বিএনএ, ঢাকা: ঢামেক হাসপাতালে ফেলে যাওয়া নারীর মরদেহের পরিচয় মিলেছে।সোমবার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টার দিকে রোকসানা (৩৮) নামের ওই নারীকে স্বজনরা সনাক্ত করেন।
স্বজনদের অভিযোগ, মনির নামে এক ব্যক্তি ও তার পরিবারের লোকজন রোকসানাকে হত্যা করেছে।
হাসপাতালে তার চাচাতো ভাই মো. শহিদুল্লাহ জানান, রোকসানার বাবা মৃত মনু মিয়া ও মা সাফিয়া বেগম। তারা সোনারগাঁওয়ের বাইশটেক এলাকায় থাকেন। শুভ (১৬) নামে একটি ছেলে সন্তান রয়েছে রোকসানার। তবে স্বামী শফি মিয়ার সঙ্গে ৩ বছর আগে তার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর থেকে বাবার বাড়িতে থাকতেন তিনি। বাড়িতেই জামদানি শাড়ির কাজ করতেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, মনির নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে রোকসানার ৫ বছর ধরে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। বিভিন্ন সময় রোকসানা তাকে টাকা পয়সা দিয়ে সহযোগিতা করত। মূলত মনিরের কারণেই স্বামীকে তালাক দিয়েছেন তিনি। এরপর মনিরের কাছে তিনি বিয়ে করার দাবি জানান। তবে মনির তাকে বিয়ে করতে রাজি হচ্ছিল না।
সোমবার (১৮ জুলাই) সকালে রোকসানা একই গ্রামে মনিরের ওই বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে বিয়ের দাবি তোলেন। তখন মনির, মনিরের ছেলে ও ভাই সহ ৫-৬ জন মিলে তাকে রড ও লোহার পাইপ দিয়ে মারধর করে। খবর পেয়ে ওই বাড়িতে যান স্বজনরা। সেখানে কোনো সমাধান না পেয়ে সোনারগাঁও থানাধীন তালতলা পুলিশ ফাঁড়িতে যান। সেখানে অভিযোগ করার পর পুলিশ সহ বেলা ২টার দিকে মনিরের বাড়িতে গিয়ে দেখেন, সব ঘর তালাবদ্ধ। বাড়িতে কোনো লোকজন নেই। রোকসানাকেও সেখানে আর পাওয়া যায়নি।এরপর তারা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালেও তাকে খোঁজেন। এক পর্যায়ে তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে এসে রোকসানার মরদেহ দেখতে পান।
পরিবারের অভিযোগ, মনির ও তার পরিবারের লোকজন পিটিয়ে মেরে ফেলেছে রোকসানাকে। আর তার মরদেহ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে গেছে।
এর আগে, হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের কর্মচারীরা জানান, বেলা আড়াইটার দিকে দুইজন পুরুষ ও দুইজন নারী অচেতন অবস্থায় ওই নারীকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এরপর টিকিট কেটে মেডিকেল অফিসারকে দেখান। সঙ্গে সঙ্গে তার ইসিজি পরীক্ষার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এর পরপরই সবার অগোচরে হাসপাতাল থেকে সটকে যান তারা।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, ওই নারীর থুতনি, পা সহ শরীরে বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের দাগ রয়েছে। তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা লোকজন চিকিৎসককে তখন জানিয়েছিলেন, কীটনাশক পান করেছেন তিনি। তবে চিকিৎসক যখন তাকে মৃত ঘোষণা করেন এরপরই সবাই পালিয়ে যায়।মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
বিএনএ/ আজিজুল, ওজি