বিএনএ, ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মো. মোখলেছুর রহমান ওরফে তারা (৭০)কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪। বৃহস্পতিবার (২১ জুন) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ময়মনসিংহ র্যাব-১৪’র সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এর আগে ওই দিন সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে ময়মনসিংহ নগরীর ধোপাখলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব।গ্রেফতারকৃত মো. মোখলেছুর রহমান ওরফে তারা শেরপুর জেলার নকলা পৌর শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত ময়েজ উদ্দিনের ছেলে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার নকলা হাইস্কুলে পাকিস্থানী হানাদার বাহিনী মোখলেছুর রহমান ওরফে তারার সহায়তায়তায় রাজাকার ক্যাম্প স্থাপন করেন। ওই ক্যাম্পে পাকিস্থানী আর্মিরা বাংকার, বন্দিশালা, টর্চারসেল তৈরি করেন। অভিযুক্ত তারার নেতৃত্বে নকলা উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে সাধারণ মানুষ ধরে এনে ওই ক্যাম্পের বন্দিশালায় রেখে রেখে নির্যাতন ও হত্যা করতেন।
১৯৭১ সালের ২১ জুলাই ভেররাতে তারার নেতৃত্বে নকলা উপজেলার বিবির চর গ্রাম থেকে সোহরাব উদ্দিন, তার শ্যালক কুদ্দুস এবং কুদ্দুসের চাচাতো ভাই মোবারক আলীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে এসে হত্যা ও তাদের বাড়িঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এছাড়াও, ওই বছরের ২৭ আগস্ট বিকালে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মো. শাহজাহান আলী ওরফে সজু নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে তাকে ধরে নিয়ে আসে তারা ও তার সহযোগীরা। ধরে আনার পর তাকে টর্চার সেলে রেখে অমানবিক নির্যাতন করে।
এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে গত ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলা হয়। ওই মামলায় মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও লুটপাটসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। ওই মামলা আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এরপর থেকে তারা পলাতক ছিলেন। পরে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ র্যাব-১৪’র সিনিয়র সহকারি পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, পরোয়ানা জারি হলে গ্রেফতার এড়াতে সে আত্মগোপনে চলে যায়। এসময় সে নিজ এলাকা ত্যাগ করে ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপন করে ছিলেন। গ্রেফতারকৃত মো. মোখলেছুর রহমান ওরফে তারাকে শেরপুর জেলার নকলা থানায় হস্তান্তর পক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।
বিএনএ/ হামিমুর, এমএফ