বিএনএ, চট্টগ্রাম : কোরআনে হাফেজ নজরুল ইসলামের ভিটেবাড়ি দখলে নিতে চায় সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর ও তার সেকেন্ড ইন কমান্ড আজমগীর ওরফে আজিম্যা বাহিনী । এমনকি পরিবারসহ তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে সন্ত্রাসীরা ।শনিবার( ২০ ফেব্রুয়ারী) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে উপজেলার পেকুয়া সদরের স্থানীয় মসজিদের ইমাম কোরআনে হাফেজ নজরুল ইসলাম এমন অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে তিনি বলেন, এক টুকরা জমি বিক্রিই আমার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে । আমার জমি বিক্রির সমস্ত টাকা হাতিয়ে নেয়ার পাশাপাশি জানে মেরে ফেলার চেষ্টা করছে পেকুয়া যুবলীগের সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ও তার সেকেন্ড ইন কমান্ড আজমগীর ওরফে আজিম্যা বাহিনী।এমনকি তাদের এমন অপকর্মে বিব্রত স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, আমার প্রতিবেশীর কাছে ১৪ শতক জমি বিক্রি করার পর আমার উপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। জমির ক্রেতা নুরুল আমীনকে সাথে নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর ও তার ভাই আজমগীর জমি বিক্রির টাকার ভাগ তাদের দেয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। সাব রেজিষ্ট্রারের জন্যও তিন লক্ষ টাকা দাবী করে তারা। তাদের চাহিদা মতো টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই উপজেলা চেয়ারম্যানের পালিত সন্ত্রাসী নুর মোহাম্মদ গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে বলে ঐ বাহিনীর চৌমুহনী আজীজ কলোনীস্থ তাদের (গোপন টর্চারসেল) ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে তারা আমাকে আটকিয়ে ফেলে। আমার হাত পা বেঁধে ব্যাংকে জমা দেয়ার জন্য নেয়া নগদ ৫ লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নেয়, জমির বিক্রির বাকী টাকার সন্ধান দিতে আজমগীর গুলি করে মেরে ফেলার ভয় দেখায় এবং তাদের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে জমি বিক্রির টাকা ব্যাংকে আছে বলে জানায়। খানিক পরে তারা আজমগীর ও নূর-মোহাম্মদসহ আরো কয়েকজন মিলে জোরপূর্বক আমাকে চেতনা নাশক ইনজেকশন পুশ করে আমাকে ৫ দিন তাদের টর্চারসেলে আটকে রাখে।
নজরুল ইসলাম আরও জানান, ২০১৮ সালের ১৮ জুলাই রাত ৮টার দিকে পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার জিয়া উদ্দিনকে (আজিজ কলনিস্থ তাদের টর্চারসেলে) নিয়ে আসে, আমার জ্ঞান আসলে আমি মেডিক্যাল আফিসার ডাঃ জিয়া সহ সকল অপহরণ কারিকে দেখতে পাই। তখন আমার শরীরে একটি স্যালাইন পুশ করা ছিল। এর পরের দিন তাদের পূর্ব পরিকল্পনা মতে সাব রেজিষ্ট্রার ইমরান হাবীব, পেকুয়া উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার মোক্তার আহম্মদ, দলিল লেখক কুরবান আলী ওই বাসায় আসে। তাদের তৈরী একটি দলিলে জোরপূর্বক স্বাক্ষর আদায় করে নেয়। পরে জানতে পারি তারা একটি জাল দলিল তৈরী করে আমার ৪০ শতক জায়গা লিপিবদ্ধ করে।
এরপরে ১৯ জুলাই আমার ঘরে গিয়ে আলমিরা ভেঙ্গে চেকবই নেয় তারা। তিনটি চেকে পেকুয়া শাখা, ফাস্ট সিকিউরিটি ব্যাংক যার নং-৬০৪১৮৩১, ৬০৪১৮৩২ ও ৬০৪১৮৩৩ এ জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেয়। প্রায় অবচেতন অবস্থায় আমাকেও ব্যাংকে নিয়ে যায়। ব্যাংক থেকে তিনটি চেকের বিপরীতে ৮,০০,০০০/- (আট লক্ষ) টাকা উত্তোলন করে নেয়। ক্যাশে থাকা জিনু নামের অফিসারের কাছ থেকে ক্যাডার আজমগীর ওরপে আজিম্যা টাকা গুলো গ্রহণ করে। যার প্রমাণ ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজে পাওয়া যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, ২১ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী জাহাঙ্গীর চেয়ারম্যানের ৪ সহোদর বাহিনীর কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে পেকুয়াবাসী। ২০১৭ সালের ১৩ আগষ্ট র্যাব-৭ কক্সবাজার ক্যাম্পের সদস্যরা ৩টি কাটা বন্দুক, ১০ রাউন্ড গুলি, বিপুল পরিমাণ ইয়াবা এবং ইয়াবা বিক্রির ১৭ লক্ষ টাকাসহ জাহাঙ্গীর ও তার তিন সহোদর আলমগীর, কাইয়ুম ও আজমগীরকে আটক করে। এ মামলায় তাদের একুশ বছরের সাজা হয়।
বিএনএ/ওজি