযাব, আয়াত ৪০)।

আমরা নবীকে মানি আল্লাহর বান্দা ও রাসুল হিসেবে যেমনটি আল্লাহ আমাদেরকে পবিত্র কুরআনের মাধ্যমে নির্দেশ দিয়েছেন।

এক্ষেত্রে আমাদের আশঙ্কার যথেষ্ট কারণও আছে। খ্রিস্টানগন হযরত ঈসা (আ.)-কে ঈশ্বরের পুত্র মনে করে। তাদের ধর্মীয় গ্রন্থে আছে ঈশ্বরের তিনটির রূপ: ১. God the father পিতা ঈশ্বর ২. God the son পুত্র ঈশ্বর ৩. God the Holy Spirit পবিত্র আত্মা ঈশ্বর। কিন্তু মহান আল্লাহ সূরা ইখলাস (আয়াত- ৩) এর মাধ্যমে তাদের এ যুক্তি মিথ্যা প্রমাণ করে দিয়েছেন। তাহলে আমরা ফলাফল পেলাম মিলাদুন্নবী (দ.) মানা বরং তাওহীদের ভিত্তিকে মজবুত করে। নবীকে নবী হিসেবে মানা, আল্লাহর রাসূল হিসেবে মানার জন্য মিলাদুন্নবী (দ.) মেনে নেয়া অপরিহার্য।

তাওহীদ ও মিলাদুন্নবী (দ.) পরস্পর বিরোধী নয় বরং পরস্পর পরস্পরের সহায়ক। নবীর মিলাদ স্রষ্টা ও সৃষ্টির ধারণাকে স্পষ্ট করে দেয়। স্রষ্টার মিলাদ বা জন্ম নাই, নবীর মিলাদ আছে। মিলাদুন্নবী (দ.) তাওহীদের সমর্থক। আর নবীর আগমনকে স্বাগত জানিয়ে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা হলো ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.)।

এখন দেখি ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.)-র সাথে রিসালাতের কী সম্পর্ক? ঈদে মিলাদুন্নবী মানে নবীর আগমনকে স্বাগত জানানো। নবীর আগমনকে স্বাগত জানানো মানে রিসালাতকে স্বাগত জানানো। যে রিসালাতের মাধ্যমে আমরা তাওহীদ পেয়েছি সেই রিসালাতকে স্বাগত জানাতে আপত্তি কোথায়?

রিসালাতের তাৎপর্য কী? পবিত্র কোরআন ছাড়াও অন্যান্য সকল আসমানী কিতাব সমূহেও রিসালাত তথা নবী (দ.)-র আগমনের কথা আলোচিত হয়েছে। যেমন তাওরাত শরীফের বর্ণনা: হযরত ক্বাব-উন-আখবার (রা.) বর্ণনা করেন, আমি তাওরাত শরীফে হুজুর (দ.) এর বর্ণনা পড়েছি, হুজুর কঠিন প্রকৃতি ও কঠোর হৃদয়ের হবেন না, বাজারের মধ্যে বড় আওয়াজে কাউকে আহবান করবেন না, মন্দ কাজের প্রতিদান মন্দ কাজের মাধ্যমে দেবেন না বরং ক্ষমা করে দেবেন ….তিনি আমার (আল্লাহর) প্রিয় বান্দা মুহাম্মদ (দ.) হবেন।

পবিত্র কোরআনের বর্ণনা অনুযায়ী হযরত ঈসা (আ.) আমাদের প্রিয় নবীর আগমনের সুসংবাদ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন -“স্মরণ করুন যখন মরিয়ম পুত্র ঈসা বলেছিল: হে বনী ইসরাইল, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের নিকট আল্লাহর রাসূল, আমার পূর্ববর্তী তাওরাতের সত্যায়নকারী এবং একজন রাসুলের সুসংবাদ দাতা যিনি আমার পরে আসবেন, যার নাম আহমদ” (সূরা আস-সফ, আয়াত ৬)। এভাবে পূর্ববর্তী সমস্ত নবী ও রাসূলগণ সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী (খাতামুন নাবীয়্যীন) আগমনের সুসংবাদ দিয়ে আসছিলেন।

এ প্রসঙ্গে একটি কথা বলা প্রয়োজন। কেউ কেউ মনে করেন আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (দ.) দুনিয়াতে এসে ৪০ বছরে নবুয়ত প্রাপ্ত হন (নাউজুবিল্লাহ)। ৪০ বছরে নবুয়ত প্রাপ্তি নয় বরং নবুয়ত প্রকাশিত হয়েছে ৪০ বছরে। নবীজি দুনিয়াতে এসেছেন নবী হয়ে, যেমন- কুরআনে বর্ণিত হয়েছে- رَبَّنَا وَٱبۡعَثۡ فِيهِمۡ رَسُولٗا مِّنۡهُمۡ يَتۡلُواْ عَلَيۡهِمۡ ءَايَٰتِكَ وَيُعَلِّمُهُمُ ٱلۡكِتَٰبَ وَٱلۡحِكۡمَةَ وَيُزَكِّيهِمۡۖ إِنَّكَ أَنتَ ٱلۡعَزِيزُ ٱلۡحَكِيمُ “হে আমাদের রব তাদেরই মধ্য হতে একজন রাসূল প্রেরণ করুন, যিনি তাদেরকে আপনার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করে শুনাবেন এবং কিতাব ও জ্ঞানবিজ্ঞান শিক্ষা দেবেন এবং তাদেরকে পবিত্র করবেন; নিশ্চয়ই আপনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়” (সূরা বাকারা, আয়াত ১২৯)।

এখানে হযরত ইব্রাহীম (আ.) কর্তৃক একজন রাসূল প্রেরণের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করার বিষয়টি বর্ণিত হয়েছে। পবিত্র কাবা ঘর পুনঃনির্মাণ করে হযরত ইব্রাহিম (আ.) পুত্র হযরত ইসমাইল (আ.)-কে নিয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করেছিলেন যেন তাঁর বংশধর হতে একজন রাসূল প্রেরণ করা হয়। নবীগণের দোয়া অবশ্যই কবুল হয়। তাদের এ দোয়া আল্লাহ কবুল করেন এবং ইসমাইল (আ.) এর বংশে আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (দ.)-কে প্রেরণ করেন।

এজন্যই রাসূল (দ.) এরশাদ করেন- আমি হলাম আমার পিতা ইব্রাহিম (আ.)-র দোয়া, ঈসা (আ.)-র সুসংবাদ এবং আমার জননীর স্বপ্ন (মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদীস নং ৫৭৫৯)।

এমনটি নয় সাধারণ মানুষ হিসেবে দুনিয়াতে আসবেন পরে নবী হবেন। আমাদের নবী রাসুল হয়েই দুনিয়াতে আসার অসংখ্য অকাট্য দলিল পবিত্র কোরআনে রয়েছে। কোরআন মতে, হযরত ঈসা (আ.) নবী হয়েই দুনিয়াতে এসেছিলেন। ভূমিষ্ঠ হয়েই তিনি নিজেকে নবী বলে ঘোষণা করেছিলেন। কাজেই আমাদের নবী ৪০ বছর বয়সে নবী হওয়ার বিষয়টা শতভাগ ভুল ধারণা। পবিত্র কোরআন ও হাদিসের কোথাও এরকম কোন কথা নেই। যাইহোক সবাইকে মহান আল্লাহ হেদায়েত নসিব করুন। আমীন।

সম্মানিত পাঠক, পূর্ববর্তী সমস্ত নবী ও রাসুলগণ সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী ও রাসুল হযরত মুহাম্মদ (দ.) এর আগমনের যে সুসংবাদ দিয়েছেন আমাদের নবীর আগমনের মাধ্যমে তা বাস্তবায়িত হয়। মহান আল্লাহর কাছে এর শুকরিয়া আদায় করাই হলো ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উদযাপন। ওলামায়ে কেরামের মতে ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উদযাপন করা মুস্তাহাব এবং অতীব ফযীলতপূর্ণ কাজ । তবে পালন করা আর মেনে নেয়া ভিন্ন বিষয়। পালন করা মুস্তাহাব হলেও শানে রিসালাতকে মেনে নেওয়া ফরজ এবং এটি ঈমানের অংশ।

শানে রিসালাতকে অক্সিজেনের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। স্বাভাবিকভাবে অক্সিজেন আমরা ফ্রি পাই। মহান আল্লাহ দয়া করে আমাদের জন্য ফ্রি করে দিয়েছেন। কোন অর্থ লাগে না। কিন্তু অক্সিজেন ছাড়া কোন প্রাণ বাঁচতে পারে না। তদ্রুপ শানে রিসালাত ছাড়া ঈমান বাঁচতে পারে না। মুমিনের ঈমান নবীকে মহব্বতের ওপর পূর্ণমাত্রায় নির্ভরশীল।

সম্মানিত পাঠক, যুগ যুগ ধরে ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) বিষয়ে উলামায়ে কেরামগণ, ইসলামিক স্কলারগণ অসংখ্য গ্রন্থ রচনা করেছেন, অসংখ্য আলোচনা করেছেন। এসব আলোচনার মাধ্যমে এই বিষয়ে গভীর থেকে গভীরতর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করেছেন। আমার এই আলোচনা সময়ের প্রেক্ষিতে এই বিষয়ে ক্ষুদ্র প্রয়াস। তাওহীদ, রিসালাত এবং ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.)-র গভীর রহস্যের তুলনায় এই ক্ষুদ্র আলোচনা বিশাল সমুদ্রের এক ফোঁটা জলের সমানও নয়। মহান আল্লাহ কবুল করুন। আমিন।

সিরাজুল আরেফীন চৌধুরী
সিরাজুল আরেফীন চৌধুরী

লেখক : সহকারী অধ্যাপক (বিসিএস সাধারণ শিক্ষা)

Loading


শিরোনাম বিএনএ