বিএনএ ডেস্ক : আজ ২১ জুন বিশ্ব হাইড্রোগ্রাফি দিবস। হাইড্রোগ্রাফি বিষয়ে জনসচেতনতা এবং সাগর-মহাসাগরবিষয়ক জ্ঞান বৃদ্ধিতে হাইড্রোগ্রাফির ভূমিকা তুলে ধরার লক্ষ্যে দিবসটি উদযাপিত হয়। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক হাইড্রোগ্রাফিক সংস্থা (আইএইচও) এর সক্রিয় সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ প্রতিবছর যথাযথ গুরুত্বের সাথে দিবসটি পালন করে থাকে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য, ‘সামুদ্রিক কার্যক্রমে নিরাপত্তা, দক্ষতা ও টেকসই উন্নয়নে হাইড্রোগ্রাফিক তথ্যের গুরুত্ব’।
হাইড্রোগ্রাফি হলো সেই বিজ্ঞান যা সমুদ্র, সমুদ্র তলদেশ এবং তৎসংলগ্ন উপকূলীয় অঞ্চলের ভৌত বৈশিষ্ট্যাবলী পরিমাপ করে। তবে এটি শুধু নটিক্যাল চার্ট এবং প্রকাশনার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি সমুদ্র ও সমুদ্র বিজ্ঞানের সব শাখা-প্রশাখার সঙ্গে জড়িত। সামুদ্রিক সম্পদের ব্যবহার, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনা, সমুদ্রসীমা নির্ধারণ, সামুদ্রিক পরিকল্পনা, সুনামি ও জলোচ্ছ্বাস মডেলিং, উপকূলীয় এলাকার ব্যবস্থাপনা, সামুদ্রিক পর্যটন এবং সমুদ্র প্রতিরক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে হাইড্রোগ্রাফি বিশেষভাবে জড়িত। ফলে এর যথাযথ গুরুত্ব অনুধাবনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
২০১০ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং যুক্তরাজ্য হাইড্রোগ্রাফি অফিসের (ইউকেএইচও) মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। সমঝোতা চুক্তির আওতায় ইউকেএইচও আমাদের তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করে বাংলাদেশের সমুদ্র অঞ্চলের আন্তর্জাতিক সিরিজের পেপার চার্ট বিতরণ করছে যা দেশ-বিদেশের সব জাহাজে নিরাপদ নেভিগেশনের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ৯টি আন্তর্জাতিক সিরিজ পেপার চার্ট এবং ১১টি ইলেকট্রনিক নেভিগেশনাল চার্টসহ সমুদ্র অঞ্চলের সর্বমোট ৬৩টি নেভিগেশনাল চার্ট প্রকাশে দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছে।
বাংলাদেশ নৌবাহিনীর হাইড্রোগ্রাফিক সার্ভিস ছাড়াও বিআইডব্লিউটিএ, চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব হাইড্রোগ্রাফিক সংস্থা রয়েছে, যারা নিজ দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকায় হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। দেশের সব হাইড্রোগ্রাফিক অফিসের সঙ্গে বাংলাদেশ নৌবাহিনী হাইড্রোগ্রাফিক সার্ভিসের ঘনিষ্ঠ পেশাগত সম্পর্ক রয়েছে। নৌবাহিনীর হাইড্রোগ্রাফিক সার্ভিস ও দেশের অন্যান্য হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ সংস্থাগুলো নিয়মিতভাবে তথ্য উপাত্ত আদান-প্রদান করে থাকে। এ ছাড়াও সার্ভে অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট, স্পারসো, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের মতো সরকারি সংস্থাগুলোকে সহযোগিতা প্রদান করে থাকে। এ ছাড়াও সামুদ্রিক গবেষণার জন্য দেশের বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণামূলক সংস্থাগুলোকেও নিয়মিত সহায়তা প্রদান করে থাকে।
জাতিসংঘ ২০২১-৩০ সালকে সমুদ্রবিজ্ঞানের দশক হিসেবে ঘোষণা করেছে। সমুদ্রবিজ্ঞানের সহায়তা নিয়ে সব দেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করাই এর লক্ষ্য। এ দশকে সমুদ্র বিজ্ঞানে এক অভূতপূর্ব বিপ্লব সাধিত হবে, যা সমুদ্রের সাথে মানবজাতির সম্পর্ককে এক নতুন মাত্রা এনে দেবে।
বিএনএনিউজ/এইচ.এম/ হাসনা