বিএনএ ডেস্ক: সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। ফলে জেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বুধবার (১৮ আগস্ট) সকালে সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। জেলার কাজিপুর মেঘাইঘাট পয়েন্টেও অস্বাভাবিক হারে পানি বাড়ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে এসব এলাকার অন্তত ২৫ হাজার মানুষ। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে আমন ধানের বীজতলা, শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ফসল। এতে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টের দায়িত্বে থাকা গেজ মিটার (পানি পরিমাপক) আব্দুল লতিফ জানান, বুধবার (১৮ আগস্ট) সকাল ৬টা পর্যন্ত যমুনা নদীর পানি শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে ২৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে, টাঙ্গাইলে যমুনা ধলেশ্বরীসহ সব নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে চরাঞ্চালের নিচু এলাকায় পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। নদী তীরবর্তী টাঙ্গাইল সদর, ভূঞাপুর, কালিহাতী, নাগরপুরের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে।আর ভাঙন কবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১০৬ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধলেশ্বরীর পানি বিপদসীমার ৭৪ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে, পুংলী নদীর পানি বিপদসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে এবং বংশাই নদীর পানি বিপদসীমার ১০২ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.সিরাজুল ইসলাম জানান, উজানের ঢলের কারণে আরও কয়েকদিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। তবে, বড় ধরনের কোন বন্যার আশঙ্কা নেই।
অন্যদিকে, পদ্মা নদীতে অস্বাভাবিকহারে পানি বৃদ্ধির ফলে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার চরাঞ্চলের বিপুলসংখ্যক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ১৭টি গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে। এছাড়াও পাশের চিলমারী ইউনিয়নের বেশ কিছু বাড়িতে পানি ঢুকেছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানিয়েছে, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বুধবার সকাল ৬টায় পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পদ্মা নদীতে গড়ে প্রতিদিন প্রায় ১০ সেন্টিমিটার করে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামি কয়েক দিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে পাউবো সূত্র জানিয়েছে।
এছাড়া, পদ্মায় তীব্র স্রোতের কারণে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। শিমুলিয়া ও বাংলাবাজার নৌরুটে ফেরি চলাচল সীমিত থাকায় বিকল্প রুট পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়ায় যানবাহনের চাপ বেড়েছে। ফেরি পারাপারে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি সময় লাগছে বলে জানা গেছে।
বিএনএনিউজ/আরকেসি