বিএনএ, ঝিনাইদহ: সামাজিক, রাজনৈতিক ও ভোটের মাঠ দখল নিয়ে আওয়ামীলীগ সমর্থিত দুই ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থীর মারামারিতে অস্থির হয়ে উঠেছে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার সারুটিয়া ইউনিয়ন। হামলা পাল্টা হামলায় ইউনিয়ন বাসি এখন মহাআতংকে দিন কাটাচ্ছে। হামলা করেই ক্ষান্ত হচ্ছে না, বরং ঘরবাড়ি লুট, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটছে। দুই প্রার্থীর এই হামলা পাল্টা হামলা ঠেকাতে পুলিশ হিমশিম খাচ্ছে। ইতিমধ্যে ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে ৫০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে উপজেলার ৬নং সারুটিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মামুন ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক বিদ্রোহী প্রার্থী জুলফিকার কায়সার টিপুর সমর্থকদের মধ্যে কাতলাগাড়ী বাজার এলাকায় দ্বিতীয় বারের মতো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। টিপুর সমর্থকরা শাহবাড়িয়া গ্রাম থেকে মৃত ব্যক্তির জানাজা শেষে মোটরসাইকেল যোগে কাতলাগাড়ী বাজার এলাকায় পৌঁছালে হামলার শিকার হন তারা। এ সময় ৭টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ, ২০টি বাড়িতে ভাংচুর লুটপাটের ঘটনা ঘটে। হামলায় আহত হন ১৫ জন।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিশ শনিবার সকালে সারুটিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালিয়ে ৫০ ব্যক্তিকে আটক করে। সংঘর্ষের পর আটক এড়াতে ইউনিয়নটির বিভিন্ন গ্রাম পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে।
বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী টিপুর অভিযোগ, আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহমুদুল হাসান মামুনের কর্মী সমর্থকরা প্রথমে তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তারা তার ৭ সমর্থকের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় ও ১৫ ব্যক্তিকে মারপিট করে। মুহূর্তের মধ্যে ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে টিপু সমর্থকরা একই ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহমুদুল হাসান মামুন সমর্থকদের বাড়িতে হামলা ভাংচুর ও লুটপাট করে। এ সময় কৃষ্ণনগর গ্রামের গিয়াস উদ্দিন, ফরিদ শেখ, রবিউল ইসলাম, লিটন শেখ, মিন্টু শেখ, খোকন শেখ, নজির শেখ, মিন্টু শেখ, আলমগীর হোসেন, শান্ত শেখ, বিধবা রাবেয়াসহ ২০টা বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
ক্ষতিগ্রস্থ রাবেয়া খাতুন অভিযোগ করেন, তারা মা মেয়ে দুজনই বিধবা। একমাত্র অবলম্বন ছিল একটি সেলাই মেশিন। সেটিও নিয়ে গেছে।
আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহমুদুল হাসান অভিযোগ করেন, বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী টিপুর সমর্থকরা পরিকল্পিতভাবে নিজেরা নিজেদের মোটরসাইকেলে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে আমার সমর্থকদের দোষ দিচ্ছে। সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিত্তিনগর, কৃষ্ণনগর, ভুলন্দিয়া ও বড় মৌকুড়ি গ্রামে বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে।
শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: রফিকুল ইসলাম বলেন, ৬নং সারুটিয়া ইউনিয়নে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় এলাকা থেকে ৫০ ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকাটি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে বলে তিনি জানান।
বিএনএ/ আতিক ,ওজি