20 C
আবহাওয়া
৪:৩৬ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ১৮, ২০২৪
Bnanews24.com
Home »  প্রধানমন্ত্রীর সেই পিয়ন ‘পানি জাহাঙ্গীর’ এমপি প্রার্থী হয়েছিলেন!

 প্রধানমন্ত্রীর সেই পিয়ন ‘পানি জাহাঙ্গীর’ এমপি প্রার্থী হয়েছিলেন!


চীন সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে দেশের দুর্নীতি প্রসঙ্গে খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার বাসার কাজের লোকও ৪০০ কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন সরাসরি সম্প্রচার হওয়ায় মূহুর্তেই এই মন্তব্য টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হয়। রোববার বিকাল থেকে দেশজুড়ে তোলপাড় চলছে। পাড়ার চায়ের দোকান থেকে শুরু করে অভিজাতদের ড্রয়িং রুমে আলোচনার খোরাক হয়ে উঠেছে বিষয়টি। গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে রীতিমত ট্রল হতে থাকে প্রধানমন্ত্রীর এমন বিস্ফোরক বক্তব্য। সবার প্রশ্ন একটাই, ‘কে এই ৪০০ কোটি টাকার মালিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিয়ন’?

YouTube player

প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে ৪০০ কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া সেই চাকুরিচ্যূত পিয়নের নাম না বললেও অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই ব্যক্তির নাম জাহাঙ্গীর আলম ওরফে ‘পানি জাহাঙ্গীর’। বাবার নাম মৃত রহমত উল্লাহ। বাড়ি নোয়াখালীর চাটখিল থানাধীন খিলপাড়া ইউনিয়নের নাহারখিল গ্রামে।

জাহাঙ্গীর আলম বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধী দলে থাকার সময় ‘সুধাসদনে অবস্থানকালে ব্যক্তিগত কাজের লোক হিসাবে যোগদান করেন। সে সময় বিভিন্ন প্রোগ্রামে শেখ হাসিনার জন্য যে খাবার পানি বাসা থেকে নেওয়া হতো, সেটা এই জাহাঙ্গীর বহন করতো। এজন্যই তিনি ‘পানি জাহাঙ্গীর’ হিসেবে পরিচিতি পান। ২০০৯ থেকে ২০১৮ সালের দুই মেয়াদের পুরোটা সময় এবং প্রধানমন্ত্রীর টানা তৃতীয় মেয়াদেরও কিছু সময় ছিলেন ব্যক্তিগত কর্মচারী হিসেবে ।
চাটখিলের সেই পানি জাহাঙ্গীর প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মচারী হিসেবে কাজ করলেও ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে পরিচয় দিতেন। প্রধানমন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে নানা তদবির করে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন তিনি। তিনি নোয়াখালী ও রাজধানী ঢাকায় বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন।

কোটি কোটি টাকার সম্পদ কামানোর পর রীতিমতো রাজনৈতিক মাঠে নেমে যান পিয়ন জাহাঙ্গীর। চাটখিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির পদও বাগিয়ে নেন। সংসদ সদস্য হওয়ার জন্য তিনি নোয়াখালীতে বিপুল অর্থও খরচ করেছেন। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে বিশাল বহর নিয়ে তিনি সভা-সমাবেশ করতেন। এসব সভা-সমাবেশের জন্য লাখ লাখ টাকা খরচ করেছেন। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে সরকারের অনেক প্রভাবশালী মন্ত্রী ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে নিজের এলাকায় দাওয়াত করে নিয়ে যেতেন তিনি। যাতায়াতের জন্য হেলিকপ্টার ব্যবহার করতেন।

৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-১ আসনের আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপত্রও কিনেন। নৌকা প্রতীক না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। তবে শেষ পর্যন্ত জাহাঙ্গীর নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ালেও নৌকার প্রার্থী এইচ এম ইব্রাহীমের বিরোধিতায় নামেন। বিষয়টি আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী এইচএম ইব্রাহীম প্রধানমন্ত্রীর নজরে নেন। এই অবস্থায় গত বছরের ৬ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কোনও সম্পর্ক নেই। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রয়োজনে নিকটস্থ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তা নিতেও বলা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাজধানী ঢাকায় একাধিক প্লট-ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছেন জাহাঙ্গীর। ধানমন্ডিতে স্ত্রীর নামে আড়াই হাজার বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। এছাড়া নোয়াখালীর মাইজদী শহরের হরি নারায়ণপুরে তার আট তলা একটি বাড়ি রয়েছে। সেটিও তার স্ত্রীর নামে। আরও জানা যায়, ধানমন্ডিতে আলিশান ফ্ল্যাট ছাড়াও রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও নিউমার্কেটে দুটি দোকান রয়েছে তার। ঢাকার মিরপুরে একটি সাত তলা ভবন ও দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী পরিচয় দিয়ে তদবির, টেন্ডারবাজি, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অপকর্ম করে বেড়িয়েছেন জাহাঙ্গীর। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচয় ব্যবহার করে গাজীপুরের ইপিজেড এলাকার ঝুট ব্যবসাও নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় জাহাঙ্গীর কৃষিখাত থেকে তার প্রতি বছর আয় ৪ লাখ টাকা, বাড়ি ও দোকান ভাড়া থেকে সাড়ে ১১ লাখ টাকা, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত থেকে ৯ লাখ টাকা , চাকরি থেকে ৬ লাখ ও অন্যান্য উৎস থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা আয়ের তথ্য জানান। হলফনামার হিসাব অনুযায়ী বছরে প্রায় ৫০ লাখ টাকা আয়ের কথা জানিয়েছেন।

হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, জাহাঙ্গীরের নিজের নামে আড়াই কোটি টাকা ও স্ত্রীর নামে ব্যাংকে প্রায় সোয়া এক কোটি টাকা ছিল। ডিপিএস ছিল পৌনে তিন লাখ টাকা, এফডিআর ছিল সোয়া এক কোটি টাকা। স্ত্রীর নামে কিনেছেন গাড়ি। বিভিন্ন কোম্পানিতে কোটি টাকার শেয়ারও রয়েছে। এছাড়া একটি অংশীদারি প্রতিষ্ঠানে তার ছয় কোটি টাকার বিনিয়োগও রয়েছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়। এ ব্যাপারে সেই আলোচিত-সমালোচিত ৪০০ কোটি টাকার মালিক পিয়ন পানি জাহাঙ্গীরের প্রতিক্রিয়া জানা সম্ভব হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর জাহাঙ্গীর মোবাইল বন্ধ করে গা ঢাকা দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনের দিন (১৪ জুলাই রোববার) কথিত পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এই নির্দেশ দেন। এছাড়াও তাদের হিসাব খোলার ফরমসহ যাবতীয় তথ্য আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে পাঠাতে ব্যাংক গুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

শামীমা চৌধুরী শাম্মী/ হাসনা


শিরোনাম বিএনএ
সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব ৩০ নভেম্বরের মধ্যেই জমা দিতে হবে সহ:প্র.শিক্ষকের ৯৫৭২ পদ সৃজনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মতি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল : সোমবার হাজির হচ্ছেন সাবেক ১০ মন্ত্রীসহ ১৪ জন ব্রিটিশ হাইকমিশনার সকাশে বিএনপির প্রতিনিধি দল আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় বেড়েছে জবাবদিহিমূলক ভূমি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে--ভূমি উপদেষ্টা প্রয়োজনের চেয়ে একদিনও বেশি থাকতে চায় না অন্তর্বতী সরকার- উপদেষ্টা ফরিদা পাবর্ত্যবাসীকে মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত করতে হবে-উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা আলুর কেজি ৪০০ টাকা! সপ্তাহে চারদিন ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর