বিএনএ,সাভার :আশুলিয়ায় বাসাবাড়িতে কাজ করতে গিয়ে বাড়ির মালিকের কাছে ধর্ষণ ও মালিকের স্ত্রীর হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন এক গৃহকর্মী।
ভুক্তভোগী ও তার পরিবার অভিযোগ করে বলেন, বাসায় কাজ করার সময় বাড়ির মালিক তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এরপর মালিকের স্ত্রী এসে দেখে ফেলায় তাকে আটকে রেখে অমানুষিক নির্যাতন করে মাথার চুল কেটে দেয়। এমনকি পুলিশের কাছে অভিযোগ করে ঘটনার দুই দিন পেরিয়ে গেলেও কোন আইনি সহায়তা পাননি বলে অভিযোগ তাদের।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে ভুক্তভোগীর শরীরে নীলাফুলা জখমের চিহ্ন ও মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া অবস্থায় দেখা যায়। এর আগে মঙ্গলবার আশুলিয়ার গাজীরচট এলাকার সোনিয়া মার্কেটের মালিকের বাড়িতে কাজ করতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী নারী। অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী লিপি বেগম আশুলিয়ার গাজীরচট সোনিয়া মার্কেট এলাকার বাসিন্দা।
ভুক্তভোগী বলেন, গত পরশুদিন দুপুরে গাজীরচট সোনিয়া মার্কেটের মালিক দেলোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী তাদের বাড়িতে কাজ করার জন্য তাকে ডেকে নিয়ে যায়। বাড়ির ফ্লোর মোছার সময় বাড়ির মালিক দেলোয়ার ছাড়া তখন কেউ ছিলো না। ওই সময় বাড়ি ফাঁকা পেয়ে দেলোযার তাকে জোরপূর্বক মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে। হঠাৎ সেখানে বাড়ির মালিকের স্ত্রী পৌঁছে উল্টো তাকে চড়-থাপ্পর মারতে থাকেন৷ পরে লিপি ও তার দেবরের স্ত্রী তাকে ওড়না দিয়ে বেঁধে ফেলে। দুপুর ১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত আটকে রেখে লাঠি দিয়ে তাকে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে। প্রথমে কাঁচি দিয়ে মাথার চুল কাটে। পরে ব্লেড দিয়ে ন্যাড়া করে দেয়। এরপর বাড়ির মালিকদেরই এক স্বজন তাকে উদ্ধার করে রিকশাযোগে বাড়িতে পাঠায়। এসময় তিনি ২৫০০ টাকা চিকিৎসার জন্য দিলে তাও কেড়ে নেন বাড়ির মালিকের স্ত্রী লিপি। ওই দিন রাতে থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে আটক না করেই চলে আসে। পরদিন গতকাল সকালে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন তিনি।
ভুক্তভোগীর স্বামী বলেন, ‘পরশুদিন আমার বউকে ওরা কাজের কথা বলে ডেকে নিয়ে গেছে। ফ্লোর পরিষ্কার করার সময় বাড়িওয়ালার স্ত্রী বাড়িতে আছিলো না। তখন সুযোগ পেয়ে আমার বউকে বাড়ির মালিক দেলোয়ার জোর কইরা ধর্ষণ করে। পরে মালিকের বউ আইসা দেইখা আমার বউকে বান্দিয়া মারছে।
ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নূর রিফফাত আরা বলেন, ওই নারীর শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। যেগুলো মারধরের। রোগীকে চিকিৎসা দিয়ে তাকে ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
দেলোয়ার হোসেন গৃহকর্মী ওই নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পরশুদিন এক মহিলা কাজ করতে আইছিলো। আমি তখন নিচে ছিলাম। কিন্তু আমার বউ আমাকে খুব সন্দেহ করে। ওই কাজের মহিলাকে অযথাই বাইন্দা মারধর করছে। পরে গতকাল দুপুরে দারোগা ইউনুছ আসছিলো। তখন ওই মহিলাকে চিকিৎসার জন্য ৮হাজার টাকা দিছি। বলছি লাগলে আরও দিব।
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইউনুছ আলী বলেন, ‘পরশু দিন ওই গৃহকর্মী বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেন। আমি কয়েকবার গিয়ে বাড়ির মালিককে বাসায় পাইনি। সে বাসায় ছিলো না।
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ জিয়াউল ইসলাম বলেন, এব্যপারে আমি কিছু জানি না। এরকম ঘটনায় কেউ ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছে কি না তাও জানা নেই। তবে এরকম কিছু ঘটে থাকলে আমি ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
বিএনএ/ইমরান খান,ওজি