বিএনএ, ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়লেও মূল্যস্ফীতি আমরা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছি। তাতে আমরা সফলও হয়েছি। গ্যাস যে মূল্যে কেনা হবে সেই মূল্য গ্রাহককে দিতে হবে, সে ক্ষেত্রে দাম বাড়তে পারে।
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় সংসদ নেতা এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্যাস উৎপাদন ও বিতরণ; বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণে যদি ৪০,৫০ ও ৬০ হাজার কোটি টাকা আমাকে ভর্তুকি দিতে হয় তাহলে সেটা কী করে দেব? এর ফলে দাম বাড়লে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করার যে চেষ্টা সেটা করে কিছুটা সফলতা দেখাতে পেরেছি। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে।
সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুতের দাম যদি বৃদ্ধি পায় পাশাপাশি মানুষ যদি একটু সাশ্রয়ী হয়. . । আমরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনে বিদ্যুতের ব্যবহার ৫০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছি। এভাবে যদি সবাই উদ্যোগ নেয়-তাহলে বিদ্যুৎ ব্যবহার সাশ্রয়ী হতে পারে।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ী আছেন। এখানেও (সংসদে) আছে তাদের আমি তো স্পষ্ট বলেছি। গ্যাস আমি দিতে পারব-কিন্তু যে মূল্যে গ্যাস আমরা বাইরে থেকে কিনে নিয়ে আসলাম সেই মূল্য যদি আপনারা দেন আমরা গ্যাস দিতে পারব। আমরা বাল্কের যেটুকু বাড়ানোর বাড়িয়েছি। তারা যদি নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ চায় তাহলে যে মূল্যে কিনে আনব সেই মূল্য তাদের দিতে হবে। সেই মূল্যই তাদের দিতে হবে। এখানে ভর্তুকি দেওয়ার কোন যৌক্তিকতা নেই।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এটা ভুলে যাবেন না ভর্তুকির টাকা তো জনগণেরই টাকা। যত মূল্য কম থাকে আমাদের বিত্তশালীরা লাভবান হন। যারা সাধারণ মানুষ তারা ঠিকমতো বিল দেয়। বিত্তশালীরা আরাম আয়েশ করবে আর স্বল্প মূল্যে পাবে তা কী করে হয়? সেদিকে লক্ষ রেখেই আমরা আমাদের পরিকল্পনা নিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিম্ন আয়ের যারা, তাদের জন্য মাত্র ১৫ টাকায় ওএমএসের চাল আমরা দিচ্ছি। সেই সঙ্গে তেল, ডাল ও চিনিও তারা কম দামে কিনছে। আর হত দরিদ্র যারা কিছুই কিনতে পারে না, তাদেরও কিন্তু আমরা বিনা পয়সায় খাদ্য সরবরাহ করছি। যারা স্বল্প আয়ের, তারা যাতে কষ্ট না পায়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা এ ব্যবস্থা করছি।
সর্দি জ্বরে আক্রান্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে এম আব্দুল লতিফের মৌখিক প্রশ্নের দীর্ঘ ১৭ পৃষ্ঠার জবাব দেন। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে উত্তর দিতে গিয়ে তিনি কিছুটা অসুস্থবোধ করেন। একপর্যায়ে তিনি আমার অস্থির লাগছে উল্লেখ করে বসে উত্তর দেয়ার জন্য স্পিকারের কাছে অনুরোধ করেন। তবে তিনি বসে তার বক্তব্যের বাকি অংশ পঠিত বলে গণ্য করার অনুরোধ করেন।
পরে আব্দুল লতিফ একটি সম্পূরক প্রশ্ন করলে প্রধানমন্ত্রী দাঁড়িয়ে তার সংক্ষিপ্ত জবাব দেন। এ সময় স্পিকারর সংসদ নেতাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি বসেও বলতে পারেন। জবাবে প্রধানমন্ত্রী, এটা বলে শেষ করে দেব। ওই সময় তিনি ৩০ সেকেন্ডের মত কথা বলেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর শেষ হয়।
প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তরের পর জরুরি জনগুরুত্বপূর্ণ মনোযোগ আকর্ষণের নোটিশের কার্যক্রম স্থগিত করে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনার আগে জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নুকে পয়েন্ট অব অর্ডারে বক্তব্য দেওয়ার জন্য ফ্লোর দেন।
চুন্নু পয়েন্ট অব অর্ডারে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বক্তব্য দিয়ে তার জবাব চান। পরে প্রধানমন্ত্রী আবারও ফ্লোর নিয়ে বলেন, একটু সর্দিকাশি হয়েছে বলে বেশি বলতে চাচ্ছিলাম না। আর ছাড়তেও চাই না। শুধু প্রশ্নের উত্তর দিতে এসেছিলাম। এই প্রশ্নের উত্তরটা না দিলেই নয়।
বিএনএ/এমএফ