বিএনএ ডেস্ক: সহিংস কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর অঞ্চলের চার ইসরায়েলি বসতকারীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কানাডার সরকার। নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া এই চার বসতকারী হলেন ডেভিড চাই চাসদাই, ইয়িনন লেভি, জাভি বার ইউসেফ এবং মোশে শারভিত।
শুক্রবার(১৭মে) এক বিবৃতিতে কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ নিষেধাজ্ঞার কথা জানায়।
মন্ত্রণালয় বিবৃতি জারির পর কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানিয়ে জোলি এক বার্তায় বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমি পশ্চিম তীর সফরে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ইসরায়েলি বসতকারীদের সহিংসতার ব্যাপারে আমরা স্পষ্টভাবে জানতে পারি। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছেন, নানা অত্যাচার ও সহিংসতার মাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিজ বাড়ি ও কৃষিভূমি থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা করছেন বসতকারীরা। এই নিষেধাজ্ঞা জারির মাধ্যমে আমরা ইসরায়েলকে স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই যে কানাডা কখনও ইসরায়েলি বসতকারীদের সহিংসতা সমর্থন করবে না এবং যেসব বসতকারী এ ধরনের কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট, তাদেরকে ফলাফল ভুগতে হবে।
কানাডায় প্রচলিত ‘স্পেশাল ইকোনোমিক মেজার্স অ্যাক্ট’ নামের একটি আইনের আওতায় এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রত্যাহার হওয়ার আগ পর্যন্ত এই চারজন কানাডায় প্রবেশ বা সম্পত্তি ক্রয় করতে পারবেন না।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে বিস্তৃত, যথাযথ এবং টেকসই শান্তি স্থাপনে সেখানকার অংশীদারদের সঙ্গে সমন্বয়ের ভিত্তিতে কাজ করতে কানাডা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই শান্তি প্রক্রিয়ার প্রাথমিক ধাপ হলো দ্বিরাষ্ট্র সমাধান এবং পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে অবৈধ বসততি স্থাপান এই সমাধানের পথে বড় একটি বাধা। কানাডা জাতিসংঘের চতুর্থ জেনেভা কনভেনশনের ঘোষণাকে স্বীকৃতি দানকারী দেশ। সেই ঘোষণায় বলা হয়েছে, দখলকৃত এলাকার জনগণের প্রতি কোনো প্রকার অমানবিক ব্যবহার করা যাবে না।
প্রসঙ্গত, ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের সীমানা নির্ধারণ করা হয়। সে সময় ইসরায়েল প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে কোনো দখল কার্যক্রম চালানো হবে না। কিন্তু পরে আর সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি ইসরায়েল। প্রায় প্রতি বছরই একটু একটু করে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গ্রাস করছে বিশ্বের এই একমাত্র ইহুদি রাষ্ট্রের ক্ষমতাবানরা।
উলেখ্য,গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিফ) ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ বাঁধার পর থেকে পশ্চিম তীরের বিভিন্ন শহরেও ছড়িয়ে পড়তে থাকে সহিংসতা। জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, গত ৭ মাসে মোট ৮০০টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে পশ্চিম তীরের বিভিন্ন শহরে। এসব সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন শতাধিক মানুষ।
বিএনএ নিউজ/রেহানা/এইচ.এম।