বিএনএ, বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম): চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে নির্মিত হচ্ছে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের যুব বিদ্রোহ, স্বাধীনতা সংগ্রামের সংগ্রামী বীরদের স্মৃতি রক্ষায় ‘জাগ্রত বাংলা’ ভাস্কর্য।
সারোয়াতলী ইউনিয়নের বীরসেনানী দের আত্মত্যাগের কথা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দিতে এ ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সারোয়াতলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ বেলাল হোসেন।তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে নির্মিত এ ভাস্কর্যে গাঁথা হয়েছে ব্রিটিশ-পাকিস্তান থেকে মুক্তি সংগ্রামের ত্রয়ী সম্মিলন।
ইউপি চেয়ারম্যান মো. বেলাল হোসেন বলেন, ‘আমরা বিস্মৃতিপ্রবণ জাতি। এই বিস্মৃতি নিয়ে যেতে পারে অন্ধকারে। জন্মের ইতিহাস প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দিতে ও পূর্ব পুরুষের আত্মত্যাগকে স্মরণ করতে এই ‘জাগ্রত বাংলা’ ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি।
তিনি বলেন, ‘এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবীদের আত্মীয় স্বজনদের আবেদন ছিলো দীর্ঘদিন ধরে। এই উদ্যোগ প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ নিতে পারে।’
‘আমার বাবা মরহুম আবুল বশর একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংগঠক ছিলেন। আমি নিজেও একজন মুক্তিযোদ্ধা। সেই হিসেবে স্বাধীনতার আন্দোলন সংগ্রামের স্মৃতিবিজড়িত স্থান সংরক্ষণ ও জাতির বীরদের স্মৃতি জাগরুক রাখার বার্তা দিতেই এ ভাস্কর্য।’ তিনি আরো বলেন, ‘প্রজন্মকে জানতে হবে, এতো মানুষকে নির্বিচারে নির্যাতন করে মারা হলো, তাদের কী অপরাধ ছিলো ? তাদের অপরাধ তাঁরা ‘স্বাধীনতা’ চেয়েছিলেন।’
বেলাল হোসেন জানান, প্রায় ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘জাগ্রত বাংলা’ ভাস্কর্য নির্মিত হচ্ছে। এর নকশা ও পরিকল্পনা করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ভাস্কর ডি কে দাশ মামুন। ১৬ ডিসেম্বর উদ্বোধন করার কথা থাকলেও নানা কারণে তা পিছিয়ে নিতে হয়েছে। আগামী মার্চ মাসে এর উদ্বোধন করা হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশের জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হানিফ সংকেত ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
ভাস্কর ডি কে দাশ মামুন বলেন, ভাস্কর্যে ছয়টি হাত স্বাধীনতা সংগ্রামের ছয় দফা আন্দোলনকে তুলে ধরেছে। হাতে বিজয়ের পতাকা। এরই পাশে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি স্মারক। যাতে স্টোন কাস্ট পদ্ধতির টেরাকোটা ফরম্যাটে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া ভাস্কর্যের বেদিতে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের ২৩ জন বিপ্লবী ও স্বাধীনতার সংগ্রামে শহীদ ১৮ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ৫৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার রেপ্লিকা (নাম খচিত) তৈরি করা হয়েছে।
এ ভাস্কর্য নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর দেওয়া হয় ২০১৯ সালের ২৩ নভেম্বর। ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেছিলেন সারোয়াতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বেলাল হোসেন।
বিএনএ/ বাবর মুনাফ, ওজি