21 C
আবহাওয়া
৭:৫৯ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ২৩, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » উপজেলা নির্বাচন: ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে চায় আওয়ামী লীগ

উপজেলা নির্বাচন: ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে চায় আওয়ামী লীগ


বিএনএ, ডেস্ক : দেশে উপজেলার সংখ্যা ৪৯২। সর্বশেষ ২০১৯ সালে পাঁচ ধাপে দলীয় প্রতীকে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমবার দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচন বর্জন করে বিএনপিসহ সমমনা বিরোধী দল।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের পরপরই উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপি এখনো ভাবছে না। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সম্ভাবনা ক্ষীণ।

এ পরিস্থিতিতে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া না দেওয়া খুব বেশি গুরুত্ব বহন করে না; বরং একজনকে প্রতীক দিলে অন্যরা বিরোধিতায় নামবে। দলে বিভেদ বাড়বে। সেই ক্ষেত্রে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন এবং দলীয় প্রতীক নৌকায় না দেওয়ার চিন্তা করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তবে এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই এই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১৭ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ঢাকা মহানগর ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিএনপি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিক আর না নিক—আওয়ামী লীগ নিজেদের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলার জন্যই উপজেলা পরিষদে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন না দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করছে।

দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকেই আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলীয়ভাবে মনোনয়ন না দেওয়ার অনুরোধ করেন। এ সময় ওবায়দুল কাদের বলেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার সঙ্গে আলাপ করবেন বলে জানান।

স্থানীয় সরকারব্যবস্থায় দলীয় প্রতীক যুক্ত করার পেছনে একটি রাজনৈতিক লক্ষ্য ছিল। তা হচ্ছে তৃণমূল পর্যায়ে দলীয় প্রতীক ছড়িয়ে দেওয়া। পাশাপাশি সব পর্যায়ে দলীয় জনপ্রতিনিধির ব্যবস্থা চালু করা। একেবারে দলীয় প্রতীক তুলে দিতে হলে আইনের সংশোধন করতে হবে। কিন্তু আইন সংশোধনের ইচ্ছা আপাতত আওয়ামী লীগের নেই; বরং বিদ্যমান আইন বহাল রেখে দলীয় সিদ্ধান্তে মনোনয়ন না দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয়ভাবে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে আপত্তি করে আসছে কেন্দ্রীয় নেতাদের একটা বড় অংশ।

২০১৫ সালে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আইন প্রণয়নের পর থেকে স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করে আসছে রাজনৈতিক দলগুলো। উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে এবং পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে দলীয়ভাবে মনোনয়ন দেওয়ার নিয়ম এখনো বিদ্যমান। ভাইস চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর ও সদস্য পদে যার যার মতো করে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে সব ক্ষেত্রেই দলের মনোনীত প্রার্থীর বাইরেও আওয়ামী লীগের বিপুলসংখ্যক নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।

ফেরুয়ারির প্রথম সপ্তাহে প্রথম ধাপে শ’ খানেক উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার করবে এমন আভাস দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ভোটের শুরু হতে পারে মার্চে।চার-পাঁচ ধাপের এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, দলীয় সংহতি, ঐক্যের বিষয় চিন্তা করে এবার উপজেলা নির্বাচনে কাউকে নৌকা না দেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় আছে। পরবর্তী নির্বাচনে এই ব্যবস্থা পরীক্ষা করে দেখার চিন্তা আছে। ভবিষ্যতে যদি মনে হয়, রাজনৈতিকভাবে সবাই অংশ নিচ্ছে; তখন আওয়ামী লীগও পুনরায় প্রতীক দিতে পারে।

আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুসারে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার পর কেউ এর বিরোধিতা করে নিজে নির্বাচনে অংশ নিলে বা অন্য কারও পক্ষে ভোট করলে তাঁকে দল থেকে সরাসরি বহিষ্কার করতে হবে। ২০১৫ সালের পর সব ধরনের নির্বাচনে দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া নেতাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে এবার জাতীয় নির্বাচনে দল সিদ্ধান্ত নিয়েই স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দিয়েছে। ফলে গঠনতন্ত্রের এই ধারার প্রয়োগ করা হয়নি।

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতাকারীদের বহিষ্কার করে দেখা গেছে, তৃণমূলের নেতৃত্বই আর থাকে না। পরে তাঁদের ফিরিয়ে আনতে হয়েছে। গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে দুবার বহিষ্কার করে প্রতিবারই ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ফলে বহিষ্কার করার বিষয়টি বাস্তবায়নযোগ্য নয়। এ জন্যই দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে।

সূত্র জানায়, জাতীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকার ফলে এমনিতে তৃণমূলে বিভেদ তৈরি হয়েছে। এখন আবার দলীয় প্রতীকে উপজেলা নির্বাচন হলে বিভেদ বাড়বে। এ জন্যই দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে।

নির্বাচন কমিশনের হিসাবে, সর্বশেষ নির্বাচনে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে কম ভোট পড়েছে। অতীতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশের মতো ভোট পড়েছে। সর্বশেষ উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৪০ দশমিক ২২ শতাংশ।

ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার অন্যতম কারণ ছিল বিরোধীদের ভোট বর্জন ও দলীয় প্রতীকে নির্বাচন। তাই ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা সৃষ্টি করতে হলে দলীয় মনোনয়ন বাদ দিতে হবে। এতে হানাহানি- সংঘাত কমবে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এমনটই মনে করেন ।

বিএনএ/শামীমা চৌধুরী শাম্মী,  ওজি/এইচমুন্নী

Loading


শিরোনাম বিএনএ