বিএনএ বরিশাল: বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমানের সরকারি বাসভবনে হামলার ঘটনায় অবশেষে দু;পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। মেয়র, জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এ সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।রোববার(২ আগস্ট) রাত ৯টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের বাসভবনে এ বৈঠক চলে। বৈঠক শেষে রাতের খাবার খেয়ে সকলে বের হন।
সভায় উপস্থিত জেলা আওয়ামী লীগের মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর জানান, বরিশালের সাম্প্রতিক বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা হয়। পুরো বিষয়টি ইতিবাচক ছিল। বৈঠকে সকল পক্ষের মামলা প্রত্যাহার করার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে।তবে বৃহত্তর স্বার্থে বৈঠকের খুটিনাটি জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস বলেন, ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। সেটির অবসান হয়েছে। আর যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে এ বিষয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে।
সে সময় উপস্থিত ছিলেন সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ, বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল ইসলাম বাদল, জেলা প্রশাসক জসিম,ডিআইজি আক্তারুজ্জামান, পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান, উদ্দিন হায়দার, পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন, ইউএনও মুনিবুর রহমান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সরকারি কৌশলী একেএম জাহাঙ্গীরসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, গত বুধবার (১৮ আগস্ট) রাতে বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবৈধ বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন উচ্ছেদ করতে অভিযান চালান বরিশাল সিটি করপোরেশনের কর্মীরা। কিন্তু তাদের অভিযান বন্ধ করে সকালে অভিযান চালাতে বলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। সেটি না মেনে ইউএনওর সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন সিটি কপোরেশন কর্মী এবং আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে তারা ইউএনও’র বাসভবনে হামলা চালানো হয়। সে সময় ইউএনও’র নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যরা গুলি চালালে বেশ কয়েকজন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গেলে পুলিশের সঙ্গেও হামলাকারীদের সংঘর্ষ হয়। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হন।
এই ঘটনায় পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুরে বাসভবনে হামলার অভিযোগে সিটি করপোরেশনের কর্মচারী, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আসামি করে ইউএনও ও পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করে। সেই দুটি মামলাতেই বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে প্রধান আসামি করা হয়। একই ঘটনায় সিটি করপোরেশন ও আওয়ামী লীগ নেতারাও থানায় মামলা করতে যান। থানায় তাদের মামলা নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করা হয়।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমান ও কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি নুরুল ইসলামসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে আদালতে দুটি মামলার আবেদন করে সিটি করপোরেশন। আদালত অভিযোগ দুটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে আগামি ২৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়। মামলা দুটির মধ্যে একটির আবেদন করেছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা বাবুল হালদার এবং অন্যটি সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম খোকন।
বিএনএনিউজ/আরকেসি