বিএনএ ডেস্ক: ডলারে অতি মুনাফা করার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন ছয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)। বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের এ অব্যাহতি দিয়েছে। পাশাপাশি এসব ব্যাংকের সরিয়ে দেয়া ট্রেজারিপ্রধানদের আগের পদে ফেরার সুযোগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। জানান, ‘ব্যাংকের এমডিরা এই পরিস্থিতির জন্য ক্ষমা চেয়েছেন আর এমন ভুল হবে না বলে জানিয়েছেন। এ জন্য বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হয়েছে। ফলে এই ছয় ব্যাংকের ট্রেজারিপ্রধানদেরও কাজে ফিরতে সমস্যা নেই।
ব্যাংকগুলো হলো-বেসরকারি খাতের প্রাইম, ব্র্যাক, দি সিটি, ডাচ্-বাংলা, সাউথইস্ট ব্যাংক ও বিদেশি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের পরিচালক স্বাক্ষরিত চিঠিতে ব্যাংক ৬টিকে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
ব্যাংক ছয়টি গত মে-জুন মাসে ডলার কেনাবেচায় যে মুনাফা করেছিল, তার অর্ধেক আয় খাতে নিতে বলা হয়েছে। বাকি অর্ধেক অর্থ সামাজিক দায়বদ্ধতা খাতে (সিএসআর) বরাদ্দ রাখতে বলা হয়েছে। আগে এই মুনাফার পুরোটাই আলাদা রাখতে বলেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
মার্কিন ডলার কেনাবেচায় অতিরিক্ত মুনাফা করে বাজার অস্থিতিশীল করার অভিযোগে গত ১৭ আগস্ট দেশি-বিদেশি এই ছয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) কাছ থেকে ব্যাখ্যা তলব করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্পদ দায় ব্যবস্থাপনা নীতিমালা অনুযায়ী, ট্রেজারি বিভাগের রিপোর্টিং প্রধান সরাসরি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তাই কেন ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৬ ধারা অনুযায়ী তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তা জানতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৬ ধারা অনুযায়ী, ব্যাংকের পরিচালক ও এমডিদের অপসারণ করতে পারে বাংলাদেশ ব্যাংক।
গত ৮ আগস্ট দেশি-বিদেশি এই ছয় ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। ট্রেজারি বিভাগ ব্যাংকের টাকা ও ডলারের জোগান-চাহিদার বিষয়টি নিশ্চিত করে থাকে। ট্রেজারি বিভাগের প্রধান পদে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তাও ছিলেন।
এসব সিদ্ধান্ত ও ডলার বাজারে অস্থিতিশীলতার কারণে বিদেশি ব্যাংকগুলো বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া শুরু করে। ব্যাংকগুলোকে নতুন করে ঋণসুবিধা দেয়া বন্ধ করে দেয়। আবার কোনো কোনো ব্যাংক যে ঋণসীমা (ক্রেডিট লাইন) দিয়ে রেখেছিল, তা-ও ব্যবহার করতে দিচ্ছে না বিদেশি ব্যাংকগুলো। ফলে বাংলাদেশের কিছু ব্যাংক আমদানির ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়েছে-আমদানিতে খরচও বেড়ে গেছে।
এমন পরিস্থিতিতে ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়ার পাশাপাশি ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে গৃহীত পদক্ষেপগুলো প্রত্যাহার করতে শুরু করেছে।
বিএনএ/এ আর