বিএনএ, চট্টগ্রাম অফিস: দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ‘অজ্ঞাত’ রোগী হিসেবে হাসপাতালে ভর্তি হলেই যিনি নি:স্বার্থ সেবার মনোভাব নিয়ে ছুটে যান এক যুবক। তার নাম সাইফুল ইসলাম নেসার। চট্টগ্রামের হাসপাতালে সবার কাছে ‘অজ্ঞাত রোগীর বন্ধু’ নামেই বেশি পরিচিত। অনেকেই তার নাম জানেন না। ‘রোগীর বন্ধু’ বললেই চট করে চিনে ফেলেন। হাসপাতাল ঘুরে ঘুরে অজ্ঞাত রোগীর সন্ধান ও সেবা করাকেই জীবনের ব্রত হিসেবে নিয়েছেন তিনি।
সাইফুল ইসলাম নেসার এর উদ্যেগ নানা তদবির ও চেষ্টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছে অজ্ঞাত রোগী পরিচয় শনাক্তে বায়োমেট্ট্রিক সিস্টেম ডিভাইস। এতে মুমূর্ষ ‘অজ্ঞাত’ রোগীর পরিচয় শনাক্তে বাধা কাটছে চমেক হাসপাতালে।
নেসারের পরিচয়:
৩০ বছরের যুবক নেসার পেশায় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার। গ্রামের বাড়ি ফেনীর ছাগলনাইয়ার হিছাছড়ায়। দীর্ঘদিন ধরে থাকেন চট্টগ্রামের প্রি-পোর্ট এলাকায়। কাজ করেন পোর্টল্যান্ড গ্রুপের একটি শিপিং কোম্পানিতে। কাজের বাইরে যতটুকু সময় পান, কাটিয়ে দেন অজ্ঞাত রোগীদের সেবায়। ১০ বছর ধরে এখন পর্যন্ত প্রায় ছয়শ’ রোগীকে এভাবেই সেবা দিয়ে গেছেন তিনি। চট্টগ্রাম হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতালে অজ্ঞাত রোগীকে চিকিৎসা পূর্ব ও পরবর্তী সেবা দিয়েছেন নেসার।
পোর্টল্যান্ড গ্রুপে টেকনিক্যাল অফিসার হিসেবে কর্মরত নেসারকে মানবসেবার স্বীকৃতি হিসেবে সাবেক জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন ও বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সম্মাননা দিয়েছে। অজ্ঞাত রোগীর স্বজন খুঁজে পাওয়ার কৌশল আবিষ্কার করেন সাইফুল ইসলাম নেসার।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে প্রাপ্তবয়ষ্ক সকলেরই বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন করা আছে। এতে ফিংগার প্রিন্টসহ জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্য রয়েছে। দেশের সরকারি হাসপাতাল কিংবা হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট থানাগুলোতে যদি বায়োমেট্রিক যন্ত্র রাখা হয় তাহলে অজ্ঞাত রোগীদের শনাক্ত করা সহজ হবে।
চমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে অজ্ঞাত রোগী পরিচয় শনাক্তে বায়োমেট্ট্রিক সিস্টেম ডিভাইস আনা হয়েছে। পরীক্ষামূলক এই ডিভাইস দিয়ে আমরা পাঁচজনের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। আগামী মাসে ডিভাইস টি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। নেসার উদ্দিন দাবি করেন চমেক হাসপাতালের মতো ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালেও অজ্ঞাত রোগীদের জন্য বিশেষ সেল চালু করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, যদি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও দানশীল ব্যক্তিরা এগিয়ে আসেন, তাহলে আমরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও এই কাজটি শুরু করবো।
বিএনএনিউ২৪/ এমএইচ, এসজিএন