বিএনএ, ঢাকা : ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সেই গাইনি ওয়ার্ডে আবারো প্রতারক চক্রের কবলে পড়ে সর্বস্ব খুইয়েছেন রোগীর তিন স্বজন। তাদেরকে জুস খাইয়ে অচেতন করে ১০ হাজার টাকা ও ২ টি মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে প্রতারকরা । শনিবার রাতে এ ঘটনাটি ঘটে। প্রতারকদের শিকার হয়েছে যারা তারা হচ্ছে রোগীর নানি জহুরা খাতুন (৬০) মামা আমির হোসেন (৩৫) ও বোন সুমনা আক্তার (২০)। তাদেরকে ঢামেকে জরুরী বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা পর মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এর আগেও ওই ওয়ার্ডে একই রকম ঘটনা ঘটেছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রতারক চক্র ও মাদক সেবীদের হাসপাতাল থেকে নির্মুল করার জন্য দফায় দফায় পদক্ষেপ নিলেও কোন সুফল পাওয়া যাচ্ছেনা।
ভিকটিমদের আত্মীয় হাসিবুল হোসেন শুভ জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের বাসিন্দা সুমি আক্তার (২২) গাইনিজনিত সমস্যার কারণে গত ২০ আগস্ট ঢামেক হাসপাতালের ২১২ নম্বর গাইনি ওয়ার্ডের ৫ নম্বর বেডে ভর্তি হন। তার সঙ্গে থাকা তিন স্বজনকে প্রতারক চক্রের সদস্যরা জুস খাইয়ে অচেতন করে মোবাইল ফোন ও টাকা হাতিয়ে নিয়ে যায়।
আজ রোববার সকালে এ বিষয়ে রোগীর আত্মীয় হাসিবুল হোসেন শুভ জানান, সুমির দেখভালের জন্য নানি জহুরা খাতুন, মামা আমির হোসেন ও বোন সুমনা আক্তার (২০) গত শনিবার রাতে ২১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাইরে করিডোরে অবস্থান করছিলেন। এক নারী এসে ওই তিনজনের সঙ্গে গল্প শুরু করেন। এক পর্যায়ে রাতে তাদের তিনজনকে কৌশলে জুস খাইয়ে দেন।এতে একে একে তারা অচেতন হয়ে পড়েন। রাতে মনে হয়েছিল তারা ঘুমিয়ে আছেন। সকালের দিকে দেখা যায় তাদের কোনো সাড়া-শব্দ পাওয়া যাচ্ছেনা। পরে তিন জনকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া পর মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ওই তিনজনের দু’টি মোবাইল, তাদের কাছে থাকা ১০ হাজার টাকা খোয়া গেছে।
এ বিষয়ে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার ওয়ার্ড মাস্টার কাজি আবু সাঈদ জানান, রোগীর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় তিনজনকে জুস খাইয়ে অচেতন করা হয়েছে। তবে তারা ২১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাইরে ছিল বলে আমরা জানতে পেরেছি। তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে কত ধরনের লোকজন আসা যাওয়া করে কে কি ধরনের লোক বোঝার সম্ভব হয় না।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, প্রতারক চক্রের সদস্যরা ওই ওয়ার্ডের ভর্তি এক রোগীর তিন স্বজনকে অচেতন করে টাকা ও মোবাইল নিয়ে গেছে বলে ওয়ার্ড মাস্টার আমাকে জানান।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে এ ধরনের অভিযোগ প্রায় আমাদের কাছে আসে। ঘটনার পর পদক্ষেপ নিলে হয়তো কিছুদিন নিরব থাকে। হঠাৎ করে আবার কাজ শুরু করে এ চক্রটা।
এ বিষয়ে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, রোগীর স্বজনদের সঙ্গে ওই নারীর আগে থেকেই পরিচয় ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এবং সিসিটিভি মাধ্যমে প্রতারক চক্রের সদস্যকে চিহিৃত করতে ওই ওয়ার্ডের সকল কর্মচারীদের আমার অফিস কক্ষে এনে দেখানো হয়েছে কিন্তু তাকে কেউ চিনতে পারেনি। আমরা মাদকসেবি ও প্রতারক চক্রেরে বিরুদ্ধে জোরালো ব্যবস্হা নেব।
বিএনএ/ আজিজুল, ওজি