বিএনএ,চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম নগরীর সব ধরণের প্রতিষ্ঠানের ইংরেজি সাইনবোর্ড সরিয়ে বাংলায় লিখতে তিনদিন পর্যন্ত সময় দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এরপর থেকে বাংলা ছাড়া অন্য কোনো ভাষার সাইনবোর্ড পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের জিইসি, কাজীর দেউড়ি, জামালখান ও চকবাজার এলাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বিপনী বিতান এবং দোকানে জেলা প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করে। এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. উমর ফারুক, মিজানুর রহমান এবং রেজওয়ানা আফরিন।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. উমর ফারুক বলেন, সব ধরণের প্রতিষ্ঠানের ইংরেজি সাইনবোর্ড সরিয়ে বাংলায় লিখতে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলা ছাড়া অন্য কোনো ভাষার সাইনবোর্ড পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, অভিযানে জিইসি মোড়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বিপনী বিতান এবং দোকানে অভিযান চালিয়ে প্রায় ২০টি দোকান ও প্রতিষ্ঠানের মালিককে বাংলা ভাষায় সাইনবোর্ড ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এ সময় ওয়েল ফুড, সুগার বান, সেন্ট্রাল শপিং কমপ্লেক্স, ডিয়ারলি আইসস্ক্রিম, ফ্লেভারস, জামান রেস্টুরেন্ট মেজবানি অ্যান্ড কাবাব, নভোএয়ার লিমিটেড, রয়েল পার্ক রেসিডেন্টশিয়াল হোটেল, মিনিসো, বি-টু, ঢাকা বুট বার্ন, হোসাইন লাইটিং, ভিআইপি অপটিকসকে বাংলায় সাইনবোর্ড ব্যবহারের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়।
চকবাজার, কাজীর দেউড়ি ও এম এ আজিজ স্টেডিয়াম এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমান। তিনি এসব এলাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বিপনী বিতান এবং দোকান মালিককে ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাংলায় সাইনবোর্ড ব্যবহার নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেন।
এছাড়া জামাল খান এলাকায় পরিচালিত অভিযানে নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রেজওয়ানা আফরিন। তিনি জামাল খান এলাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বিপনী বিতান এবং দোকান মালিককে আগামী ৩ দিনের মধ্যে বাংলায় সাইনবোর্ড ব্যবহার নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেন।
অভিযানে সহযোগিতা করেন বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ও বিজয় ’৭১ এর উপদেষ্টা ডা. মাহফুজুর রহমান, গণ অধিকার চর্চা কেন্দ্রের সুস্ময় চৌধুরী, সোলমান খান, মশিউর রহমান খান, আবদুল মাবুদ, সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. আর কে রুবেল, বিজয় ’৭১ এর সভাপতি সজল চৌধুরী প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের এক আদেশে দেশের সব সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড, ব্যানার, গাড়ির নম্বর প্লেট, সরকারি দপ্তরের নামফলক এবং গণমাধ্যমে ইংরেজি বিজ্ঞাপন ও মিশ্র ভাষার ব্যবহার বন্ধ করতে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। আদালতের আদেশের তিন মাস পর ২০১৪ সালের ১৪ মে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডগুলোকে আদেশটি কার্যকর করতে বলেন। কিন্তু ফলক এখনও পুরোপুরি বাংলায় না হওয়ার পেছনে নানা সীমবদ্ধতার কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, দীর্ঘ বছর ধরে এ ফলকে পরিচিতি লাভ করেছে নিজেদের প্রতিষ্ঠানগুলো। তাই চাইলেই পরিবর্তন করা যাচ্ছে না।
বিএনএনিউজ/মনির