29 C
আবহাওয়া
৮:৩৪ পূর্বাহ্ণ - জুলাই ২২, ২০২৫
Bnanews24.com
Home » ড.ইউনূস থাকছে, এপ্রিলে ‘হ্যাঁ- না’ ভোট!

ড.ইউনূস থাকছে, এপ্রিলে ‘হ্যাঁ- না’ ভোট!


বিএনএ, ঢাকা:  জুলাই গণ অভ্যূন্থান পরবর্তীতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিঃশর্ত সমর্থন পেয়েছে। ফলে দেশের মানুষের প্রত্যাশা ছিল নতুন বাংলাদেশ হবে  উদার গণতন্ত্র, মানবাধিকার, দূর্নীতিমুক্ত। অনুষ্ঠিত হবে  একটি অংশগ্রহণমূলক নিরপেক্ষ নির্বাচন। কিন্তু সেই কাঙ্খিত নতুন বাংলাদেশ দিন দিন দূরে চলে যাচ্ছে। ভেসে ওঠছে, ডেমোক্রেসির পরির্বতে মবক্রেসির আরেক বাংলাদেশ। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দেখা যাচ্ছে বিভক্তি ও  চরিত্র হননের  প্রতিযোগীতা—যা দেশকে একটি গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

YouTube player

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে লন্ডনে বৈঠকের পর দেওয়া বক্তব্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কিন্তু বিষয়টিকে ভালো চোখে দেখেনি জামায়াত ইসলামী  এবং সরকারি দল জাতীয় নাগরিক পার্টি। তারা প্রকাশ্যে এই বৈঠকের বিরোধীতা করেছে।

এই অবস্থায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে সংসদ নির্বাচনের পিআর পদ্ধতির বিষয়টি সামনে আনা হয়। বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হলেও তাতে একমত হতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো। বিএনপি পিআর পদ্ধতিতে ভোটের প্রস্তাবকে আমলেই নিতে রাজি নয়। অন্যদিকে জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, এনসিপি ও গণ অধিকার পরিষদসহ কয়েকটি দল পিআর পদ্ধতির পক্ষে মত দিয়েছে।

ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায় ১৯ জুলাই জামায়াতে ইসলামীরা নেতারা ছাড়াও, তাদের সমমনা বিভিন্ন দলের নেতারা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর পদ্ধতিতে ভোটের পক্ষে বক্তব্য দিয়েছেন। এই সমাবেশে জামায়াতের সিনিয়র নেতারা, কেউ কেউ ‘পিআর পদ্ধতির দাবি না মানলে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে আদায়ে’র কথা বলেছেন। দলটি তাদের যে সাত দফা দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করেছিলো তার মধ্যে একটি হলো – এই পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি।

জামায়াত ইসলামী নেতাদের এমন বক্তব্য নতুন করে আলোচনা তৈরি করেছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। প্রশ্ন উঠছে যে, শেষ পর্যন্ত নির্বাচন পদ্ধতিকে ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্কই আগামী নির্বাচনকে সংকটে  ফেলে দিচ্ছে কীনা? কারণ দেশের এ মুহূর্তের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি দৃশ্যতই এই পিআর পদ্ধতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে।

বিএনপি সংসদ নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে জামায়াতের এই তৎপরতাকে দেখছে ‘নির্বাচন বিলম্বিত করার কৌশল’ হিসেবে। দলটির নেতারা মনে করেন, সরকারের ঘনিষ্ঠ একটি অংশ নিজেদের স্বার্থে ‘নতুন ইস্যু’ সামনে এনে নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে দু পক্ষই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে নিজেদের পক্ষে টানা এবং নিজেদের অবস্থানের পক্ষে জনমত তৈরির চেষ্টা করছে।

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ডঃ খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলছেন, তারা মনে করেন নির্বাচনকে বিলম্বিত করার ‘ষড়যন্ত্র ও কৌশল’ হিসেবেই এসব ইস্যু সামনে নিয়ে আসা হচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের চেয়ারম্যান ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নানা ইস্যূভিত্তিক বিভক্তির মাধ্যমে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ২০২৯ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় রাখার একটি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ লক্ষ্যে এপ্রিলে দেশে হ্যাঁ- না ভোট অনুষ্ঠিত হতে পারে।

প্রসঙ্গত, বর্তমান বাংলাদেশের সংসদীয় নির্বাচন ব্যবস্থায় ৩০০টি আসনে আলাদা আলাদা প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে রাজনৈতিক দলগুলো। অন্যদিকে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর হচ্ছে নির্বাচনি ব্যবস্থার এমন একটি পদ্ধতি যেখানে আসন বণ্টন হয় প্রতিটি রাজনৈতিক দলের প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে।

অর্থাৎ যদি কোন দল মোট প্রদত্ত ভোটের শতকরা ১০ শতাংশ পায়, তাহলে সেই দল আনুপাতিক হারে সংসদে ৩০টি আসন পাবেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা  বলছেন, পিআর পদ্ধতিকে ঘিরে যে বিতর্ক হচ্ছে তার মূল্য উদ্দেশ্য রাজনৈতিক স্বার্থ ও ক্ষমতা ভাগাভাগির প্রশ্ন। অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার এই ইস্যূটি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঠেলে দিয়ে নির্বাচনের চাপ থেকে অবমুক্ত এবং নিজেদের ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার একট কৌশল হিসেবে বেছে নিয়েছে।

সৈয়দ সাকিব 

 

Loading


শিরোনাম বিএনএ