বিএনএ, বরিশাল: পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় জোনায়েত হাওলাদার (১১) নামে এক মাদরাসা ছাত্রকে আটকে রেখে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) এ নির্যাতনের ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকে জানানো হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিজে আহত মাদরাসা ছাত্রকে দেখতে হাসপাতালে যান।
নির্যাতনের শিকার শিশু জোনায়েত হাওলাদার জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলার নদমূলা শিয়ালকাঠী ইউনিয়নের চিংগুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. লাভলু হাওলাদারের ছেলে।
ভাণ্ডারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসিকুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, নির্যাতনের শিকার ওই মাদরাসাছাত্রের বিরুদ্ধে মাত্র ২০০ টাকা চুরির অপবাদে এ নির্যাতন চালানো হয়। গুরুতর আহত জোনায়েত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এর আগে রোববার (১৫ অক্টোবর) ভাণ্ডারিয়া পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন আলহাজ আব্দুল কাদের জমাদ্দার হাফেজিয়া ফোরকানিয়া মাদরাসায় এ ঘটনাটি ঘটে।
নির্যাতিত শিশুটির মা সোনিয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার দিন ওই মাদরাসার দ্বীন ইসলাম নামের এক ছাত্রের দুইশত টাকা হারিয়ে যায়। বিষয়টি সে মাদরাসার শিক্ষকদের অবগত করে। পরে অনুমান নির্ভর করে মাদরাসার মুহতামিম মো. জাকির হোসেন শিশু জোনায়েতকে সন্দেহ করেন। তার বিরুদ্ধে ওই টাকা চুরির অপবাদ এনে তাকে মাদরাসার একটি কক্ষে হাত-পা বেঁধে বেদম মারপিট করে। মারপিটের একপর্যায়ে জোনায়েত গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: এমপিওভুক্ত হলো ৯০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
মারপিটের ঘটনাটি পরিবারের কাউকে না জানাতে হুমকিও দেন শিক্ষক জাকির হোসেন। একপর্যায়ে জোনায়েত সোমবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এক রিকশা চালকের সহায়তায় বাড়িতে পৌঁছে তাকে নির্যাতনের বিষয়টি তার মাকে জানায়।
সোনিয়া বেগম আরও বলেন, মাদরাসার বেতন দিয়ে আমি জোনায়েতকে ১০৫ টাকা হাতে দিয়ে বাড়িতে আসি। সেই টাকা দেখে আমার ছেলেকে চুরির অপবাদ দিয়ে মাদরাসার মুহতামিম অমানুষিক নির্যাতন করেছে। নির্যাতনের পর কাউকে না বলার জন্য হুমকিও দেন তিনি।
আরও পড়ুন: বাঁশখালীতে নিখোঁজের সাতদিন পর শিশুর মরদেহ উদ্ধার
এদিকে, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত মাদরাসার মুহতামিম মো. জাকির হোসেন তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ রেখে পালিয়েছেন।
ভাণ্ডারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসিকুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএনএনিউজ/ সাইয়েদ কাজল/ বিএম