27 C
আবহাওয়া
৬:১৫ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ২৪, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » কীভাবে ফেব্রুয়ারি ভাষার মাস হয়ে উঠলো

কীভাবে ফেব্রুয়ারি ভাষার মাস হয়ে উঠলো


।। মনির ফয়সাল।।

প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত দুটি ভূখণ্ডের দুটি ভিন্ন ভাষার জাতিসত্তাকে মিলিয়ে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম থেকেই মাতৃভাষাকে কেন্দ্র করে সূচনা হয়েছিল আন্দোলনের। আর এই ভাষা আন্দোলনকেই বাংলাদেশ রাষ্ট্র সৃষ্টির পথে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে মনে করা হয়।

১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ ঘোষণা করে। এর মধ্য দিয়ে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে এখন বিশ্বের দেশে দেশে পালিত হয়।

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে দুর্বার আন্দোলনে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিকের রক্তের বিনিময়ে বাঙালি জাতি পায় মাতৃভাষার মর্যাদা এবং আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থান। আর সেই পথ ধরে শুরু হয় বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন। সেদিক থেকে ফেব্রুয়ারি মাস একদিকে শোকাবহ হলেও শোক থেকে প্রাপ্ত শক্তি এখন পুরো মাসকে ভাষার মাস হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়। এখন শোকে মুহ্যমান না থেকে বাংলা ভাষাকে নিয়ে অহংকারের সেই স্মৃতির উদযাপন চলে সারা মাস ধরে।

উদযাপনের মধ্য দিয়ে এই প্রজন্ম জানতে পারে তার ইতিহাস। বাংলা একাডেমির উদ্যোগে মাসব্যাপী চলে অমর একুশে গ্রন্থমেলা, আয়োজিত হয় জাতীয় কবিতা উৎসব, প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রকাশিত হয় অনেক স্মরণিকা। আয়োজন চলে রাজধানী ঢাকা ছাড়িয়ে জেলা শহর থেকে শুরু করে প্রবাসে। সম্প্রচার মাধ্যম ও সংবাদপত্রগুলো ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকেই রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন নিয়ে বিশেষ আয়োজন রাখে।

যে প্রত্যাশা নিয়ে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করা হয়েছিল, সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রয়োগ, তা আশানুরূপভাবে প্রতিষ্ঠা করা গেছে বলে মনে হয় না উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও ময়মনসিংহ ত্রিশালের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৌমিত্র শেখর দে বলেন, ‘শিক্ষা, ব্যবসা ও দাফতরিক ভাষায় বাংলার প্রয়োগ আমরা নিশ্চিত করতে পারিনি। ভাষা বেঁচে থাকে তার সঙ্গে অর্থনীতির যোগ থাকলে। মূল অর্থনীতি ও তার চালিকাশক্তির সঙ্গে আমাদের ভাষার কোনও সম্পর্ক নেই। সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রয়োগ এখন কল্পনা মনে হয়। আর বর্তমান প্রজন্ম বাংলা ছাড়া যে ভাষা ব্যবহারে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে শক্তিশালী জায়গা করতে পারে, তারা সেই ভাষাতেই কাজ করে। ফলে বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার যে জায়গায় আমাদের পৌঁছানোর কথা ছিল, সেখানে যাওয়া সম্ভব হয়নি।’

আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেও রাষ্ট্রীয়ভাবে দাফতরিক কাজে বাংলার ব্যবহার নিশ্চিত করতে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিচারিক কাজে, সরকারি দফতরে এখন বাংলাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। বিভিন্ন ফরম ও ওয়েবসাইটে ইংরেজির পাশাপাশি অবশ্যই যেন বাংলা থাকে সে ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের বেশ কিছু আদেশ কার্যকর ভূমিকা পালনে সহায়তা করেছে।

বিএনএ/ ওজি/এইচমুন্নী

Loading


শিরোনাম বিএনএ