বিএনএ,চট্টগ্রাম: হেফাজতে ইসলামের আমির ও হাটহাজারী মাদরাসার শায়খুল হাদীস আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, দেশের নিম্নআয়ের গরিব মানুষকে আর হয়রানি ও কষ্ট না দিয়ে আমার কাছে তালিকা পাঠান। আমি অভিযুক্তদের সবাইকে নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে জেলে চলে যাবো। একজন পুলিশও পাঠাতে হবে না। এর বিনিময়ে আপনারা লকডাউন তুলে নিন।
বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে তিনি একথা বলেন। বিবৃতিতে জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, লকডাউনের অজুহাতে জোর-জবরদস্তি করে যেসব মাদ্রাসা ও হেফজখানা বন্ধ করে কোরআন-হাদিসের চর্চা বন্ধ করে দিয়েছেন, ওগুলো খুলে দিন। যাতে কোরআন-হাদিসের ব্যাপক চর্চার বরকতে দেশের ওপর আল্লাহর রহমত নাজিল হয়।
তিনি বলেন, সারা বছরের মধ্যে পবিত্র মাহে রমজান মুসলমানদের জন্য আমল করার সেরা সময়। আল্লাহর কাছে আনুগত্য ও গোলামি প্রকাশ করা এবং নেক বৃদ্ধির জন্য গুনাহগার বান্দার আপন সত্তা ও অহং বিলীন করার মাস এই মাহে রমজান।
বাবুনগরী বলেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী যখন করোনা পরিস্থিতির কারণে নিজ গৃহে বন্দী জীবন-যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন, তখন জুলুম চলছে মসজিদ, মাদ্রাসা, হিফজখানা ও এসব প্রতিষ্ঠানের হেফাজতকারীদের ওপর। রমজানের এই পবিত্র মাসে ফিতনা-ফ্যাসাদ এবং প্রতিহিংসা পরিহার করার শিক্ষা যখন ইসলাম আমাদের দেয়, তখন সরকার ইসলাম প্রচারকদের বন্দী করে রিমান্ডে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করছে। আমার এ সব সহকর্মী হজরতগণ হাজতের নোংরা পরিবেশে স্বাচ্ছন্দ্যে গোসল করতে, অজু করতে, নামাজ আদায় করতে, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করতে, সাহরি খেতে ও ইফতার করতে পারছেন না। এসব জুলুম, বর্বরতা, মানবতার অপমান দেখে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নাখোশ হবেন।
বিবৃতিতে তিনি মন্তব্য করে বলেন, গণপ্রতিরোধ ও প্রতিবাদ ছাড়া সহজে আলেম-ওলামাদের গ্রেপ্তারের জন্য লকডাউন আরো এক সাপ্তাহ বাড়িয়ে সরকার সমগ্র দেশবাসীকে কষ্ট দিচ্ছে।
হেফাজত আমির বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, মাহে রমজান হলো সাহায্য-সহানুভূতির মাস। বাকি এগারো মাসের তুলনায় রমজান মাসে সব ধরনের ইবাদত-বন্দেগির ফজিলত অনেক গুণ বেশি। অথচ এই মাসেই বাংলাদেশে জুলুম, গ্রেপ্তার, নির্যাতন চালানো হচ্ছে শত শত হেফাজত নেতাকর্মী, আলেম ওলামা, ছাত্র ও তৌহিদী জনতার ওপর।
তিনি বলেন, এ রমজান মাসে রিমান্ডে নেয়া আলেম-ওলামাদের বিধর্মী এবং অবিশ্বাসীদের দিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করাবেন না। তারা এই সব হজরতদের সঙ্গে খুবই নিষ্ঠুর ও অপমানজনক আচরণ করছে।
বাবুনগরী বলেন, হেফাজতে ইসলামীর আন্দোলন সব সময় শান্তিপূর্ণ ছিল এবং ভবিষ্যতেও তাই থাকবে। বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করা দেশবাসীর সাংবিধানিক অধিকার। কোনো সরকারই জনগণের এ মৌলিক অধিকার কেড়ে নিতে পারে না। কথিত ‘তাণ্ডব ও ভাঙচুর’র অভিযোগে সারা দেশে গত আট বছরে যত মামলা হয়েছে, তার সবই অবৈধ, ষড়যন্ত্রমূলক ও মিথ্যা। বিনা শর্তে ষড়যন্ত্রমূলক এসব মিথ্যা মামলা বাতিল করুন, কারাবন্দী সব আলেম-ওলামাদের মুক্তি দিন।
বিএনএনিউজ/মনির