বিএনএ, ঢাকা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের কৃষিকে আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। বর্গাচাষীরা যাতে বিনা জামানতে ঋণ পায় আমরা কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে তাদের বিনা জামানতে ঋণের ব্যবস্থা করেছি। আওয়ামী লীগ যখন সরকারে এসেছে, তখন থেকে কৃষকদের আর কোনো কষ্ট নেই, কারণ আমরা তাদের প্রতি যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি। সারের দাম বিএনপি সরকারের আমলে ৯০ টাকা ছিল, আজ ১২ টাকায় আমরা নামিয়ে এনেছি।
সোমবার (১৯ এপ্রিল) কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দেয়া ভার্চুয়াল বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এ সময় কৃষক-কৃষাণীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে খাদ্য উৎপাদন করেন। সেই খাদ্য খেয়েই আমরা বেঁচে থাকি। কাজেই তাদের প্রতি আমাদের সব সময় সমর্থন রয়েছে এবং তাদের সহযোগিতা করা- এটা আমাদের কর্তব্য মনে করি।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর যখন অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা ক্ষমতা দখল করল এবং এদেশের কৃষকদের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে শুরু করল এবং যাদের গুলিতে সার চাইতে গিয়ে ১৮ জন কৃষককে জীবন দিতে হলো- এ ধরনের ঘটনাও বাংলাদেশে ঘটেছে।
সরকারপ্রধান বলেন, আমরা কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করে দিচ্ছি এবং সেখানে আমরা ৭০ শতাংশের ওপর ভর্তুকি দিচ্ছি। আমরা কৃষি-যান্ত্রিকীকরণ করে যাচ্ছি, যাতে আমাদের কৃষকরা আরও অধিক পরিমাণ খাদ্য উৎপাদন করতে পারে। আমরা উন্নতমানের বীজ সরবরাহসহ প্রতিটি কৃষি-উপকরণ কৃষকদের হাতে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি।
তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে যে সমস্ত কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাদের আর্থিক সহায়তা দেয়ার ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি এবং আমরা সেই সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। এবারেও যেমন ঘুর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক তারাও সে ধরনের সহযোগিতা পাবেন-তার জন্য একটা থোক বরাদ্দ আমরা রেখে দিচ্ছি। আমাদের দেশে উৎপাদন যাতে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ হতে পারে- তার জন্য যথাযথ মাটি পরীক্ষা করা থেকে শুরু করে সর্ব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি গবেষণার ওপর। ১৯৯৬ সালে যখন সরকার গঠন করি, তখন থেকেই কৃষি গবেষণায় আমরা গুরুত্ব দেই। আজকে গবেষণার ফলে আরও নতুন নতুন ধরনের ফসল উৎপাদন- তরি-তরকারি, ফল-মূল এবং দানাদার খাদ্যশস্য থেকে শুরু করে সব ধরনের পণ্য যেন উৎপাদন হতে পারে তার জন্য ব্যাপক হারে গবেষণা হচ্ছে এবং উন্নতমানের বীজ আমরা সরবরাহ করছি। যার ফলে আজকে কৃষক খুব অল্প কষ্টে অধিক পরিমাণে খাদ্য উৎপাদন করতে পারছেন- ধান উৎপাদন করতে পারছেন, গম করছেন, ভুট্টা করছেন এবং সব ধরনের ফসল উৎপাদন করার সুযোগ পাচ্ছেন এবং তা বাজারজাত করার ব্যবস্থাও আমরা করে দিচ্ছি।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের সময় যখন ধানকাটা নিয়ে সমস্যা হলো- আমি যখন আমার দলের নেতাকর্মী বিশেষ করে ছাত্রলীগকে আহ্বান করলাম, আমার ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, কৃষকলীগ থেকে শুরু করে আওয়ামী সকলে মাঠে নেমে পড়লেন। কৃষকের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ধান কেটে ঘরে তুলে দিলেন। আর যান্ত্রিকীকরণের জন্য হারভেস্টার থেকে শুরু করে সব ধরনের যন্ত্র আমরা ধীরে ধীরে কৃষকের হাতে পৌঁছে দেবো।
বিএনএ/ওজি