বিএনএ,বশেমুরবিপ্রবি: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার স্ট্যাটাস দেওয়ায় গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ফয়সাল আহম্মেদ মীনা (২৫) নামের এক শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (২৩ জুন) গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নিজড়া ইউনিয়নের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
এরআগে গোপালগঞ্জের সদর উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি মো. মাসুদ রানা বাদী হয়ে ফয়সাল আহম্মেদ মীনার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর ৪২।
বিষয়টি নিশ্চিত করে গোপাগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের হওয়ার পরে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ফয়সাল আহম্মেদ মীনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনার সমস্ত আলামত জব্দ করেছি। আজ দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নিজড়া ইউনিয়নের নিজড়া জাঙ্গাল বাজার এলাকার আলমগীর মিনার ছেলে ফয়সাল আহম্মেদ মীনা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। ফেসবুকে ফয়সাল আহম্মেদ মীনা নিজেকে জেএমবি, আনসার আল ইসলাম, হিজবুত তাওহীদ ও হরকাতুল জিহাদের একজন সদস্য দাবি করেছেন। তার পরিবার বিএনপি-জামায়াত করে বলেও ফেসবুকে তিনি স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, ফেসবুকে ফয়সাল আহম্মেদ মীনা তার ব্যক্তিগত আইডি থেকে লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে এতদিন দেখা করতে চেয়েছি। গণভবনে গিয়ে শেখ হাসিনাকে গুলি করে মেরে ফেলবো। শেখ হাসিনার সাথে দেখা করতে না পারলে শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে পারবো না। আমার কোন ক্ষমতাও নাই। এজন্য বারবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করতে চেয়েছিলাম, যেকোনো একজনের কাছ থেকে বন্দুক কেড়ে নিয়ে শেখ হাসিনাকে গুলি করে মেরে ফেলবো। কিন্তু বারবার চেষ্টা করেও পারলাম না। যেদিন দেখা করার সুযোগ পাব, সেদিন মেরে ফেলবো ইনশাল্লাহ।
মামলার বাদী মো. মাসুদ রানা বলেন, আমার মামা গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মিটু গোপালগঞ্জ রেডক্রিসেন্ট ইউনিটের সদস্য পদে নির্বাচন করছেন। তার পক্ষে ভোট চেয়ে আমি আমার ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্ট দেই। সেখানে ফয়সাল আহম্মেদ মীনা নামে এক শিক্ষার্থী আওয়ামী লীগ সম্পর্কে কুরুচিপূর্ন মন্তব্য করে স্ট্যাটাস দেয়। তার ফেসবুক আইডি চেক করতে গিয়ে দেখি গত ১৬ জুন একটি স্ট্যাটাসে সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গুলি করে হত্যার ইচ্ছা পোষণ করে। সেগুলোর স্ক্রিনশট নিয়ে গোপালগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করি। তারপরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
এ বিষয়ে ফয়সাল আহম্মেদ মীনার বাবা আলমগীর মীনা বলেন, আমার ছেলে গত ২০১৪ সাল থেকে মানসিক রোগে ভুগছে। তাকে আমি ঢাকার মানসিক রোগী চিকিৎসক মহিত কামাল, জিল্লুল কামাল, খুলনার ফরিদুজ্জামান ও গোপালগঞ্জের মাহাবুর রহমানকে দিয়ে চিকিৎসা করিয়েছি। ওষুধ খেলে সে ভাল থাকে। ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দিলেই উল্টো-পাল্টা করে। গত ১ মাস ধরে সে ওষুধ খাচ্ছে না। তাই ফেসবুকে এ ধরণের কথা বলে আমাদের বিপদে ফেলেছে। এখন ছেলেকে নিয়ে মহা দুশ্চিন্তায় পড়েছি। অজানা আশংকায় আমাদের দিন কাটছে।
বিএনএনিউজ/ফাহীসুল হক,মনির