বিএনএ,বিশ্ব ডেস্ক: (১৭নভেম্বর) এ সপ্তাহের প্রথমদিকে মুক্তি পাওয়া মার্কিন সাংবাদিক ড্যানি ফেনস্টার(৩৭) মিয়ানমারে অর্ধ বছর বা ৬মাস কারাগারে বন্দি ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে পরিবারের কাছে পৌঁছে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ইয়াঙ্গুনের ইনসেইন কারাগারে থাকার সময় তাকে শারিরীকভাবে কোন নির্যাতন করা হয় নি।
এর আগে গত শুক্রবার মিয়ানমারের একটি সামরিক আদালত ড্যানি ফেনস্টারকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল। ফেনস্টার অনলাইন ম্যাগাজিন “ফ্রন্টিয়ার মিয়ানমার” নামের মিয়ানমারভিত্তিক একটি সংবাদমাধ্যমের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ছিলেন।
ফ্রন্টিয়ার মিয়ানমারের আগে “মিয়ানমার নাও” নামের আরেকটি গণমাধ্যমের হয়ে কাজ করতেন ড্যানি। গত ১ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে জান্তার সমালোচনা করে আসছে গণমাধ্যমটি।
ড্যানি ফেনস্টারকে ইয়াঙ্গুনের কুখ্যাত ইনসেইন কারাগার থেকে রাজধানী নেপিডোতে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর অংশ হিসেবে জাতিসংঘের সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত বিল রিচার্ডসনের হাতে তুলে দেয়া হয়। যিনি ড্যানি ফেনস্টার এর মুক্তির ব্যাপারে মধ্যস্থতা করেছেন।
ড্যানি ফেনস্টার অভিবাসন আইন লঙ্ঘন, বেআইনি সংঘ ও মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ভিন্নমত উৎসাহিত করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন।তাকে ১১ বছরের সাজা দেয়া হয়।
চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান হয়। এই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) সরকার উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে সামরিক জান্তা। সামরিক অভ্যুত্থানের পর প্রায় ৮০ জন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে ৫০ জন এখনও কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
হাজার হাজার রাজনৈতিক নেতাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সামরিক বাহিনীর সদস্যরা ও তাদের দোসররা দেশটির ১২শতের বেশি রাজনৈতিক কর্মী ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে। ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে।
ছবি: মা,বাবা ও ভাইয়ের সাথে ড্যানি ফেনস্টার
ড্যানি ফেনস্টার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ঔটি এমন কারাগার যেখানে দুনিয়ার কোন খবর ছয় মাসেও পাওয়া যায় নি। কারাগার থেকে আদালতে নেয়া হলেও কারো সাথে কথা বলতে পারতেন না। মিয়ানমারের পুলিশ সদস্যরা হালকা ইংরেজি জানে। সব কিছু বুঝে না। সোমবার সকালে কারাগার থেকে যখন মিয়ানমারের রাজধানীতে তাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তখনও তিনি জানতেন না তাকে মুক্তি দেয়া হবে। যখন তিনি জানতে পারলেন তাকে মুক্তি দেয়া হচ্ছে, তিনি তার ইয়াঙ্গুনের ফ্ল্যাটে যাবার ইচ্ছাপোষন করলেও তাকে সেখানে যেতে দেয়া হয় নি।
বিল রিচার্ডসন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মিয়ানমারের সামরিক সরকার প্রধান, ড্যানি ফেনস্টারকে মুক্তি দিতে কোন রকম ঝামেলা করে নি, কোন শর্তও দেয় নি। তবে তাকে দু দফা মিয়ানমার সফর করতে হয়েছে, দফায় দফায় ওয়ান টু ওয়ান সামরিক নেতাদের সাথে বৈঠক করতে হয়েছে।
ড্যানি ফেনস্টার বলেন, মিয়ানমারের বর্তমান অবস্থা নিয়ে তার লেখালেখি বন্ধ হবে না।
বিএনএ,জিএন