বিশ্ব ডেস্ক: আজ শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) শ্রীলঙ্কার জনগণ নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য ভোট দিচ্ছেন। ২০২২ সালের অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া রাজাপক্ষে পরিবারের পর এবারই প্রথম নির্বাচন হচ্ছে দেশটিতে, যা শ্রীলঙ্কার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনটি দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের নতুন এক অধ্যায় শুরু করতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
১ কোটি ৭০ লাখেরও বেশি ভোটার
আজকের ভোটে ১ কোটি ৭০ লাখেরও বেশি ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। নির্বাচনি পরিবেশ সুষ্ঠুভাবে নিশ্চিত করতে দুই লাখেরও বেশি কর্মকর্তা এবং ৬৩ হাজার পুলিশ সদস্য মাঠে আছেন। রোববার নাগাদ নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।ভোটারদের সিদ্ধান্ত নেয়ার দিন আজ,”সেই আতঙ্কের দিনে ফিরবেন, না উন্নতি”।যেখানে ভোটাররা পাঁচ বছরের মেয়াদের জন্য একজন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করবেন।
শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন শনিবার
এই নির্বাচনে সবচেয়ে আলোচিত প্রার্থীদের মধ্যে আছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে, যিনি দেশকে দেউলিয়াত্ব থেকে বের করে আনতে বড় ভূমিকা পালন করছেন। ৭৫ বছর বয়সী এই অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ অর্থনৈতিক পুনর্গঠন এবং স্থিতিশীলতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “আমাদের দেশের দেউলিয়াত্ব কাটিয়ে উঠে একটি নতুন অর্থনীতির পথে যেতে হবে।” তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তার জয়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ।
নির্বাচনে মোট ৩৮ জন প্রার্থী,নারী প্রার্থী নেই
নির্বাচনে মোট ৩৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, তবে কোনো নারী প্রার্থী নেই। প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে রয়েছেন রনিল বিক্রমাসিংহে ছাড়াও, প্রধান বিরোধী দল এসজেবির নেতা সাজিদ প্রেমাদাসা, বামপন্থি দল ন্যাশনাল পিপলস পার্টির অনুরা কুমারা দিসানায়েকে, এবং রাজাপক্ষে পরিবারের অন্যতম সদস্য নমল রাজাপক্ষে। নির্বাচনের প্রধান ইস্যু হিসেবে অর্থনৈতিক পুনর্গঠন, আইএমএফের কর্মসূচি, কর ব্যবস্থা, চাকরি এবং সামাজিক সুরক্ষা সুবিধাগুলোকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
কর্মসংস্থানের ঘাটতি দেশের মানুষকে বিপর্যস্ত করে রেখেছে
শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকটের শিকড় ২০২২ সালে, যখন গোতাবায়া রাজাপক্ষে সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। বৈদেশিক ঋণ এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে শ্রীলঙ্কার জনগণের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও চিকিৎসাসেবা সঙ্কটের মুখে পড়ে, বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং অন্যান্য চ্যালেঞ্জের কারণে জনজীবন প্রায় থমকে যায়। বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কা কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তবে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। বিশেষ করে, উচ্চ করের বোঝা এবং কর্মসংস্থানের ঘাটতি দেশের মানুষকে বিপর্যস্ত করে রেখেছে।
তামিলদের জীবনে খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না
শ্রীলঙ্কার মোট জনসংখ্যা প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ, যার ১২ শতাংশ তামিল জনগোষ্ঠী। তবে, তামিলদের মধ্যে হতাশা রয়েছে যে, এবারের নির্বাচনে তাদের প্রতিনিধিত্ব তেমনভাবে পাওয়া যাচ্ছে না। নির্বাচনের প্রধান প্রার্থীরা সবাই সিংহলা জনগোষ্ঠীর হওয়ায়, তামিল সম্প্রদায়ের উন্নতি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, নির্বাচনটি তামিলদের জীবনে খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না।
2024 শ্রীলংকা elections
এবারের নির্বাচন শুধুমাত্র শ্রীলঙ্কার নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার ব্যাপার নয়, বরং এটি দেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য নতুন দিক নির্দেশনা নির্ধারণে সহায়ক হতে পারে।সেই আতঙ্কের দিনে ফিরবেন, না উন্নতি
বিএনএ, এসজিএন