বিএনএ: মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় এক দোকান মালিককে তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে তুলে নিয়ে গেছেন পুলিশের এএসআই। ওই ব্যবসায়ীকে মহাসড়কের পাশে নির্জন স্থানে নিয়ে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়।
এমন অভিযোগ উঠেছে গজারিয়া থানার এএসআই সুমন মিয়ার বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা খবর পেয়ে এএসআই সুমন মিয়াসহ তার সঙ্গে থাকা পুলিশ সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রাখে। স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করা হয়।
ভুক্তভোগী দোকান মালিক শাকিল ফরাজী (২৬) গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়া ইউনিয়নের মধ্য বাউশিয়া গ্রামের সিঙ্গাপুরপ্রবাসী এমদাদুল হক ফরাজীর ছেলে।
শাকিল সাংবাদিকদের জানান, ‘মধ্য বাউশিয়া বাসস্ট্যান্ডে তার একটি দোকান আছে। রোববার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যায় গজারিয়া থানার এএসআই সুমন জানান, তার নামে নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় একটি মাদক মামলা হয়েছে। তখন শাকিল এএসআইকে জানান গত কয়েক মাসের মধ্যে তিনি নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় যাননি। মামলার নথি দেখতে চাইলে দেখাতে ব্যর্থ হয় এএসআই সুমন।
শাকিল বলেন, সোমবার (২০ মার্চ) সাড়ে ১০টার দিকে একটি সাদা রংয়ের প্রাইভেটকার নিয়ে আসেন সুমন। কথা আছে বলে তাকে গাড়িতে তুলে নেন এএসআই। গাড়িতে সুমন ছাড়াও টিশার্ট পড়া একজন ছিলেন, যিনি নিজেকে এসআই পরিচয় দিয়েছিলেন এবং কনস্টেবল রফিকুল ও গাড়ির চালক ছিলেন। চালক গাড়িটিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন চর বাউশিয়া এলাকার নাবিস্কো কোম্পানির একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী শাকিল জানান, সেখানে নিয়েই একটি পিস্তল দেখিয়ে সুমন ২ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে মাদক মামলার আসামি হিসেবে তাকে ক্রসফায়ার দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার কাছে থাকা টাকা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় সুমন। এরপর মারধর করে হ্যান্ডকাফ পরানোর চেষ্টা করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে।
শাকিলের মা রোকসানা বেগম বলেন, ‘সকালে পুলিশ শাকিলকে তুলে নেয়ার পরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি শুরু করি। ২-৩ ঘণ্টায় গজারিয়া থানাসহ বিভিন্ন জায়গায় শাকিলকে খুঁজেছি। পরে জানতে পারি, একটি জঙ্গলের ভেতরে শাকিলকে আটকে রাখা হয়েছে। স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশের হাত থেকে শাকিলকে উদ্ধার করে এনেছি।
অভিযোগ সম্পর্কে অভিযুক্ত এএসআই সুমন বলেন, ‘আমার এক বন্ধু নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় কর্মরত। সেখানে শাকিলের নামে একটি মাদক মামলা হয়েছে। আমার ওই বন্ধু আজ গজারিয়া থানায় এসেছিলেন এবং মামলার বিষয়ে নিরিবিলি কথা বলার জন্য শাকিলকে নাবিস্কো গ্রুপের বাগানে নিয়ে যান।
গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা সোয়েব আলী বলেন, ‘দুপুরের দিকে আমরা বিষয়টি জানতে পারি। পুলিশ সুপারের নির্দেশে এএসআই সুমনকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। তার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিএনএনিউজ/এ আর