27 C
আবহাওয়া
৭:৩৪ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ২৪, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » রক্তাক্ত ২১ আগস্ট : যা ঘটেছিল সেদিন

রক্তাক্ত ২১ আগস্ট : যা ঘটেছিল সেদিন


।।ওসমান গনী ।। 

২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট শনিবার।  ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সভা হচ্ছিল। দলটির প্রধান এবং তখনকার বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনা ছিলেন সভার  প্রধান অতিথি ছিলেন। রাস্তায় একটি ট্রাকে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল। বিকেল তিনটা থেকে বক্তৃতা দেয়া শুরু হয়।

বিকেল চারটার দিকে শুরু হয় আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের বক্তব্য দেয়ার পালা। এর পরে শেখ হাসিনা আসলেন। বক্তব্য দিলেন। তাঁর বক্তব্য শেষ হবার সাথে সাথে হঠাৎ করে বিকট শব্দ ।  চারপাশে চিৎকার ।

এভাবে দফায়-দফায় বিস্ফোরণের শব্দে পুরো এলাকা কেঁপে উঠে। সমাবেশে উপস্থিত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা প্রথমে বুঝতে পারেননি যে এটি ছিল গ্রেনেড হামলা। অনেকেই ভেবেছিলেন বোমা হামলা। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা ঘটনার ভয়াবহতা সম্পর্কে আঁচ করেছিলেন।

যখন গ্রেনেড হামলা শুরু হলো, তখন মঞ্চে বসা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা শেখ হাসিনার চারপাশে ঘিরে মানব ঢাল তৈরি করেন – যাতে তাঁর গায়ে কোন আঘাত না লাগে।

যেসব নেতা শেখ হাসিনাকে ঘিরে মানব ঢাল তৈরি করেছিলেন, তাদের মধ্যে ছিলেন ঢাকার সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফ। তখন মি: হানিফের মাথায় গ্রেনেডের আঘাত লেগেছিল। পরবর্তীতে ২০০৬ সালের শেষের দিকে তিনি মারা যান।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথম দফায় হামলার পর স্টেডিয়ামের দিক হয়ে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত শেখ হাসিনাকে সরিয়ে নেওয়া হয়। দলীয় সভাপতি যখন ঘটনাস্থল ত্যাগ করছিলেন, তখনও একই দিক থেকে কয়েক সেকেন্ড বিরতি দিয়ে গ্রেনেড এসে ঘটনাস্থলে বিস্ফোরিত হতে থাকে। একইসঙ্গে চলছিল তার গাড়ি লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো গুলিবর্ষণ। এসব গুলি ও গ্রেনেড ঠিক কোথা থেকে ছোড়া হচ্ছিল, তা বোঝা না গেলেও বেশ পরিকল্পিতভাবে যে হামলা হয়েছে, তা পরে বোঝা যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিস্ফোরণের প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠে আওয়ামী লীগ কর্মীরা সেদিন ক্ষোভে ফেটে পড়েন। বিক্ষুব্ধ কর্মীরা রাস্তায় বিক্ষোভ শুরু করেন। এদিকে ঘটনার পর গাড়ি-ঘোড়া চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অনেক স্থানে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। তখন পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে বিক্ষুব্ধ কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে থাকে।

ঘটনার পরপরই ওই স্থানে যাওয়া  সাংবাদিকরা জানান, চারদিকে যানবাহনে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। রাস্তায় পড়ে আছে জমাটবাঁধা রক্ত, হতাহতদের শরীর থেকে বের হয়ে যাওয়া নাড়িভুঁড়ি, রক্তাক্ত দলীয় পতাকা-ব্যানার, আর পরিত্যক্ত অসংখ্য জুতা- স্যান্ডেল। দলীয় কার্যালয়ের সামনে পেট্রল পাম্পের গলির মাথায় পড়ে আছে একটি তরতাজা গ্রেনেড, অদূরে আরেকটি। আহতদের দলীয় কার্যালয়ের ভেতর থেকে বের করে ভ্যানে ওঠানো হচ্ছিল। পাশের আরেকটি দোকান থেকে বের করে গাড়িতে ওঠানো হচ্ছিল আহত আরও কয়েকজনকে। উদ্ধারকারীরাও আহতদের শরীর থেকে বের হওয়া রক্তে ভিজে একাকার। ফলে পাশে দাঁড়িয়ে থেকেও ঠিক শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছিল না কে আহত আর কে উদ্ধারকর্মী।

বিএনএনিউজ২৪ডটকম 

Loading


শিরোনাম বিএনএ