ঢাকা: ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন কি করেননি, এ নিয়ে বিতর্ক এখনও চলমান এবং হয়তো দীর্ঘদিন ধরে চলবে। শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় একাধিকবার দাবি করেছেন যে তার মা পদত্যাগ করেননি। তবে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান একসময় মিডিয়ার সামনে শেখ হাসিনার পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
সাপ্তাহিক ‘জনতার চোখ’ এবং দৈনিক মানব জমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী তার একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী যদি সত্যিই পদত্যাগ করে থাকেন, তাহলে সেই পদত্যাগপত্র কোথায়?
এ প্রশ্নের কোনো স্পষ্ট উত্তর পাওয়া যায়নি। তিনি আরও জানান, তিন সপ্তাহ ধরে অনুসন্ধানের পরও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে কোনো পদত্যাগপত্রের সন্ধান মেলেনি, যেখানে প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রীদের পদত্যাগপত্র থাকার কথা। শেষ পর্যন্ত তিনি বঙ্গভবনে প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, যিনি তাকে অত্যন্ত আন্তরিকভাবে অভ্যর্থনা জানান।
সাক্ষাৎকালে মতিউর রহমান প্রেসিডেন্টের কাছে শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রের বিষয়ে জানতে চান। প্রেসিডেন্ট জানান, তিনি পদত্যাগের কোনো দালিলিক প্রমাণ পাননি। ৫ই আগস্ট সকালে শেখ হাসিনার বাসভবন থেকে বঙ্গভবনে ফোন এলো যে, তিনি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসবেন। তবে কিছুক্ষণ পরই জানানো হলো, তিনি আসছেন না। এরপর প্রেসিডেন্ট জেনারেল আদিলকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেন। পরে শোনা গেল শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। প্রেসিডেন্ট বললেন, “তিনি আমাকে কিছু না জানিয়ে চলে গেলেন।”
পরবর্তী সময়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব পদত্যাগপত্র সংগ্রহ করতে এলেও প্রেসিডেন্ট তাকে জানান, তিনিও সেটি খুঁজছেন। প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে গেছেন, এটাই সত্য। বিতর্ক দূর করতে তিনি সুপ্রিম কোর্টের মতামত নেন, যেখানে বলা হয়, সাংবিধানিক শূন্যতা পূরণ করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে।
শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর তার রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ভারত তাকে ট্র্যাভেল ডকুমেন্ট দেয়, তবে সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এবং সৌদি আরব তাকে আশ্রয় দিতে রাজি হয়নি। বেলারুশের কথাও শোনা গেলেও, শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি।
সূত্র; যুগান্তর
বিএনএ,এসজিএন/হাসনা