24 C
আবহাওয়া
১০:৫৫ অপরাহ্ণ - নভেম্বর ২৩, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » মাত্রাতিরিক্ত শব্দদূষণের শিকার কুবি শিক্ষার্থীরা

মাত্রাতিরিক্ত শব্দদূষণের শিকার কুবি শিক্ষার্থীরা

মাত্রাতিরিক্ত শব্দদূষণের শিকার কুবি শিক্ষার্থীরা

বিএনএ, কুবি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) পার্শ্ববর্তী অনিয়ন্ত্রিত পার্ক, পিকনিক স্পট এবং দর্শনার্থীদের বহন করা বাসে উচ্চশব্দে বাদ্য বাজানোয় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে শিক্ষার্থীরা। ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষার স্বাভাবিক কার্যক্রম।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্বে গড়ে ওঠা ম্যাজিক প্যারাডাইজ পার্ক, ডায়নোসর পার্ক, ব্লু ওয়াটার পার্কে নিয়মিত দর্শনার্থীরা ভীড় করেন। এতে পার্ক কর্তৃপক্ষ বিনোদনের জন্য মাত্রাতিরিক্ত শব্দে গান বাজান। তবে এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিলেও নিয়মিত তদারকির অভাবে ফের অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ সকলে।

করোনা কালীন দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ থাকে। সম্প্রতি সরকারি বিধি মোতাবেক পরীক্ষাগুলো নেয়া শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে এমনকি মধ্য রাত পর্যন্ত উচ্চশব্দে মাইকে গান বাজায় আশেপাশে গড়ে ওঠা এ সমস্ত পার্ক গুলো। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের চরম ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের মো. রাসেল মিঞা নামের একজন শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করে বলেন, “ম্যাজিক প্যারাডাইস,স্বপ্নচূড়া ও ব্লু ওয়াটার পার্কের উচ্চ শব্দ দূষণের মাত্রা যেন দিন দিন বেড়েই চলছে। পরীক্ষার হলে বসেও তা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাচ্ছে না।হলের ও আশেপাশের শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। পড়াশোনায় মনোনিবেশ করা যাচ্ছে না। আবার ঠিকঠাক মত ঘুমানোও যাচ্ছে না। এর আগেও এ বিষয়ে বারবার কথা বলেও কোন প্রতিকার মেলেনি। এ বিষয়ে পরিবেশ আদালতে মামলা করা এখন সময়ের দাবি।”

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং বিভাগের স্নাতকোত্তর এক শিক্ষার্থী শব্দদূষণে অতিষ্ঠ হয়ে রাত ১০ টায় ৯৯৯ এ কল দিলে পুলিশ এসে পাশের একটি মাইক বন্ধ করে দেয়। এছাড়া পরীক্ষা চলাকালীন এ সমস্যার কারনে মনোযোগ ঠিক রাখতে সমস্যা হয় বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক শিক্ষার্থী।

বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর ক্ষমতাবলে শব্দ দূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা-২০০৬ প্রণয়ন করা হয়৷ বিধিমালার আওতায় নীরব, আবাসিক, মিশ্র, বাণিজ্যিক ও শিল্প এলাকা চিহ্নিত করে শব্দের মানমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে৷ আইন অমান্য করলে প্রথমবার অপরাধের জন্য এক মাস কারাদণ্ড বা অনধিক পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড এবং পরবর্তী অপরাধের জন্য ছয় মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে৷

আইনে সরকারি প্রতিষ্ঠানের পার্শে জেলা প্রশাসক অথবা কর্তৃপক্ষের শব্দের মান বেধে দেয়ার কথা থাকলেও এ বিষয়ে এযাবৎকালে কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। অপরদিকে বিভিন্ন সময়ে বিষয়টি গণমাধ্যমে উঠে আসলেও চুড়ান্ত কোন পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিষয়টি স্বীকার করে ম্যাজিক প্যারাডাইস পার্কের স্বত্বাধিকারী মাহবুব আলম বলেন, “আমরা বিষয়টি নিয়ে সবসময় সতর্ক। তবে পার্কে যারা মিউজিশিয়ান রযেছে বিভিন্ন সময়ে তাদের দায়িত্ব অবহেলার কারনে সমস্যা সৃষ্টি হয়। ভবিষ্যতে এমন সমস্যা আর সৃষ্টি হবে না বলে আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। ”

এ বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড.কাজী কামাল উদ্দিন বলেন, “যে সমস্ত পার্কগুলো সমস্যা সৃষ্টি করছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যাবস্থা নিতে প্রস্তুত আছি। তবে সর্বশেষ তাদের আবার সুযোগ দেয়া হল। আমরা চাই তারা ব্যাবসা করুক। কিন্তু শিক্ষার্থীদের সমস্যা সৃষ্টি করবে এমন কোন বিষয় আমরা মেনে নিব না। আগামীকাল থেকে যদি ফের সমস্যা দেখা যায় তাহলে আমরা বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী ব্যাবস্থা গ্রহণ করব।”

বিএনএ/ হাবিবুর রহমান,ওজি

Loading


শিরোনাম বিএনএ