।। ইমরান খান ।।
বিএনএ, সাভার: রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় গরুর মাংসের দাম কমলেও কমেনি ধামরাই উপজেলার কোন বাজারেই। তাই গরুর মাংসের দাম কমাতে ব্যতিক্রম উদ্যোগ নিয়েছেন ধামরাই সদর ইউনিয়নের শরীফভাগ এলাকার ৪জন বন্ধু। তারা বাজার মূল্যের চেয়ে কেজিতে ১০০ টাকা কমে গরুর মাংস বিক্রির করছেন।
চার বন্ধু টুটুল, রিপন, রুবেল ও রাকিবুল পেশায় তারা কেউ কসাই বা মাংস ব্যবসায়ী নন। টুটুল রেন্ট-এ-কার ব্যবসা করেন, রিপন মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র, রুবেল করেন পোল্ট্রি মুরগীর ব্যবসা এবং রাকিবুল পেশায় একজন প্যারামেডিকেল টেকনোলজিস্ট। তাদের সকলের বাড়ি ধামরাই উপজেলার ধামরাই সদর ইউনিয়নের শরীফভাগ এলাকায়।
সারা দেশে গরুর মাংসের দাম কমলেও ধামরাইয়ে মাংসের দাম না কমায় চার বন্ধু মিলে সিদ্ধান্ত নেন নিজেরাই গরু কিনে বিক্রি করবেন কেজি প্রতি ৬৩০ টাকা দরে। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা বৃহস্পতিবার (১৩ ডিসেম্বর) সারাদিন মাইকিং করেন ৬৩০ টাকা কেজি গরুর মাংস বিক্রি করা হবে। ঘোষণা অনুযায়ী পরদিন শুক্রবার মাংস কিনতে ক্রেতাদের ভিড় জমে তাদের অস্থায়ী দোকানে। একদিনেই চারটি গরুর মাংস বিক্রি করেন। এই উদ্যোগে সাধারণ মানুষ কম দামে মাংস পেয়েছেন।
সরেজমিনে শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) ভোর ৬ টার দিকে শরীফভাগ বাজারের মোল্লা মার্কেটের সামনে গেলে দেখা যায়, একটি গরু বিক্রি শেষ করে আরেকটি গরুর মাংস বিক্রি চলছে। পাশেই বাঁধা আছে আরোও দুটি ষাঁড় গরু। বাজার মূল্যের চেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে জেনে বেশ ভীড় রয়েছে সেখানে। আবার বিয়ে বাড়ির জন্য মাংস নিতে এসেছেন ভাড়ারিয়া গ্রামের শাকিল এবং ধামরাই পৌরসভা এলাকার ভাড়াটিয়া মিনহাজ উদ্দিন।
মাংস নিতে আসা এক নারী ক্রেতা বলেন, আমি এক কেজি মাংস নিতে এসেছি। পৌরসভার বাজারের থেকে এখানে কেজিতে ১২০ টাকা কম। ধামরাই পৌরসভার বাজারে ৭৫০ টাকা রাখে। আবার কখনও ৭২০ টাকা রাখে। এখানে কম পাওয়াতে আমাদের জন্য ভালো হয়েছে।
চার বন্ধুর একজন শরীফভাগ বাজারের মুরগী ব্যবসায়ী রুবেল হোসেন। তিনি বলেন, আমি বাজারে মুরগি বিক্রি করি। আমার পাশেই গরুর মাংসের দোকান। সেখানে ৭৫০ টাকা দরে মাংস বিক্রি হয়। অনেকেই আমার দোকানে মুরগি নিতে এসে আক্ষেপ করে বলেন, দাম যদি একটু কম থাকতো তাইলে গরুর মাংস নিতে পারতাম। তাদের এরকম কথা শুনে বন্ধুদের সাথে আলাপ করি। সারা দেশে যখন দাম কমছে তাহলে আমরাও পারবো কম দামে বিক্রি করতে। এরপর বৃহস্পতিবার মাইকিং করে শুক্রবার সকালে মাংস বিক্রি শুরু করি। আমরা ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। আমাদের এই উদ্যোগের কারণে এখন অনেক দোকানে ৫০ থেকে ৭০ টাকা কমিয়ে বিক্রি করছে।
আরেক বন্ধু টুটুল বলেন, মূলত কসাইখানার দাম কমানোর জন্য আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা পেশাদার মাংস ব্যবসায়ী নই। আমরা যদি একটা গরুতে আশানুরূপ মুনাফা পেতে পারি তাহলে পেশাদার মাংস ব্যবসায়ীরা আমাদের তুলনায় বেশি লাভ করতে পারবে। আমরা চাই আমাদের দেখে ধামরাই উপজেলার মাংস ব্যবসায়ীরা দাম কমিয়ে মাংস বিক্রি করুক। এতে সাধারণ মানুষ মাঝে মধ্যে মাংস কিনে খেতে পারবে।
বিএনএনিউজ/ বিএম