বিএনএ, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক সম্রাট এ্যালেন শামীমের দুর্গম পাহাড়ি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে ৩টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং মাদকসহ ৩ জন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) রাঙ্গুনিয়া থানার পারুয়া দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানার ইউসুফপুর এলাকার নূর হোসেন মুন্সির ছেলে মো. শাকিল হোসেন, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার কোদালা এলাকার মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে মো. ফারুক এবং একই জেলার রাউজান থানার ইউসুফ আলী চৌকিদার বাড়ির মো. মফিজের ছেলে মো. আরিফ।
পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক সম্রাট মো. আজিজুল হক শামীম ওরফে এ্যালেন শামীমকে গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার পারুয়া এলাকার দুর্গম পাহাড়ের ছিড়াটিলা গ্রামে কতিপয় দুষ্কৃতিকারীরা মো. আজিজুল হক শামীম ওরফে এ্যালেন শামীমের আস্তানায় মাদকদ্রব্য বেচাকেনার জন্য মাদক মজুদ করছে। গোপন সংবাদে এমন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭ মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) ওই দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. শাকিল হোসেন, মো. ফারুক এবং মো. আরিফকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে তাদের কাছ থেকে ছিড়াটিলা দুর্গম পাহাড়ের ছোট দোচালা টিনের ঘরে বিশেষ কায়দায় রক্ষিত স্টিলের ২টি ট্রাংকের ভিতর থেকে ৩টি আগ্নেয়াস্ত্র, এসএস পাইপ ও সাইকেলের প্যাডেলের চাকতি দিয়ে বিশেষভাবে তৈরীকৃত ৪টি দেশীয় অস্ত্র, ৪৪ বোতল ফেন্সিডিল, ১৮০ পিস ইয়াবা, ১০ কেজি গাঁজা ও মাদক আস্তানার নিরাপত্তার কাজে ব্যবহৃত ৩টি সিসি ক্যামেরা এবং বিভিন্ন ডিভাইস জব্দ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা দীর্ঘদিন যাবৎ অত্র অঞ্চলের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক সম্রাট মো. আজিজুল হক শামীম ওরফে এ্যালেন শামীমের নেতৃত্বে ছিড়াটিলা পাহাড়ে অবৈধভাবে বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা মাদক বেচাকেনা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
র্যাব আরও জানায়, এলাকাটি দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল এবং অপরিচিত কোন লোকজন দেখলেই মাদক আস্তানার সিন্ডিকেটের সদস্যরা সতর্ক হয়ে যেত, যার ফলে তাদের অবস্থান সনাক্তকরণ ছিল একটি কঠিন বিষয়। তথাপিও র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি চৌকষ আভিযানিক দলের সদস্যরা গোয়েন্দা তৎপরতায় পাহাড়ের মধ্য দিয়ে বিশেষ কৌশলে এলাকায় প্রবেশ করে অভিযান পরিচালনা করে।
মূলত তাদের আস্তানাটি দুর্গম পাহাড়ী জনশূন্য টিলা বিস্তীর্ণ অঞ্চলে হওয়ায়, সেখানে অভিযান পরিচালনা করা অত্যন্ত দূরূহ। তাছাড়া আস্তানার সদস্যরা এলাকায় নজরদারি কঠোর করার জন্য ইন্টারনেট সংযোগসহ সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহার করতো, যাতে এলাকায় না থাকলেও মোবাইলের সাহায্যে তারা নজরদারি অব্যাহত রাখতে পারে। চক্রটি এলাকায় মাদক ব্যবসা, আধিপত্য বিস্তার, জমি ও পুকুর দখল, এলাকার লোকজনের ওপর শারীরিক অত্যাচার, ধর্ষণসহ নানাবিধ অপরাধ কর্মকাণ্ড পরিচালনায় আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে আসছিল।
আরও পড়ুন: আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সারাদেশে ১৮১ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন
গ্রেপ্তার আসামি মো. শাকিল হোসেনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম এবং লক্ষীপুর জেলার বিভিন্ন থানায় চুরি, নাশকতা, হত্যাচেষ্টা এবং মাদকসহ সর্বমোট ৯টি মামলা এবং আসামি মো. আরিফের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের রাউজান এবং রাঙ্গামাটির চন্দ্রঘোনা থানায় ২টি মাদক আইনে মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।
গ্রেপ্তার আসামি ও উদ্ধার আগ্নেয়াস্ত্র এবং জব্দ সরঞ্জামাদি চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিএনএনিউজ/ বিএম