বিএনএ,কুবি: বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিত করতে সরকারি নির্দেশনায় নানা পদক্ষেপ নেয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। তারমধ্যে প্রশাসনিক, একাডেমিক ভবন এবং হলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বন্ধ রাখা এবং লাইট-ফ্যান ব্যবহারে সীমিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনা মানছে না প্রশাসনিক ভবনেরই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
প্রশাসনিক ভবন ঘুরে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকীর ক্ষণগণনা উপলক্ষে বসানো কাউন্ট ডাউন ঘড়িটি অযত্নে অবহেলায় পড়ে আছে নিচ তলায়। দিনরাত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া থাকে ঘড়িটিতে। এছাড়া শীততাপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) বন্ধ রাখার নির্দেশনা থাকলেও কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী ও জনতা ব্যাংকে চলছে প্রায় ১৫টি এসি। কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ও ব্যাংকে এসির পাশাপাশি ফ্যান, লাইট জ্বলছে প্রায় সবগুলো। এছাড়া কর্মকর্তারা কক্ষে উপস্থিত না থাকলেও চলছে ফ্যান, লাইট। গত ২ সপ্তাহ প্রশাসনিক ভবনে ঘুরে দেখা যায়, উপাচার্য দপ্তরের অফিস কক্ষে কর্মকর্তা না থাকলে লাইট, ফ্যান বন্ধ করা হয়নি। পাশাপাশি প্রক্টর অফিস, অর্থ ও হিসাব দপ্তর, আইকিউএসির সেকশন অফিসারের কক্ষ, ব্যাংকসহ একাধিক কক্ষে মানা হচ্ছে না নির্দেশনা। দিনে পর্যাপ্ত আলো থাকা সত্ত্বেও জ্বলছে লাইট। অনেক কর্মকর্তা অফিস না করলেও লাইট, ফ্যান বন্ধ নেই।
এদিকে কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বিভিন্ন বিভাগের ক্লাস রুম ও অফিস কক্ষেও মানা হচ্ছেনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশনা। এছাড়া আবাসিক হলে প্রভোস্ট রুমগুলো লাগানো হয়েছি শীতাতপ নিয়ন্ত্রত যন্ত্র।
সরকারি নির্দেশনা মানতে বিশ্ববিদ্যালয় গত ২৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭২তম জরুরি অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল সভায় ৮টি পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর মধ্যে অন্যতম হল প্রয়োজন ব্যতিত বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা এবং এসি বন্ধ রাখা। কিন্তু স্বয়ং প্রশাসনিক ভবনেই মানা হয়না প্রশাসনের নির্দেশনা।
এছাড়া কৃচ্ছ সাধনের অংশ হিসেবে বিদ্যুৎ ও জ্বলানী সাশ্রয় করতে সপ্তাহে একদিন অনলাইনে ক্লাস ও পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রশাসনের সিদ্ধান্তের পরও এরূপ বিদ্যুৎ অপচয় গৃহীত পদক্ষেপকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
কয়েকজন কর্মকর্তার কাছে নির্দেশনা না মানার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, তীব্র গরমের কারণে ফ্যান, এসি চালাতে হচ্ছে। নির্দেশনা মানার ব্যাপারে তারা গুরুত্ব দিচ্ছেন না।
এদিকে ব্যাংকে একাধিক এসি চালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে জনতা ব্যাংকের ম্যানেজার আবদুল গফফার বলেন, আমরা তো বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মে নয়, আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মে চলি। তবে আমরা গ্রাহকের সুবিধার কথা চিন্তা করে আধা ঘণ্টা অন রাখলে এসি আবার ঘন্টা দেড়েক অফ রাখি। তবে আমরা স্বাভাবিক ২৬ মাত্রার মধ্যে এসি চালাই।
অপ্রয়োজনেও কেন এসি চালানো হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, ব্যাংক তো আমাদের আন্ডারে না, তবে আমি কথা বলে দেখব। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই-এক জায়গায় এসি চলে, দুই ঘন্টা চলে এক ঘন্টা চলে তবে রুম ঠান্ডা হলে অফ করে দিই। তুমি মন্ত্রী সচিবের অফিসে গেলেও দেখবা এসি চলে। এই যে আমার রুমে চালু আছে এসি একটু পরে অফ করে দেব।
বিএনএ/ হাবিবুর রহমান, কুবি