বিএনএ,চট্টগ্রাম: প্রেমের ফাঁদে ফেলে বাসায় এনে দুই যুবকের নগ্ন ছবি তুলে টাকা আদায়। এসময় নিজেদের সাংবাদিক ও পুলিশ পরিচয় দেয়। এই প্রতারক চক্রটি নানা অপকর্মের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে সাংবাদিকতার মত মহান পেশাকে। তবে কথিত সাংবাদিক অপকর্ম করতে গিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে। আর সহযোগী হিসেবে গ্রেপ্তার হয়েছে দুই নারী।
বুধবার (২১ এপ্রিল) রাতে পাহাড়তলীর একতা আবাসিক এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) বিষয়টি জানিয়েছেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (পশ্চিম) পলাশ কান্তি নাথ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন লক্ষ্মী রানী দাশ (৩৪), নার্গিস আক্তার (২১) ও মাসুদ রানা (৩৫)। এদের মধ্যে মাসুদ রানা নিজেকে সিটিজি ক্রাইম টিভি নামের একটি অনলাইন ইউটিউব চ্যানেলের এবং ভোরের জানালা নামের একটি পত্রিকার সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেন।
পুলিশ জানায়, মাসুদ সাংবাদিক পরিচয়ে একটি বাসা ভাড়া নেন। সেখানে নারীদের ব্যবহার করে বিভিন্ন বয়সী লোকজনকে এনে জিম্মি করে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেন। মাসুদ ও লক্ষ্মী মিলে বিভিন্ন ব্যক্তিকে টার্গেট করেন। তাদের ফোন করেন নার্গিস। দুই যুবক বাসায় প্রবেশের পর তাদের গায়ের কাপড় খুলে ফেলে মাসুদ ও লক্ষ্মী। তারা এ সময় নিজেদের পুলিশ পরিচয় দেয়। এরপর নার্গিসের সাথে আপত্তিকর ছবি তোলার পর ভিডিও করা শুরু করে। ওই দুই যুবক এক পর্যায়ে ছুটে বেরিয়ে যায়।
তারা দৌড়ে বাসা থেকে বের হয়ে অন্যান্য বাসায় কলিং বেল বাজায়। বাড়িওয়ালা দরজা খুলে গায়ে কাপড়হীন ওই দুজনকে দেখতে পান। পরে তিনি ঘটনা শুনে টেলিফোনে পুলিশকে জানান। এরপর পুলিশ ওই বাসায় অভিযান চালায়।
পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান ইমাম জানান, দুই যুবকের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাবার পর বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর একতা আবাসিক ভবনের চতুর্থ তলায় মাসুদের বাসা থেকে খেলনার পিস্তল, দুটি ছুরি ও ২৪ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া মাসুদের কাছ থেকে সিটিজি ক্রাইম টিভি ও ভোরের জানালা পত্রিকার পরিচয় পত্রও জব্দ করা হয়েছে।
অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (পশ্চিম) পলাশ কান্তি নাথ বলেন, আসামি মাসুদ রানাসহ অন্যরা দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের পুলিশ, সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে মানুষকে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করে আসছে। নারীদের দিয়ে ফাঁদ পেতে যুবকদের বাসায় ডেকে এনে মুক্তিপণ আদায় করে আসছে। মাসুদ রানার বিরুদ্ধে নগরীর পাহাড়তলী ও হালিশহর থানায় মোট ছয়টি মামলা রয়েছে।
বিএনএনিউজ/মনির