বিএনএ,ঢাকা: জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগের মামলায় পলাতক প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) ‘সহযোগী’ সুকুমার মৃধা ও তার মেয়ে অনিন্দিতা মৃধার তিন দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। বৃহস্পতিবার(২১ জানুয়ারি) এ আদেশ দেন ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)র উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন দু’জনকে আদালতে হাজির করে তিন দিনের রিমাণ্ড চেয়ে আবেদন করেন।দু’জনের পক্ষে এক আইনজীবী শুনানি করতে যান। তবে ওকালতনামায় অভিযুক্তের স্বাক্ষর না থাকায় আদালত তাদের শুনানি গ্রহণ করেনি।এরপর রিমাণ্ডের আদেশ দেন বিচারক।
এরআগে বৃহস্পতিবার সকালে সেগুনবাগিচায় দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে তাদের ডাকা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পিকে হালদারের অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে সুকুমার মৃধা ও তার মেয়ে অনিন্দিতা মৃধার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মেলে।এরপরই তাদের গ্রেফতার করে দুদক।
এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি পিকে হালদারের বান্ধবী অবন্তিকা বড়ালের তিন দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করে একই আদালত।তারো আগে ৪ জানুয়ারি পিকে হালদারের নিকটতাত্মীয় শঙ্খ বেপারীর তিন দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করা হয়।
গত সোমবার দুদকের জব্দ করা ৭৬৯ কোটি টাকার বিষয়ে পিকে হালদারের সহযোগী বাসুদেব ব্যানার্জী ও পাপিয়া ব্যানার্জীকে জিজ্ঞাসাবাদের কথা থাকলেও তাদের কেউই দুদকে হাজির হননি।
জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী সব মিলে ১০ হাজার ২০০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে।এর মধ্যে পিকে হালদারের ৪০টি ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসেবে ঋণ নেয়া ছাড়াও তার মা লীলাবতী হালদারের ৩টি ব্যাংক হিসেবে ১৬০ কোটি টাকা জমা হয়।একইভাবে স্বজনদের বিভিন্ন কোম্পানির নামে করা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক এমডি পিকে হালদার ও তার সহযোগীদের ১৭টি ভুয়া কোম্পানিতে থাকা ৫৮টি ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে।এছাড়া এসব প্রতিষ্ঠানের যেসব শেয়ার কেনা হয় তার প্রত্যেকটিতেই পিকে হালদার সিংহভাগের অংশীদার।এর মধ্যে সুখদা লিমিটেডের শেয়ার অবন্তিকা বড়ালের নামে রয়েছে।
পিকে হালদারের সঙ্গে যোগসাজশে বিভিন্ন উপায়ে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অবন্তিকার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। এ বিষয়ে জানতে পিকে হালদারের কথিত বান্ধবী অবন্তিকাকে গত ডিসেম্বরে তলব করা হলেও হাজির হননি তিনি। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, আদালতের আদেশে যে ১৭টি কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধ হয় সেখানে অবন্তিকার নামেও শেয়ার রয়েছে। সুখদা লিমিটেডে পিকে হালদারের ৯০ শতাংশ ছাড়াও মা লীলাবতী হালদার ও অবন্তিকারও শেয়ার ছিল বলে অনুসন্ধানে পাওয়া যায়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী পিকে হালদার ও তার সহযোগীদের মালিকানাধীন অন্তত ৩০টি প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে এনবিএফআইয়ের কাছ থেকে ১০ হাজার ২০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করা হয়। পরে এ অর্থ পাচার করে পি কে হালদার।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আইএলএফএসএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন পিকে হালদার।গ্রাহকদের অভিযোগের মুখে বছরের শুরুতেই বিদেশ পালিয়ে যান তিনি।গত ৮ জানুয়ারি ২৭৪ কোটি ৯১ লাখ ৫৫ হাজার ২৫৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করেন কমিশনের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী।
বিএনএনিউজ/সাহিদুল/আরকেসি