বিএনএ ডেস্ক : শিশু থেকে শুরু করে বয়োজ্যেষ্ঠ, তথ্যপ্রযুক্তি যেন প্রত্যেকের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। চাইলেই এই অংশকে জীবন থেকে বাদ দেওয়া যাবে না, বেরিয়ে আসা যাবে না প্রযুক্তির এই বেড়াজাল থেকে। শিক্ষা, চাকরি চিকিৎসাসহ জীবনের প্রতিটি জরুরি ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির এই ব্যবহার জীবনকে যেমন করেছে সহজ, পৃথিবীকে যেমন এনে দিয়েছে হাতের মুঠোয়, তেমনি এর কুফলগুলো যেন চোখের সামনে দৃশ্যমান।
পড়ালেখা করার পর তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে টাকা জোগাড়ের খোঁজেই নেমেছিলেন বিশ্বখ্যাত ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি বা এমআইটি থেকে পড়াশোনা শেষ করা দুই ভাই। পড়াশোনা লব্ধ নিজেদের জ্ঞান কাজে লাগিয়ে হ্যাকিং করে মাত্র ১২ সেকেন্ডে হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় ৩০০ কোটি টাকা।
এমনই অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। অভিযুক্ত দুই ভাইয়ের মধ্যে একজন হলেন ২৪ বছর বয়সী আন্তন পেরেইর-বুয়েনো এবং অন্যজন ২৮ বছর বয়সী জেমস পেরেইর-বুয়েনো। ক্রিপটো মুদ্রায় বড় ধরনের চুরির অভিযোগে ইতোমধ্যে দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের চুরির এই ঘটনাটিকে একটি জলজ্যান্ত উপন্যাস হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কৌঁসুলিরা।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া ওই ভাইদের বিরুদ্ধে অর্থ জালিয়াতির মাধ্যমে ২ কোটি ৫০ লাখ ডলারের সমপরিমাণ ক্রিপটো মুদ্রা চুরির অভিযোগ আনা হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৩০০ কোটি টাকার কাছাকাছি।
কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, এমআইটিতে তারা যে বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন, সেই পড়াশোনাকে কাজে লাগিয়েই ২০২৩ সালের এপ্রিলে ৩০০ কোটি টাকা চুরি করেছিলেন আন্তন ও জেমস। কাজটি করার সময় দুই ভাই একটি সফটওয়্যার কোডের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে ক্লোজ হয়ে যাওয়া একটি লেনদেনে প্রবেশ করে ক্রিপটো মুদ্রার গতিবিধি পরিবর্তন করে। এরপর মাত্র ১২ সেকেন্ডের মধ্যেই ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে লোপাট করেন ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার।
বর্তমানে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে অর্থ জালিয়াতি এবং পাচারের মতো ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে। দুই ভাইয়ের মধ্যে আন্তনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বোস্টন থেকে, আর জেমসকে গ্রেপ্তার করা হয় নিউইয়র্কে। গ্রেপ্তারের ঘটনায় তাদের আইনজীবীদের কাছে মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করা হলে প্রাথমিকভাবে তারা কোনো সাড়া দেননি।
কৌঁসুলিরা দাবি করেছেন, চুরি করার পর আন্তন ও জেমস তহবিল ফেরত দেওয়ার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। কিন্তু এর পরিবর্তে তারা তাদের চুরি করা ক্রিপটো মুদ্রা লুকানোর পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। যা তাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ হিসেবে কাজ করবে।
শামীমা চৌধুরী শাম্মী/হাসনা