বিএনএ, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে র্যাব ও পুলিশের তালিকাভুক্ত চোরাকারবারি ও মাদক সম্রাট আহম্মেদ নূর (৫৫) কে এক সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। শুক্রবার (২০ আগস্ট) সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর কোতোয়ালী থানাধীন লালখান বাজার ইস্পাহানি মোড় থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার আহম্মেদ নূর কর্ণফুলী থানার শিকলবাহা ক্রসিং বাজার এলাকার মৃত আমিনুল হকের ছেলে এবং আরেকজন হলেন- বাঁশখালী থানার জলদী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মো. নুরুল ইসলামের ছেলে মো. জাহিদুল ইসলাম(৩০)। তাদের কাছ থেকে ২৯ হাজার ২৪৮ ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়।
চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা (উত্তর) বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার জনসংযোগ কর্মকর্তা আরাফাতুল ইসলাম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১৯ আগস্ট ২০.২০ ঘটিকায় চট্টগ্রামের বায়েজীদ বোস্তামী থানাধীন উত্তরা আবাসিক সংলগ্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ২৯,২৪৮ ইয়াবা বড়িসহ মো. জাহিদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে ইয়াবা বড়িগুলো আহম্মেদ নূর নামে এক ব্যক্তি বিক্রি করার জন্য তার কাছে মজুদ রেখেছে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আজ (২০ আগস্ট) ১২.৩০ ঘটিকার সময় নগরীর লালখান বাজার ইস্পাহানি মোড় থেকে আহম্মেদ নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা (উত্তর) বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার জনাব মোহাম্মদ সালাম কবির বলেন, আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রনের পাশাপাশি মহানগর গোয়েন্দা (উত্তর ও দক্ষিণ) বিভাগের মাদক বিরোধী অভিযান অব্যাহত আছে। যথাযথ তথ্য প্রাপ্তি সাপেক্ষে নেওয়া হচ্ছে আইনগত ব্যবস্থা। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে বায়েজিদ থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১৮ আগস্ট এনার্জি বাল্বের প্যাকেটে লুকিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ইয়াবা পাচারকালে নগরীর কদমতলীর একটি ট্রান্সপোর্ট এজেন্সিতে অভিযান পরিচালনা করে ৯০ হাজার ইয়াবা বড়িসহ আহম্মেদ নূর ও মোহাম্মদ রাসেল নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ ঘটনায় সদরঘাট থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলার পর চার্জশিট দেয় পুলিশ। বিচারও শুরু হয়েছে চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা আদালত-৩ এ। এর মধ্যে হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ আবদুল আউয়াল ও বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের আদালতের নাম ব্যবহার করে জামিন আদেশ জাল করে কারাগার থেকে বেরিয়ে যায় তারা।
২০১৮ সালের ৩০ মে জালিয়াতির ওই ঘটনা জানাজানির পর হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ আবদুল আউয়াল ও বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চের নির্দেশে হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার গোলাম রব্বানীকে চেয়ারম্যান করে তিন সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠিত হয়। কমিটি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের বেঞ্চ কর্মকর্তা, এমএলএসএস, ফৌজদারি বিবিধ শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী, কমিশনার অব এফিডেভিট, অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের আইন কর্মকর্তা ও এমএলএসএসসহ ১৭ জনের জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
তদন্তে জাল জামিন আদেশ তৈরিতে হাইকোর্টের ফৌজদারি বিবিধ শাখার নয় কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে চিহ্নিত করা হয়। একই সঙ্গে কমিটি এ ধরনের জালিয়াতি বন্ধে ১৩ দফা সুপারিশ করে। পরবর্তীতে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের নির্দেশে জামিন জালিয়াতির এ ঘটনায় ওই বছরের ২৪ জুলাই শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের হয়। ওই মামলায় মামলায় হাইকোর্টের ফৌজদারি বিবিধ শাখার এমএলএসএস মঞ্জু রাণী কৈরীকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। সঙ্গে আরও দু’জনসহ মোট আসামির সংখ্যা তিনজন। এছাড়া জালিয়াতি করে জামিন নেয়া দু’জনের নাম মামলার নথিতে উল্লেখ করা হয়ছে। তারা হলেন-ভুয়া জামিনে কারাগার থেকে বের হয়ে আসা ইয়াবা বড়ি মামলার চট্টগ্রামের দুই আসামি আহমেদ নূর ও মো. রাসেল।
বিএনএনিউজ২৪/আমিন