বিএনএ,ডেস্ক : ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে নতুন রাজনৈতিক দলের প্রধান হতে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। সেকারণে আগামী সপ্তাহে পদত্যাগ করবেন তিনি। নাহিদ ইসলাম পদত্যাগ করলে তার মন্ত্রণালয় দুটির দায়িত্ব উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে দেওয়া হতে পারে। তিনি বর্তমানে দপ্তরবিহীন উপদেষ্টা হিসেবে থাকলেও, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিভিন্ন কাজে সমন্বয় করছেন।
অবশ্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের নামও শোনা যাচ্ছে। নাহিদ ইসলামের পদত্যাগের পর উপদেষ্টা পরিষদে রদবদলের সম্ভাবনা রয়েছে। বাড়তে পারে উপদেষ্টা পরিষদের পরিসর।
যুক্তরাজ্যের সোয়াস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুশতাক খানের নামও শোনা যাচ্ছে। এর বাহিরে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় থাকা বিশেষ সহকারীদের থেকেও কাউকে উপদেষ্টা পরিষদে যুক্ত করা হতে পারে।
সূত্র জানায়, বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ড. আসিফ নজরুলের অধীনে দুটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় রয়েছে। তার ওপর চাপ কমাতে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় তার অধীনে রেখে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে অন্য কাউকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বেসামরিক বিমান, পর্যটন ও ভূমি উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া দপ্তরে একজন নতুন মুখ আসতে পারেন। ফলে দু-তিনজন নতুন উপদেষ্টার যুক্ত হওয়ার পাশাপাশি বর্তমানদের দপ্তরও পরিবর্তন হতে পারে।
গত ছয় মাসে প্রতিটি ক্ষেত্রে নানা পদক্ষেপ নিলেও সরকার জনপ্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি এমন অভিযোগ রয়েছে। বিগত সরকারের আমলারা সরকারের নানা তৎপরতার বিপরীতে পদে পদে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে বলেও অনেকে মনে করেন। এছাড়া প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা না থাকায় আমলাদের মারপ্যাচ থেকে বেরিয়ে আসতে পারছেন না উপদেষ্টারা। তার ওপর একেকজন উপদেষ্টাকে দু-তিনটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। ফলে কাজে গতি আসছে না। রয়েছে সমন্বয়হীতাও।
গত ১৫ই ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের আলোচনায় সরকারের কাজের গতি ও সমন্বয়ের অভাবের প্রশ্ন উঠে আসে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অন্তর্বতীকালীন সরকারের কাজের ধীরগতির অভিযোগ তোলে। এ সময় প্রয়োজনে পরিসর বাড়িয়ে হলেও সরকারের গতি বাড়ানোর পরামর্শ দেন রাজনৈতিক নেতারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উপদেষ্টা পরিষদে নতুন মুখের খোঁজে কয়েকজনের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ছিলেন, এমন এক ব্যক্তির নামও জোরালো আলোচনায় রয়েছে। তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করলে তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। এ ক্ষেত্রে বর্তমান পররাষ্ট্র উপদেষ্টার দপ্তর পরিবর্তন হতে পারে।
অবশ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও যুক্তরাষ্ট্রের সরকারী দক্ষতা বিষয়ক বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইলন মাস্কের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার টেলিফোন আলাপসহ বাংলাদেশ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ অবস্থানকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বড় সফলতা মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি দেশের স্বার্থ রক্ষা করে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বর্তমান পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সাম্প্রতিক ভূমিকাকে সরকার ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করছে। এ ক্ষেত্রে উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল হলেও পররাষ্ট্র উপদেষ্টার দপ্তর পরিবর্তন শেষ পর্যন্ত না-ও হতে পারে।
উপদেষ্টা পরিষদের রদবদল প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, নাহিদ ইসলাম পদত্যাগ না করা পর্যন্ত উপদেষ্টা পদে রদ বদল বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে নাহিদ ইসলাম চলে গেলে স্বাভাবিকভাবেই দপ্তর পুনর্বণ্টন ও রদবদল হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন।
বিএনএ/ শামীমা চৌধুরী শাম্মী, ওজি/এইচমুন্নী