বিএনএ, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থানার সরাই পাড়া এলাকায় ১২ বছর আগে দ্বিতীয় স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যার মামলায় স্বামী ও তার প্রথম স্ত্রীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে দুজনকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ জুন) ষষ্ঠ অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ সিরাজাম মুনীরার আদালত এই রায় দেন। এসময় দণ্ডপ্রাপ্ত আবদুল বারেক ও লাকী বেগম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে দুজনকে সাজা পরোয়ানামূলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— আব্দুল বারেক ও লাকী বেগম। এর মধ্যে আব্দুল বারেক লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ হায়দার আলী বেপারী বাড়ির মো. বদু মিয়ার ছেলে এবং লাকী বেগম আব্দুল বারেকের স্ত্রী।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলী দীর্ঘতম বড়ুয়া দীঘু বলেন, ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে ।
এর আগে ২০০৯ সালে রহিমা বেগম ওরফে সুমিকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করেন আব্দুল বারেক। বিয়ের পর থেকেই আসামিরা সুমিকে বিভিন্ন অজুহাতে মারধর করতো। দেড় বছর পর ওই দম্পতির ঘরে ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। সন্তান জন্মের কিছুদিন পর থেকেই বারেকের প্রথম স্ত্রী লাকী বেগম সুমিকে গরম পানি দিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন। এরপর সুমিকে তার বোনের বাসায় রেখে আসেন স্বামী বারেক। কিছুদিন পর সুমিকে কোনো ধরনের অত্যাচার না করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফের বাড়িতে নিয়ে আসেন বারেক।
২০১১ সালের ২৫ মার্চ রাতে আসামিরা সুমিকে তার ঘরে আটকে রাখেন। এর পরদিন সুমি ও তার ছেলেকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে চান আসামিরা। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে আব্দুল বারেক ও তার স্ত্রী প্রথম লাকী বেগমকে গ্রেপ্তার করে।
এ ঘটনায় নিহত সুমির বোন বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে পাহাড়তলী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১২ সালে তদন্ত শেষে স্বামী ও নিহতের সতীনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ।
বিএনএ/এমএফ