ধর্ম ডেস্ক: ইসলামে একাকী নামাজ পড়ার চেয়ে জামাতে নামাজ আদায় করার গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক বেশি। আবার প্রথম কাতারে সালাত আদায় করা বড়ই ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। তাদের জন্য ফেরেশতাদের দোয়া ও আল্লাহ তাআলার রহমতের ঘোষণা রয়েছে। আবু উমামা (রা.) বর্ণিত, রাসুল (স.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই প্রথম কাতারের মুসল্লিদের জন্য আল্লাহ রহমত বর্ষণ করেন ও তার ফেরেশতারা ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকেন। সাহাবিরা বলেন, হে আল্লাহর রাসুল, দ্বিতীয় কাতারের ওপর? তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা রহমত বর্ষণ করেন এবং তার ফেরেশতারা ক্ষমা প্রার্থনা করেন প্রথম কাতারে সালাত আদায়কারীদের জন্য…। ’ (মুসনাদ আহমদ: ২২৩১৭)
প্রথম কাতারে সালাত আদায়ের জন্য সাহাবিরা প্রতিযোগিতা করতেন। কারণ তারা প্রথম কাতারে নামাজ পড়ার গুরুত্ব ও ফজিলত ভালোভাবেই অনুধাবন করতেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘যদি লোকেরা জানত যে আজান ও প্রথম কাতারে সালাত আদায়ে কী নেকি আছে, তাহলে তারা পরস্পর প্রতিযোগিতা করত। অনুরূপভাবে যদি তারা জানত এশা ও ফজরের সালাতে কী নেকি রয়েছে, তবে তারা হামাগুড়ি দিয়ে হলেও ওই দুই সালাতে আসত।’ (বুখারি: ৬১৫)
আল্লাহ তাআলার কাছে বান্দার পছন্দনীয় পদক্ষেপের মধ্যে কাতারবদ্ধ হওয়া এবং প্রথম কাতার পূর্ণ করা অন্যতম। এ প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে, ‘.. আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয় পদক্ষেপ হলো, যা কাতারে শামিল হওয়ার জন্য (বান্দা) করে থাকে।’ (আবু দাউদ: ৫৪৩)
প্রথম কাতারে নামাজ আদায়কারীর মর্যাদার কথা বলতে গিয়ে একবার রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, তোমরা কি সেভাবে কাতারবদ্ধ হবে না, যেভাবে ফেরেশতারা তাদের রবের সামনে কাতারবদ্ধ হন? সাহাবিরা বলেন, হে আল্লাহর রাসুল, ফেরেশতারা কিভাবে তাদের রবের সামনে কাতারবদ্ধ হন? জবাবে তিনি বলেন, তারা আগে প্রথম কাতার পূরণ করেন। অতঃপর কাতারে ঘেঁষে ঘেঁষে দাঁড়ান।’ (মুসলিম: ৪৩০)
ইরবাজ ইবনে সারিয়া (রা.) বলেন, ‘রাসুল (স.) প্রথম কাতারে সালাত আদায়কারীর জন্য তিনবার ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন এবং দ্বিতীয় কাতারের জন্য একবার।’ (ইবনে মাজাহ: ৯৯৬)
ওপরের হাদিসগুলো থেকে বোঝা যায়, প্রথম কাতারে সালাত আদায়কারীর জন্য মহান আল্লাহ রহমত বর্ষণ করেন। উপরন্তু তাদের জন্য দোয়া করেন ফেরেশতারা ও প্রিয়নবী (স.)। বারা ইবনে আজেব (রা.) বলেন, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘প্রথম কাতারের লোকদের জন্য আল্লাহ রহমত নাজিল করেন ও ফেরেশতারা দোয়া করেন। আর মুয়াজ্জিনের আওয়াজ যত দূর যায় তত দূর পর্যন্ত তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। জীব ও জড় পদার্থ যে-ই তার ধ্বনি শ্রবণ করে, সে-ই তার পক্ষে সাক্ষ্য দেয়। আর যে ব্যক্তি তার সঙ্গে জামাতে সালাত আদায় করে, তার জন্যও তদ্রূপ সওয়াব আছে। (নাসায়ি: ৬৪৬)
উল্লেখ্য, নারীরা জামাতে উপস্থিত হলে তাদের জন্য পেছনের কাতারে সালাত আদায় করা উত্তম। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) বলেন, ‘পুরুষের জন্য সর্বোত্তম কাতার হলো প্রথম কাতার এবং সর্বনিকৃষ্ট কাতার হলো পেছনের কাতার। আর নারীদের জন্য সর্বোত্তম কাতার হলো পেছনের কাতার এবং সর্বনিকৃষ্ট হলো প্রথম কাতার।’ (মুসলিম: ৪৪০)
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে জামাতে নামাজ পড়ার এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে প্রথম কাতারে শামিল হতে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ