বিএনএ, চুয়েট : চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের প্রতিবাদে মিছিল করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৫ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা চত্বর হতে এই মিছিল শুরু হয়।
বুধবার চুয়েটের একটি হলের ডাইনিং এর খাবার না পাওয়া নিয়ে ফেসবুকে পোস্টের মাধ্যমে সূচনা হয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে মতবিরোধ। সেসময় ফেসবুকে ১৯ আবর্তের গ্রুপ চ্যাটেও এই নিয়ে চলে বাকবিতণ্ডা। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা আলোচনার জন্য একটি মিটিংয়ে একত্রিত হলে সেখানে পোস্টকারী ব্যক্তিসহ দুজন শিক্ষার্থীর উপর হামলা করা হয়। শিক্ষার্থীদের ধারণা এ হামলা ছিল পরিকল্পিত, যা পূর্বে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছাত্রলীগের দোসরদের দ্বারা সংঘটিত হয়েছে। তারা মনে করে আগামীতেও পূর্বে ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এরকম দালালেরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সহিংসতা তৈরি করতে পারে। এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, তা নিশ্চিতের জন্যই আজকে চুয়েটে এই মিছিলের আয়োজন করা হয়। সাধারণ শিক্ষার্থীরা উক্ত মিছিলের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদীদের হুঁশিয়ারি প্রদান করেছে।
মিছিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘‘ চুয়েটের মাটি চুয়েটিয়ানদের ঘাঁটি,সন্ত্রাসীদের ঠিকানা, এই চুয়েটে হবেনা ” সহ আরও বিভিন্ন সন্ত্রাসবিরোধী স্লোগান দেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে মিছিলে অংশ নেয়া বিশ্ববিদ্যালয়টির যন্ত্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ হানিফ বলেন, বিগত ১৫ বছর চুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগকর্তৃক বিভিন্নভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা নির্যাতিত হয়েছে এবং ক্যাম্পাসে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলো। কিছুদিন আগেও কুদরত-ই-খুদা হলে আমাদের নিরীহ ভাই এর উপর বর্বরোচিত হামলা করে সন্ত্রাসীরা। অধিকন্তু, ছাত্রলীগের অতীত ও বর্তমান দোসররা বিভিন্নভাবে চুয়েটকে নানাভাবে অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, চুয়েটে যেন আর কোনো শিক্ষার্থীর সাথে অন্যায় আচরণ এবং কেউ যেন সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতে না পারে এর জন্যই সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে আজকের সন্ত্রাস বিরোধী মিছিল আয়োজিত হয়েছে। আমরা সন্ত্রাসমুক্ত এবং বৈষম্যহীন চুয়েট ক্যাম্পাস চাই।
একই বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার ও বিজ্ঞান প্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী সাদমান রহমান অনন্ত বলেন, আজকে দলীয় রাজনীতির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমরা সমবেত হয়েছি।দলীয় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির শিকার আমরা বহুদিন যাবৎ। আমরা নিশ্চিত করতে চাই,যেকোনো প্রকার দলীয় রাজনীতি যেনো চুয়েটে প্রবেশ না করতে পারে।আমরা রাজনীতি সচেতন থাকবো, কিন্তু দলীয় রাজনীতি চুয়েটে থাকবে না।
উল্লেখ্য, বিগত ৮ই সেপ্টেম্বর (রবিবার) শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে ২১ দফা দাবি পেশ করে, তাতে ৩ নং দাবিতে ছাত্রলীগের ৫ জন চিহ্নিত কর্মীদের বিচারের দাবি জানায়। তাছাড়া যারা ছাত্রলীগের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে ক্রিয়ারত ছিল তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানায়।
বিএনএনিউজ/ ইয়াসির/ এইচ.এম।