ধর্ম ডেস্ক: পুরুষ মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ পড়বে- এটাই ইসলামের বিধান। তবে শরিয়তস্বীকৃত কোনো কারণে পুরুষকে যদি ঘরে নামাজ পড়তে হয়, সেক্ষেত্রে স্ত্রী-সন্তান ও মাহরাম নারীদের নিয়ে জামাতে নামাজ আদায় করা জায়েজ।
এক্ষেত্রে সবাই জামাতের সাওয়াব পাবে। সেই জামাতে গাইরে মাহরামদের শরিক হওয়া সমীচীন নয়। এরপরও গায়রে মাহরাম নারীরা পর্দার বিধান মেনে শরিক হতে পারবে। পর্দার বিধান লঙ্ঘন করে জামাত করা বৈধ নয়। (খুলাসাতুল ফতোয়া: ১/২২৮, আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল: ২/২২৭)
স্বামী-স্ত্রীর জামাতের বিধান ও পদ্ধতি: স্ত্রী স্বামীর সঙ্গে সংলগ্ন না দাঁড়িয়ে পেছনের সারিতে একা দাঁড়াবে। অপারগতায় ডান পাশে একটু পেছনে সরে দাঁড়ালেও নামাজ হয়ে যাবে। তবে স্ত্রী স্বামীর সঙ্গে সমান হয়ে দাঁড়াতে পারবে না, কারণ এতে উভয়ের নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। (রদ্দুল মুহতার: ১/৫৭২)
এক বা একাধিক নারী হলে পেছনের সারিতে দাঁড়াবে। (রদ্দুল মুহতার: ১/৫৬৬, আহসানুল ফতোয়া: ৩/২৯৯)
ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আমি নবী কারিম (স.)-এর সঙ্গে ঘরে জামাতে নামাজ পড়েছি, একবার আমি নবী কারিম (স.)-এর পাশে দাঁড়িয়েছি, আর আয়েশা (রা.) আমাদের পেছনে দাঁড়িয়ে আমাদের সঙ্গে জামাতে শরিক হয়েছিলেন। (সুনানে নাসায়ি: ৮০৩)
নারী-পুরুষ (স্বামী-স্ত্রী) একাকী ও ভিন্ন ভিন্ন নামাজ পড়ার সময় আগে-পেছনে বা বরাবর দাঁড়াতে পারবে। আগ-পিছ হওয়াতে নামাজের শুদ্ধতায় কোনো প্রভাব পড়বে না। কেননা ওই বিধান উভয়ে একই সঙ্গে জামাতে অংশগ্রহণের বেলায় প্রযোজ্য। (মাবসুতে সারাখসি: ১/১৮৫)
নামাজের কাতার করার সুন্নত পদ্ধতি হলো, প্রথমে বালেগ পুরুষ তারপর নাবালেগ ছেলে দাঁড়াবে। আর নারীরা জামাতে অংশগ্রহণ করলে তারা সবার পেছনে দাঁড়াবে। (সুনানুল বায়হাকি: ৫১৬৬; হেদায়া: ১/২৩৯)
শুধু নারীদের জামাত বৈধ নয়: নারীরা একত্রিত হয়ে নারী ইমাম বানিয়ে নামাজের জামাত করা মাকরুহে তাহরিমি তথা নাজায়েজ। যদিও জামাতে আদায়কৃত ওই নামাজ শুদ্ধ হয়ে যাবে, তবে তারা সবাই গুনাহগার হবে। তা সত্ত্বেও নারীরা আলাদা জামাত করলে ইমাম সাহেবা কাতারে সবার সামনে দাঁড়াবেন না, বরং প্রথম কাতারের মাঝখানে দাঁড়াবেন। (তাবঈনুল হাকায়েক: ১/১৩৫, ফতোয়ায়ে দারুল উলুম: ৩/৪৩)
রাসুলুল্লাহ (স.)-এর জামানায় তার স্ত্রীরা একত্রিত হয়ে জামাতে নামাজ আদায় করার কোনো প্রমাণ হাদিসে পাওয়া যায় না। আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘কোনো নারী জামাতের ইমামতি করতে পারবে না।’ অনুরূপ তাবেয়ি ইবরাহিম নাখয়ি, ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ, রবিআ ও ইবনে শিহাব জুহরি (রহ.) প্রমুখ থেকে তা বর্ণিত হয়েছে। (আল মুদাওয়ানাতুল কুবরা: ১/১৭৮)
শিব্বির আহমদ উসমানি (রহ.) বলেন, হাদিসটির সূত্র বিশুদ্ধ (ইলাউস সুনান: ৩/১৩০১)। আল্লাহ তাআল মুসলিম উম্মাহকে নামাজসহ ইসলামের সকল বিধান প্রিয়নবীর (স.) সুন্নত অনুযায়ী পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ