বিএনএ, ঢাকা : ঢাকার ( কেরানীগঞ্জ) কেন্দ্রীয় কারাগারে ৩২ বছর বন্দি থাকা জল্লাদ শাহজাহান ভূঁইয়া (৭৩) অবশেষে মুক্তি পাচ্ছেন। রোববার (১৮ জুন) মুক্তি পাচ্ছেন তিনি। শনিবার রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ।
শাহজাহান ভূঁইয়ার বাড়ি নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ইছামতী গ্রামে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অবিবাহিত।
কারা সূত্রে জানা গেছে, সাজার মেয়াদ কমানোর বাসনায় কয়েদি থেকে জল্লাদ বনেছিলেন শাহজাহান। একের পর এক অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছেন চার দেওয়ালের বন্দিজীবন থেকে মুক্তি পেতে। অবশেষে সেই বাসনা সত্যি হতে যাচ্ছে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ জানান, জল্লাদ শাহজাহান ২০০১ সাল থেকে এ পর্যন্ত ২৬ জনের ফাঁসিতে ঝুলিয়েছেন। এর মধ্যে ছয়জন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, চারজন যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গি নেতা বাংলাভাইসহ দুজন জেএমবি সদস্য এবং আরও ১৪ জন অন্যান্য আলোচিত মামলার আসামির ফাঁসিতে ঝুলিয়েছেন। তিনি জানান, শাহজাহানের পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকার কারণে তার আবেদনের প্রেক্ষিতে জরিমানার ১০ হাজার টাকা কারা কর্তৃপক্ষ পরিশোধ করেছে।
জানা যায়, ১৯৭৯ সালে গ্রেফতার হওয়ার পর ৩৬টি মামলায় শাহজাহানের ১৪৩ বছরের সাজা হয়। পরে ৮৭ বছরের সাজা মাফ করে তাকে ৫৬ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ফাঁসি কার্যকর ও সশ্রম কারাদণ্ডের সুবিধার কারণে সেই সাজা ৪৩ বছরে এসে নামে। দুটি মামলায় পাঁচ হাজার টাকা করে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাস করে অতিরিক্ত এক বছর জেল খেটে ৩২ বছর পর ১৮ জুন থেকে মুক্ত আকাশে শ্বাস ফেলার সুযোগ পাবেন জল্লাদ শাহজাহান।১৯৮৯ সালে সহযোগী জল্লাদ হিসেবে গফরগাঁওয়ের নূরুল ইসলামকে ফাঁসি দিয়ে শাহজাহান তার জল্লাদ জীবনের সূচনা করেন। এরপর কারাগারে কারও মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সময় আসলেই ডাক পড়তো তার। টানা আট বছর এই কাজ করার পর ১৯৯৭ সালে কারা কর্তৃপক্ষ তাকে প্রধান জল্লাদের স্বীকৃতি দেন।
বিএনএনিউজ/এইচ.এম।