মেডিকেল প্রতিবেদক : রাজধানীর ঢাকা সেন্ট্রাল হাসপাতালে এবার চিকিৎসকের অবহেলায় হাবিবা হীরা নামে একজন শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ তুলেছে তার পরিবার। পরিবারের অভিযোগ, ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুকে অতিমাত্রায় এন্টেবায়োটিক প্রয়োগের ফলে তার সন্তানের লিভার ড্যামেজ হয়ে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় সেন্ট্রাল হাসপাতাল ও সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের শাস্তি দাবি করেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) রাজধানী বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন শিশুর মা এডভোকেট সুফিয়া পারভীন।
তিনি বলেন, জানি আমি মেয়েকে আর ফিরে পাবো না। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এ ধরনের অবহেলার জন্য আর কারো যেন মৃত্যু না হয় তার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে এডভোকেট সুফিয়া পারভীন অভিযোগ করেন, আমার একমাত্র সন্তান হাবিবা হীরা চৌধুরীর বয়স ৬ বছর ৫ মাস। সে ওয়াইডাব্লিউসি এ স্কুলের ক্লাস ওয়ানের ছাত্রী। পাশাপাশি ব্রিটিশ কাউন্সিলের কোর্সেও ছাত্রী ছিলেন। শরীরে জ্বর নিয়ে গত ৭ জুলাই ঢাকা সেন্ট্রাল হসপিটালে ৪২২ নম্বর কেবিনে প্রফেসর এ এফ এম সেলিমের তত্ত্বাবধানে ভর্তি করা হয়। এই দিন তার শরীরে ডেঙ্গু পজিটিভ আসে। প্রথমে স্যালাইনের সাথে জ্বরের ওষুধ দিলেও রাতেই তাকে এন্টিবায়োটিক দেওয়া হয় “রোফেসিন” নামক উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হয়। এভাবে কয়েক ধরনের এন্টিবায়োটিক প্রয়োগে আমার মেয়ের লিভার ড্যামেজ হতে থাকে। তার পায়খানার সাথে রক্ত আসতে শুরু করে। কিন্তু হাসপাতালে বিষয়টি জানানোর জন্য নার্স ছাড়া কাউকে পাওয়া যায় না। চারটি ফ্লোরের জন্য একজন ডিউটি ডাক্তার থাকেন। বসেন সপ্তম তলায়। তার কাছে গেলে বেশিরভাগ সময় পাওয়া যায় না।
এডভোকেট সুফিয়া পারভীন জানান, গত ১০ জুলাই রাতে ডাক্তার আমার মেয়েকে দেখতে এসে তার ব্লাড প্রেসার ও পালস পাচ্ছিলো না। এরপর আমাদের বলেন, রোগীর অবস্থা ভালো না। তাকে পিআইসিইউ সাপোর্ট দিতে হবে। সেই ব্যবস্থা সেন্ট্রাল হাসপাতালে নেই। তাদের পরামর্শে রাত ১১ টার দিকে তাকে মহাখালী ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বেশ কিছু পরীক্ষার মধ্যে ফেরিটিন নামক একটি পরীক্ষা দেয়া হয়। যেখানে একজন শিশুর ফেরিটিনের মাত্রা ৭ থেকে ১৪০ ফেরিটিন থাকার কথা সেখানে হাবিবার ফেরিটিন ধরা পড়ে ২১ হাজার ৪৮৩। এই রিপোর্ট দেখেই সেখানকার চিকিৎসকরা বিড়বিড় করে বলে বসেন ” সব তো শেষ করে নিয়ে আসছেন। রোগীর শরীরে ফাংশন পুরো শেষ হয়ে গেছে। তারপর পিআইসিইউ নিয়ে চেষ্টা শুরু করেন তারা। কিন্তু আমার বুকের ধন ১২ তারিখ মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে।
বিএনএনিউজ২৪,জিএন